নীলফামারীতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নে ভাটিয়া পাড়া গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি মাটির চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা।
নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভাটিয়া পাড়া গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি মাটির চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বনজ ও ফলদ গাছ কেটে এসব চুল্লিতে কাঠ সরবরাহ করা হয়। চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় একদিকে যেমন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল ও গাছপালা। ঝুঁকির মুখে জনস্বাস্থ্য।
জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অবৈধ এই কয়লা তৈরির কারখানা। ফসলি জমি নষ্ট করে এসব চুল্লি বসানো হয়েছে। বিশেষ উপায়ে তৈরি এই চুল্লিগুলোতে প্রতিদিনই শতাধিক মন করে কাঠ পোড়ানো হয়ে থাকে। কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অনুমতিপত্র নেই। তিনি ২মাস ধরে এ ব্যবসা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: বাহার আলী শেখ (৪০) জানায়, কয়লা তৈরির কারখানা ধোঁয়া যখন ঘরে ঢুকে তখন ঘরে থাকা যায় না। কালো ধোঁয়ার কারনে বুক জ্বলে, চোখ জ্বলে, শ্বাস নেওয়া যায় না ও ঘরে অনেক দুর্গন্ধ। আমার আব্বা হাটের রোগী, যখন কালো ধোঁয়া আসে তখন ঘরে থাকতে পারে না। সুমারি খাতুন (৬০) জানায়, যখন কালো ধোঁয়া যখন ঘরের ভিতরে আসে তখন চোখে ধরে, মুখে ধরে ও দম খাটো হয়। মো: শাপলা বেগম (২৫) জানায়, কয়লা তৈরির কারখানার ধোঁয়ার কারনে শ্বাস নেওয়া যায় না, বুক জ্বালাপোড়া করে,চোঁখ জ্বলে। সোরহাব (১১১) জানায়, কয়লা তৈরির কারখানার কাঠ পোড়ানো ধোঁয়ার কারনে নাক জ্বলে, খুব অসুবিধা লাগে ও রাতে শ্বাস কষ্টের কারনে ঘুমাতে কষ্ট হয়। সুরুজ জামান (১৫) জানায়, কালো ধোঁয়ার কারনে অন্ধকার হয়ে যায়, গলা ঝাঁঝঝাঁজ লাগে ও গন্ধর ঠেলায় থাকা যায় না। সুখজান (৪০) জানায়, যখন বাতাস আসে তখন কয়লা তৈরির কারখানার ধোঁয়ার কারনে থাকতে পরি না। চোখ জ্বলে,নাগ জ্বলে শ্বাস নিতে পারি না। কয়লা তৈরির কারখানার কারনে ২৫-৩০ টি বাড়ির অনেক কষ্টে দিনপাড় করতেছে।
নাম না প্রকাশে স্থানীয়রা জানায়, চুল্লিতে কাঠ পোড়ানোর সময় চুল্লি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে। এ ছাড়াও কালো ধোঁয়ার ফলে গাছপালা নষ্ট হচ্ছে।
কয়লা তৈরির কারখানার ম্যানেজার মো: আইনুল হকের সাথে কথা বললে তিনি এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অপারগতা জানায়। কয়লা তৈরির কারখানার মালিক মো: ফরিদ ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নীলফামারী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Exit mobile version