তানোরে কেআরবি ভাটার দুষণ সন্ত্রাস

ইট ভাটার গ্যাস, কালো ধোঁয়া, জ্বলন্ত কয়লা ও ‘কাঠের গুড়া পুড়ে দুষিত হচ্ছে

 

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর তানোরের বাধাঁইড় ইউনিয়নের (ইউপি) গোয়ালপাড়া ঝিনাখৈর বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অমান্য করে গড়ে তোলা হয়েছে মেসার্স কেআরবি নামের অবৈধ ইটভাটা। তাদের পরিবেশ দুষণ সন্ত্রাসে লোকালয় হুমকিতে, জনজীবন অতিষ্ঠ ও কৃষি বিপর্যয়, প্রশাসন নির্বিকার। স্থানীয়রা জানান, ইট ভাটার গ্যাস, কালো ধোঁয়া, জ্বলন্ত কয়লা ও ‘কাঠের গুড়া পুড়ে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের স্বাস্থ্য ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। এছাড়া এলাকার গাছপালা ও আশপাশের জমির ধান শাকসবজি এবং সবধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে ফসলী জমির উপরিভাগের উর্বরা মাটি (টপসয়েল) মাটি কেটে আনা হচ্ছে এই ভাটায়। জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৩ এর ধারা ৫ এর উপধারা ১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি বা পাহাড় বা টিলা হতে মাটি কেটে অথবা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না বলে বলা হয়েছে। এছাড়া ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৩ অনুযায়ী ধারা ৮ এর উপধারা ৩ (ক) অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ করলে সংশ্লিষ্ট ভাটার মালিকের লাইসেন্স বাতিল করার কথা উল্লেখ রয়েছে এবং যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৮ এর উপ-ধারা ৩ (ঙ) এর শর্তাবলী লংঘন করে ইটভাটা নির্মাণ করে তাহলে তিনি অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। এলাকার সাধারণ মানুষের প্রশ্ন আইনে পরিস্কারভাবে উল্লেখ থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়াল ঘেঁষে কিভাবে চালানো হচ্ছে কেআরবি ইট ভাটা। আইনের বাস্তবায়ন দেখতে চায় এলাকার সাধারণ জনগণ। স্থানীয় বাসিন্দা খালেক,  সাদিকুল, বাচ্চু ও আব্দুল মালেক বলেন, অবৈধ এই ইট ভাটার কারণে জমির উর্বরতা শক্তি কমে ধানসহ সবধরনের ফসলের ফলন বিপর্যয় ঘটছে, ইট ভাটার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ট্রাক্টরগুলোর অবাধ চলাচলে এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো খানাখন্দকে পরিণত হয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। কদিন আগে কাঁচা ইট পড়ে এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে এ ইটভাটায় এলাকাবাসি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে জানান এলাকার সাধারণ জনগণ। গভীর নলকুপের স্কীমভুক্ত তিনফসলী প্রায় ৭০ বিঘা জমির ওপর ইট ভাটা গড়ে উঠেছে এতে জমি সংকটের কারণে গভীর নলকুপ বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। তবে রাঁতের আঁধারে গভীর নলকুপ থেকে ইট ভাটায় পানি নেয়া হচ্ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন,  অবৈধ ইট ভাটার কারণে এলাকার কৃষি হুমকির মুখে পড়েছে, তবে প্রশাসন কেনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটা বোধ্যগম্য নয়। এবিষয়ে জানতে চাইলে ভাটা মালিক হাজী আবুল কালাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,সরকারকে ভ্যাট দিতে হয়, বিভিন্ন দিবস উদযাপনে টাকা দিতে সব ম্যানেজ করে ভাটা চালানো হয়। তিনি বলেন, সারাদেশে যেভাবে ভাটা চলে তিনি সেই ভাবেই চালাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, কৃষি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণ বা কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় ব্যবহারের কোনো সুযোগ নাই।#

Exit mobile version