বাংলাদেশের ইনিংস শেষের পর মিরাজের চোট

২১৭ রানে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস

পোর্ট এলিজাবেথের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন মুশফিকুর রহিম-ইয়াসির আলীই কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে পারলেন যা। তাও সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী। লাঞ্চের আগে আগে ফিরে গেলেন দুজনই। তার পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে লেজের বাকি দিকটা। লাঞ্চের পর মাত্র ৫ ওভারে পতন হয়েছে বাকি ৩ উইকেটের! তাতে ২১৭ রানে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ফলে ২৩৬ রানের বিশাল লিড পেয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে সফরকারীদের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে ধাক্কা হয়ে আসে মিরাজের চোট। প্রোটিয়ারা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলে এবাদতের প্রথম ওভারেই ক্যাচ উঠেছিল সারেল এরউইর। প্রোটিয়া ওপেনার কাট করলে বল বাতাসে উঠে মিরাজের কাছে গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু মিরাজ তাৎক্ষণিকভাবে মনোযোগী ছিলেন না। বল সরাসরি আঘাত করে তার পেটের দিকের অংশে। আঘাতের তীব্রতা পরে বোঝা যায়। মিরাজ যন্ত্রণায় মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকেন। তাৎক্ষণিক শুশ্রূষার পর স্ট্রেচারে মাঠ ছেড়ে যান এই অফস্পিনার। পরে অবশ্য দেখা গেছে সপ্তম ওভারেই মাঠে ফিরে আসেন অফস্পিনার। শুরু করেন বোলিংও।

আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার রান পাহাড়ে চাপা পড়ে হতাশাজনক ব্যাটিং ‘উপহার’ দেন মুমিনুল হকরা। ১২২ রান তুলতে হারায় ৫ উইকেট। ওই জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়তে মাঠে নামেন মুশফিক-ইয়াসির। ৫ উইকেটে ১৩৯ রান স্কোরে রেখে দ্বিতীয় দিন শেষ করে নামেন তৃতীয় দিনে। তাও অবশ্য বৃষ্টির কারণে বেশ কিছুটা বিলম্বে। এর পরেও চমৎকার ব্যাটিংয়ে তৃতীয় দিনে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে, সকাল থেকে প্রোটিয়া বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন ইয়াসির। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে যান তিনি। কেশব মহারাজের বলে টোকা দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বল উঠে গেলে প্রোটিয়া স্পিনার ফিরতি ক্যাচ নেন অনেকটা গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে! ফেরার আগে ইয়াসির ৮৭ বলে খেলে যান ৪৬ রানের ইনিংস, যাতে ছিল ৭ চারের মার। ইয়াসির আউট হওয়ার আগে তাদের জুটি থেকে আসে ৭০ রান।

এমন অবস্থায় বাংলাদেশ দলকে টেনে তুলে ভালো একটা অবস্থা নিয়ে যেতে থাকেন মুশফিক। ইয়াসির আলী আউট ‍হলেও তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনটা হতে যাচ্ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু লাঞ্চের আগে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ফলে প্রথম সেশনটা পুরোপুরি হয়নি বাংলাদেশের।

টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করা মুশফিক ফেরার আগে করেন ৫১ রান। খেলেছেন ১২৬ বল। সাইমন হার্মারের বলের অবস্থান না বুঝে ব্যাট ঘুরিয়ে ভুল শট নির্বাচন করে বোল্ড আউট হয়ে ফিরেছেন তিনি।

মুশফিক যখন ফেরেন তখন স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ২১০। এমন সময়ে ব্যাটার মেহেদী মিরাজ আর প্রতিরোধ গড়বেন কী। উল্টো বিলাসী শট খেলে ক্যাচ আউট হন মহারাজের বলে। পরের ব্যাটাররাও মেরে খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশ ৭৪.২ ওভারেই অলআউট ২১৭ রানে।

প্রোটিয়াদের হয়ে পেসার উইয়ান মুল্ডার ২৫ রানে নেন ৩ উইকেট। ৩৯ রানে সমসংখ্যক উইকেট নেন অফস্পিনার সিমোন হারমারও। পেসার ডুয়ানে অলিভিয়ার ৩৯ রানে আর বামহাতি স্পিনার মহারাজ ৫৭ রানে নেন দুটি করে উইকেট।

Exit mobile version