তানোর খাদ্যগুদামের ডানিশ গোপণে বিক্রি

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোর  সরকারী খাদ্য গুদামের দারয়ান ইসমাইল হোসেন ও শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে গুদামের ডানিশ কাঠ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,  গত ২৭ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়   দারোয়ান শাহজাহান ও ইসমাইল গুদামের ডানিশ (বস্তা রাখার কাঠের তৈরী ফ্রেম) গোপনে গোল্লাপাড়া বাজারের খড়ি ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হালদারের দোকানে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দরপত্র আহবান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে (গুদামে বস্তা রাখা কাঠের ফ্রেম):ডানিশ সরবরাহ করা হয়। যদি গুদামের কোনো ডানিশ নষ্ট হয়,তবে সকল গুদামের নস্ট ডানিশ জেলা কার্যালয়ে সংগ্রহ করে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা। কোনো অবস্থাতেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত সরকারি গুদামের কোনো মালামাল বিক্রি করা যাবে না।
স্থানীয়রা জানান, রাজনৈতিক প্রভাব ও
গুদাম কর্মকর্তাকে জিম্মি করে তারা নানা অনিয়ম করছে। তারা নানা অজুহাতে ডিলারদের কাছে থেকে টাকা আদায়, টাকা না পেলে সিরিয়ালের নামে হয়রানি, বেছে বেছে নিম্নমাণের চাল-আটা নিতে বাধ্য করাসহ তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ধান বিক্রি করতে গেলে কৃষকের কাছে থেকে বস্তা প্রতি ৫ কেজি ধান ও টন প্রতি টাকা আদায় করছে। এমনকি রাতের আঁধারে (বোঙা) বিশেষ যন্ত্র দিয়ে বস্তা থেকে ধান-চাল-গম বের করে নিচ্ছে। এসব অবৈধ কাজ নির্বিঘ্নে করতে  শ্রমিক সর্দারকে নানা কৌশল ও চাপ দিয়ে
গুদামের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। শ্রমিক সর্দার এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায়, তাকে গুদামে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না, অপসারণের চেষ্টা করছে বলে আলোচনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, এই দুই দারোয়ানের কারনে গুদামে প্রায় ১২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য  ঘাটতি হয়েছে, এর মধ্যে ৬ মেট্রিক টন কেনা হলেও এখানো ৬ মেট্রিক টন ঘাটতি রয়েছে,সরেজমিন তদন্ত করা হলে সত্যতা মিলবে। তারা বলেন, এই দুই দারোয়ান জেলার ভবানীগঞ্জ সরকারি খাদ্য গুদামে থাকতে সেখানেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে গুদাম কর্মকর্তাকে বিপাকে ফেলেছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিলার  বলেন, গুদামের দারোয়ান ইসমাইল ও শাহজাহানের কথায় আইন। তাদের কাছে গুদাম কর্মকর্তা মুকুল নিজেও জিম্মি ও অসহায়। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (টিসিএফ) শেখ মলিরুজ্জামান সজিব বলেন, উপজেলার এবার  সরকারিভাবে ৪৭৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করবে। এজন্য ১৮টি মিলের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এবং এক হাজার ৫৬৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।  এবিষয়ে জানতে চাইলে দারোয়ান ইসমাইল হোসেন ও শাহজাহান আলীএসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,  গুদামের শ্রমিক সর্দার তাদের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করছে। এবিষয়ে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসিএলএসডি) মুকুল বলেন, অনেকেই মৌখিক অবিযোগ করে,তবে লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হালদার বলেন,তিনি টাকা দিয়ে কাঠ কিনেছেন এতো নিয়মনীতি তো বোঝেন না।#
Exit mobile version