সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটাই দুই নেতার শেষ বৈঠক। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা ধরে চলেছে ওই বৈঠক। এর আগে দুপুরে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া অমীমাংসিত বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী এবং তিস্তাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস মিলেছে।
বাংলাদেশে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার আশ্বাস দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ভারতের সহযোগীতা চেয়েছে। তবে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকের ঠিক পর পরই প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজের এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে বাংলায় লেখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক। আমাদের আলোচনায় কানেক্টিভিটি, বাণিজ্যিক সংযুক্তি ও আরও অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এদিকে মোদির সঙ্গে বৈঠকের পরই শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে আসার কথা কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও তার সঙ্গী হতে পারেন। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারতের অবদানের কথা হাসিনা বারবার কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের আগে নরেন্দ্র মোদি তার সরকারি বাসভবনে বৈঠক করবেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রবিন্দ জগন্নাথের সঙ্গে। ভারত মহাসাগরীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বহু যুগের। প্রধানত ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই দ্বীপরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক গুরুত্বও অপরিসীম।
প্রধানমন্ত্রী মোদি যে ৯টি রাষ্ট্রকে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ‘অতিথি দেশ’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও মরিশাস তাদের অন্যতম। বাকি দেশগুলো হচ্ছে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, মিসর ও নাইজেরিয়া। অন্য অতিথি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে আগামীকাল শনিবার মোদি মূল সম্মেলনের ফাঁকে আলাপ করবেন।
দিল্লির সরকারি সূত্রের খবর, শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর মোদি তার বাসভবনেই বৈঠক করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর বাইডেনের এটাই প্রথম ভারত সফর। গত জুনে মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ও বোঝাপড়ার বিষয়গুলো আরও এগিয়ে নিতে আজ শুক্রবারের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।