রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তন ব্যতীত শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি অনিশ্চিত : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সামগ্রীক পরিবর্তন ব্যতীত শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি অনিশ্চিত। শ্রমিকরা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। তাদের ভোটে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। আগামী নির্বাচনে শ্রমিকরা শ্রমিকবান্ধব নেতৃত্বকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন করবে।
তিনি গতকাল চট্টগ্রামের একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিপিসি অয়েল সেক্টরের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্টর সভাপতি সভাপতি আবু নাঈম সুজন-এর সভাপতিত্বে ও মাহমুদুল হাসান ও অ্যাডভোকেট শাহজাহান চৌধুরী-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগর উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মো. নুরুল আমিন, ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের মহানগর সহ-সভাপতি নাজির হোসেন, পতেঙ্গা থানা সভাপতি মো. মইনুদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পতেঙ্গা থানা সভাপতি আকিফ বিন ইউসুফ প্রমুখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, দেশে দুই তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমিক। যারা দিনরাত পরিশ্রম করে রাষ্ট্রের চাকা সচল রাখে। কলকারখানায় উৎপাদন সচল রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটায়। রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে মজবুত ভিত্তি পায়। অথচ দেখা যাচ্ছে যে শ্রমিক রাষ্ট্রের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করছে তার সুখ শান্তির জন্য রাষ্ট্র কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। প্রতিনিয়ত দেশে দ্রব্যমূল্য হতে শুরু করে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। দাম বাড়ে না শুধু শ্রমিকের পরিশ্রমের। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে স্বল্প মজুরিতে শ্রমিকরা বহু কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব শ্রমিকবান্ধব মানুষের হাতে না গেলে শ্রমিকদের জীবনে মুক্তির আসবে না। আগামী দিনে দেশের সকল নির্বাচনে শ্রমিকবান্ধব সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। শ্রমিকবান্ধব নেতৃত্ব শুধু শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে না বরং সকল শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। আমাদেরকে এমন প্রার্থীকে নির্বাচন করতে হবে যিনি আখিরাতের জীবনকে বিশ্বাস করেন এবং সে অনুযায়ী নিজের জীবন পরিচালনা করেন। আখিরাতে বিশ্বাসী মানুষ কখনো অন্যের হক মেরে খেতে পারেন না। রাষ্ট্রের সম্পদ ও টাকা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে কুক্ষিগত করবেন না। তিনি কখনো মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করবেন না। সমাজ রাষ্ট্রে অনাচার ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবেন না। বরং সকল অন্যায় অবিচারকে শক্তভাবে দমন করবেন। আমরা এমন নেতৃত্বকে আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চাই। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
এস এম লুৎফর রহমান বলেন, বিপিসি ও এর অঙ্গ সংগঠন সমূহে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বহাল তবিয়াতে আছে। অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মচারীদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে হবে। তাদের বেতন-ভাতা বর্তমান বাজারদরের আলোকে বৃদ্ধি করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু করতে হবে।