নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে প্রধান বক্তা করে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ‘বিজয় সমাবেশ’ করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি করা হয়েছে নাসিক নির্বাচনের আওয়ামী লীগ দলীয় সমন্বয়ক এবং দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানককে।
নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির ৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না।
আচরণবিধির ২২ নম্ববর ধারায় বলা আছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তিনি যদি এ এলাকার ভোটার হন তাহলে শুধু ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে পারবেন।
নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না।
৩০ নম্বর ধারায় বলা আছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অর্থ, অস্ত্র ও পেশী শক্তি কিংবা স্থানীয় ক্ষমতা দ্বারা নির্বাচন প্রভাবিত করা যাবে না। আচরণবিধির ১১-এর ২ উপধারায় বলা আছে, নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো প্রকার মিছিল বা কোনোরূপ শোডাউন করা যাবে না।
সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে বোঝানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সুংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, এটা তো বিজয় সমাবেশ। তবে মেয়র প্রার্থী আইভী থাকলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে কি না দেখা যাক। সকালে নেতারা কার্যালয়ে আসবেন, সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সমাবেশে আইভী অবশ্যই থাকবেন। কেন থাকবেন না? তিনি তো জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এটা তো কোনো নির্বাচনী সমাবেশ না, এটা দলীয় সমাবেশ। প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, ব্যাপক সমাগম হবে সমাবেশে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আমি আগে আপত্তি দিয়েছি, আজো বলেছি। আমি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেবো। আমাদের বিজয় র্যালিতে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশ মেনে যাইনি, অথচ সেটা নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে একটি বৃহৎ র্যালি ছিল। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে তীব্র নিন্দা জানাই।
ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা এতে আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত অভিযোগ জানাবো। আমরা বারবার বলছি, সমান অধিকার যেন থাকে। কিন্তু তা হচ্ছে না। নির্বাচনী এলাকায় বিজয় সমাবেশের নামে সরকারি দলীয় মেয়র প্রার্থীর শো-ডাউনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ইসি পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মতিয়ুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টা আপনার কাছ থেকে মাত্র জানলাম। আমি আগে খোঁজ নেবো কী হচ্ছে। দলীয় সমাবেশ নাকি নির্বাচনী সমাবেশ। তারপর বিষয়টা জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।