দিনাজপুরে ভূমি রেকর্ড সংক্রান্ত হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥
দিনাজপুরে ভূমি রেকর্ড সংক্রান্ত হয়রানি থেকে মুক্তি, দূর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী পরিবার সমূহ।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর-২০২৪) সকাল ১০ টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখ সড়কে সদর উপজেলার ৫ নং শশরা ইউনিয়নের ভবাইনগর মৌজার প্রায় ৫ শতাধিক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
শরিফুল ইসলাম, সাদেকুল ইসলাম, আবু সাঈদ, নূরজাহান, ওয়ারেসু নাহার, নুর সাবাহ্ প্রমুখ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়- সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত হাজ্বী মোঃ তবদিল হোসেন ভবাইনগর মৌজায় ১৯৭৩ থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে এস. এ ১৫৮ খতিয়ানের দাগ ১,১১২, ১১৩ মোট ১৯টি দলিলে ২১. ৭৯ একর জমির মধ্যে ১৩.৫৫ একর জমি নিজের ও নিজের পুত্রদের নামে খরিদ করে। যাহা খারিজ হয় এবং ১৯৮৯-৯০ সাল পর্যন্ত সমুদয় খাজনা পরিশোধ ছিলো। উক্ত সম্পত্তির মূল মালিক ছিল শ্রী কিশোর মোহন মজুমদারের ৭ পুত্র যা কোর্টের রায়ে বাটোয়ারা মামলা ৪০/৫৮, প্রাথমিক ডিগ্রী ২৪-০৮-১৯৫৯ চুড়ান্ত ডিগ্রী ০৪-০৬-১৯৬৩ ইং মোতাবেক ২ পুত্রের জমি আলাদা করে দেয়া হয় এবং ৫ পুত্রের জমি এক সঙ্গে রাখা হয়। উক্ত দুই পুত্র তাদের জমি ১৯৫৫ সাল থেকে বিক্রয় করে এবং জমি ক্রয়কারী ব্যক্তিগণের নামে এস.এ রেকর্ড হয়। বাকি ৫ পুত্রের মধ্যে ৪ পুত্রের জমি ১৩-০১-১৯৭০ সালে ৭৩০ নং হস্তান্তর দলিল মুলে হাজ্বী সিদ্দিক, আবুল ওহাব ও আব্দুল হামিদ এর সাথে বিনিময় করা হয় এবং এই জমি ০৭-০৩-১৯৮৩ সালে এডিসি কর্তৃত অবমুক্ত হয়। অবশিষ্ট ১ পুত্রের জমি বিনিময় হলেও সেটি চূড়ান্ত হয়নি। সরকার পক্ষ দাবি করে এই সম্পত্তির ৭ ভাগের ৩ ভাগ অর্পিত সম্পত্তি। কিন্তু তারা কিসের মুলে তাহা আজ পর্যন্তি স্পষ্ট হয়নি।
১৪-০৯-২০০৩ সালে মাঠ জরিপে ১৩.৫৫ মধ্যে ১১.৬৮ একর জমি আর এস খতিয়ান নং-১৫৯, ১৫৯/১ মূলে মৃতঃ হাজী তবদিল হোসেন এর পুত্র আবুল কালাম আজাদ গং এর নামে মাঠ পর্চা হয়। বাকি ১.৮৭ একর জমি দরকারি জমি হিসেবে কেটে রাখা হয়। পরবর্তীতে আপিল নম্বর-১৯২৭/১১ এবং ৪৭৮১/১৫ মোতাবেক ৩১ ধারায় ১৫-২০ দিনে শুনানী হয়ে আবারো আর এস ১৫৯/১ খতিয়ান হতে ২.৩৫ একর জমি সরকারি সম্পত্তি বলে কেটে রাখা হয়। কিন্তু অপর পক্ষে দেখা যায় যে কেটে রাখা জমি আব্দুল ওহার এর ওয়ারিশগণ কোনো কাগজপত্র না থাকার সত্বেও রেকর্ড নিয়ে বসে আছেন, অথচ এই ব্যাপারে দিনের পর দিন চেষ্টা করেও কোন সমাধান হয় না। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবুল কালাম আজাদ গং জোনাল সেটেলমেন্টন্ট অফিসে ৪২(ক) ধারা মোতাবেক ০১-০৮-২০২৩ তারিখে রেকর্ড পাওয়া জন্য আবেদন করে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর, দিনাজপুর অফিসের পক্ষ থেকেও জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে তাদের মাঠ পর্চা পাওয়া জয়ি ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন কবে।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, উল্লেখিত ঘটনার যেখানে একটি সুষ্ঠ সমাধান সম্ভব, সেখানে জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোন শুনানি না হলেও সহকারী কমিশনার (তুমি), সদর, দিনাজপুর এর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি হয়। এর ফলাফলে দেখা যায় যে, এখানে জমির কাগজপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় একতরফা রায় প্রদান করা হয়। সরকারি স্বার্থের কথা বলে সাধারণ মানুষের জমি সরকারি করার চেষ্টা ন্যায় বিচারের সাথে সাংঘর্ষিক।
আমারা ইতিপূর্বে স্বারক নং-১১,০৩.০০০০.৫৯১.২৭.০১৯.১৪-৫০২, তারিখ। ২০-০২-২০২৪ মোতাবেক ৪২ (ক) ধারায় যে রায় প্রদান করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ রূপে বাতিলের অনুরোধ করছি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় কখনই পূর্ণতা পাবে না।
আমরা অনেক চেষ্টা করে স্বারক নং ৩১.০৩.০০০০.৫৯১.২৭.০১৯.১৪-৪১৪১/১ তারিখ:২১-১১-২০২৪ মোতাবেক ৪২ (ক) ধারায় ০৯-১২-২০২৪ ইং তারিখে জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার দিনাজপুর-এর কার্যালয়ে শুনানীর তারিখ পাই। কিন্তু অনাকাঙ্খীত ভাবে জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার এই জমির ইতিপূর্বে শুনানী হয়েছে তাই আর কোনো শুনানী করবেন না বলে সমস্যা সমাধানে অ-সহযোগিতা করেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে কখনই শুনানী হয়নি। ১৯৮৯ সাল থেকে ৩৫ বছর যাবত আমরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ফুটবলের মতো ঘুরপাক খাচ্ছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ন্যায় বিচার আমরা পাই নাই। বিপরীত পক্ষের কোন বৈধ কাগজপত্র এবং যুক্তি না থাকার সত্বেও কিভাবে জমি রেকর্ড দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে দিনাজপুরের সচেতন মহল জানতে চায়।
আমরা জমি ক্রেতার ৩য় প্রজন্ম উক্ত সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার সুদৃঢ় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।##

 

Exit mobile version