আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে রোজার প্রথম দিনেই নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুন হয়েছে।এতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ বেগুন, শসা, কলা ও লেবু। চাহিদা বিবেচনায় এই চারটি পণ্যের দাম বিক্রেতারা ইচ্ছামতো বাড়াচ্ছেন। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। তবে বাড়তি চাহিদা তৈরি হলেও এবার অনেকটাই স্থিতিশীল ছোলা, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ও চিনির দর। আবার বাজারে বাড়তি সরবরাহের কারণে ছোলা, চিনিসহ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের দাম এরই মধ্যে কমেছে। তবে এবারও রোজা ঘিরে বাড়তি মাংসের বাজার। এখনো কাটেনি ভোজ্য তেলের সংকট।
গত ১ মার্চ শনিবার উপজেলার তানোর,মুন্ডুমালা,কালীগঞ্জ ও তালন্দ বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য মিলেছে।
মানভেদে ২০ টাকা কেজির বেগুন ৫০ টাকা, ৩০ টাকা কেজির শসা ৬০ টাকা, ২০ টাকা হালির লেবু ৬০ টাকা, উন্নতজাতের কাগজি লেবু ৮০ টাকা হালিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সবজি বিক্রেতা বাবু বলেন, ‘এখন লেবুর অফ সিজন। তাই পাইকারি বাজারেই লেবুর কিছুটা সংকট রয়েছে। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বেগুনের সরবরাহও কিছুটা কমে যাওয়ায় দামও বেড়ে গেছে।
এছাড়াও রোজা উপলক্ষে সব ধরনের মাংসের দাম বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগী বিক্রেতা আজাদ বলেন, ‘রোজায় বাড়তি চাহিদার কারণে খামারি পর্যায়েই মুরগির দাম বাড়তি। যার কারণে খুচরা পর্যায়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে রোজা ঘিরে পর্যাপ্ত আমদানি হলেও গত নভেম্বর থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও।
সংকট চলছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকটে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলও। ভোজ্য তেলের সরবরাহ সংকটের কারণে ভোক্তারা উদ্বিগ্ন। গোল্লাপাড়া বাজারে
বোতলজাত তেল কিনতে আসেন মৌসুমী নামের এক গৃহিণী। দোকানদার মুখের ওপরই বলে দেন, ‘তেল নেই আপা’। এই গৃহিণী বলেন, ‘বাজারের এই দোকান ছাড়াও আরো দুটি মুদি দোকান ঘুরেও তেল পাইনি। রোজার প্রথম দিনেই এমন অবস্থা। বাজারে তেলের সংকট কি সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা দেখছেন না। অন্যান্য পণ্যের তো কোনো সংকট দেখছি না, তাহলে তেলের এত সংকট কেন ? মৌসুমী আরো বলেন, দুই মাস ধরে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে তেল নেই, এখন বাজারের দোকানগুলোতেও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু দোকানে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে, দাম বোতলের চেয়ে বেশি। ব্যবসায়ীরা বলেন, কোনো কম্পানিই তেল দিচ্ছে না। অনলাইনে অর্ডার করে পাঁচ লিটারের দু-একটি বোতল গায়ের দরে এনে কাছের কাস্টমারগুলোকে দিচ্ছি। ডিলাররাও আমাদের কাছে ভিড়ছে না, তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা আমাদের বলে তেল নেই, তেল এলে পাবেন। অগ্রিম কোনো অর্ডার এবং পেমেন্টও নিচ্ছে না তারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ কেজি ৪০ টাকায়, ছোলা কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়,আখের গুড় ১৪০ টাকা, বেসন কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, চিনি কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়, আলু কেজি ২৫ টাকায়, দেশি আদা কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, দেশি নতুন রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, আমদানি করা রসুন কেজি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। টমেটো কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ১০ টাকার ফুলকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, মুলা কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা পেঁপে কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও পাকা পেঁপে একশ’ টাকা। শিম মানভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৫০ টাকা,২০ টাকা হালির মানিক কলা ৪০ টাকা, করলা ১২০ টাকা,পটল ১৬০ টাকা কেজি এবং কাঁচা মরিচ কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।#