গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ডাবরী সীমান্তে বাংলাদেশি দুই যুবক হরিপুর উপজেলার গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের আবদুল বাসেদের ছেলে জহুরুল ইসলাম (২৭) ও নজরুল ইসলামের ছেলে মো. মকলেছ (২৮) কে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলি করে হত্যা করে। এ ছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশি আরেক যুবক ইদ্রিশ আলী (৩০) কে বিএসএফ গুলি করে আহত করে।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন এক বিবৃতিতে বলেন, “বিএনপি দলীয় ভাবে আধিপত্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় সাধুবাদ জানাই। সীমান্ত হত্যা ও আধিপত্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হতে সকল বিরোধী দলকে সরব হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি আরো বলেন, “আর কত বাংলাদেশী নিরস্ত্র—নিরীহ বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করলে আমাদের জাতি রাষ্ট্রের টনক নড়বে। বারবার সীমান্তে গুলি, খুন, নির্যাতন, লাশ গুম এটি কোন ধরণের বন্ধুত্বের নমুনা? বন্ধুর বুকে বন্ধু কখনো গুলি চালায় না। এটি পৃথিবীতে নজিরবিহীন। অথচ আমাদের রাষ্ট্র নিশ্চুপ। শেখ হাসিনা কোন ভাবেই এই হত্যার দায় এড়াতে পারেননা। নাগরিককে রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হলে লাশ গ্রহণে সীমান্তে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি আরো বলেন, “২০০০—২০২৩ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশের নিরস্ত্র—নিরীহ নাগরিকদের সীমান্তে হত্যার ধারাবাহিকতায় এই হত্যা। যা খুবই ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। সীমান্ত হত্যা নিয়ে বাংলাদেশের সরকার এবং বিবেকবানদের নির্বাক থাকা সন্দেহজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। বারবার সীমান্ত হত্যা, সার্বভৌমত্বের লংঘন, আমাদের স্বাধীনতা—সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার সামিল। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে ভারত শ্রদ্ধা ও সম্মান করে না। যা আমাদের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞার শামিল।”
মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নিরস্ত্র—নিরীহ কিশোরী ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখার লাশের ছবি এখনো পৃথিবীর সকল মানবতাবাদী মানুষের বুকে রক্তক্ষরণ করে। বিচারের আশায় দিন গুনছে ফেলানীর দুঃখীনি মা—বাবা, বাংলাদেশ ও সারাবিশ্ব। ক্ষতিপূরণ পায়নি নিরীহ ফেলানীসহ সীমান্তে নিহতদের স্বজনরা। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ত্যাগ করে স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করতে পারলেই বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যা রোধে সক্ষম হবে।”
তিনি সীমান্ত হত্যা এবং সার্বভৌমত্ব লংঘনের বিরুদ্ধে সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও সরব হওয়ার আহ্বান জানান।