শুরু থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন জনপ্রিয় গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ। শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনেও ছিল তার জোরালো সমর্থন। এবার মুখ খুললেন বিভিন্ন শ্রেণির বর্তমান দাবি ও আন্দোলনের বিরুদ্ধে।
প্রিন্স মাহমুদের মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা কখনো ডাকাত, আবার কখনো আনসার সদস্য হয়ে ফিরে আসছে। পথে নামছে নানা অযৌক্তিক দাবি নিয়ে। যা বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেশ গোছানোর কাজে বাধাগ্রস্ত করছে বারবার।
সে কারণে এই আন্দোলনকারীদের কঠোরভাবে দমন করার পরামর্শ দিয়েছেন এই সুরকার।
রবিবার রাতে আনসার সদস্য দ্বারা সচিবালয় ঘেরাও এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর এক ফেসবুক পোস্টে প্রিন্স মাহমুদ লিখেছেন, ‘দেশের এই ভয়াবহ দুর্যোগেও পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসছে কখনো ডাকাত হয়ে, কখনো বা আনসার হয়ে। আর সময় নাই। সরকারকে এদের শক্তভাবে এখনই রুখতে হবে। এরা ভুলে যাচ্ছে প্রয়োজনে আগস্ট ৫-এর মতো এই ঘেরাও কর্মসূচিকে ছাত্র-জনতাই আবার ঘেরাও করবে যেকোনো মুহূর্তে। এবার আর পালাবার পথ পাবে না।’
শুধু প্রিন্স মাহমুদ নয়, এদিন রাতে ঘটে যাওয়া আনসার বাহিনীর অপ্রত্যাশিত হামলা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই সামাজিকমাধ্যমে নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকে আবার এই বাহিনীকে বিলুপ্ত করার দাবিও তুলেছেন।
আনসার বাহিনীর হামলার নিন্দা জানিয়ে নির্মাতা আশফাক নিপুন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘জাতীয় দুর্যোগে মানুষের পাশে না থেকে যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দাবি আদায় করতে চায় তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এদের প্রতিহত করুন।’
সমন্বয়কসহ উপদেষ্টাদের ওপর আনসার বাহিনীর অপ্রত্যাশিত হামলায় গর্জে উঠেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘হোয়াটস আপ, আনসারস? দেশের এই অবস্থায় মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়াচ্ছে, আর এরা অন্য কারও হয়ে খেলছে? দাবি মেনে নেওয়ার পর এমন অতর্কিত হামলা মেনে নেওয়া যায় না। দাবি মেনে নেওয়ার পরও এই নৈরাজ্যটা এখন আর স্রেফ নেওয়া যাচ্ছে না। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি কত রূপে যে ফিরে আসার চেষ্টা করল! কখনো ডাকাত হয়ে, কখনো বা আনসার হয়ে নবান্নের এই দেশে। সময় এসেছে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার।’
রবিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে আটকে রাখার খবরে সচিবালয়ের উদ্দেশে রওনা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে, কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে। পরে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আনসার সদস্যরা পিছু হটে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ক্ষমা চেয়ে বিদায় নেয় আনসার সদস্যরা।
(ঢাকাটাইমস/