ভোটের দিন গণকারফিউ পালনের আহ্বান জানিয়েছে নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদ। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে একতরফা ডামি নির্বাচন বর্জন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সমাবেশে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষ গণমিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়, নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়। সমাবেশ শুরুর আগে রিকশাওয়ালা মাইক নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রিকশাসহ মাইক নিয়ে যায় পুলিশ।
গণমিছিল পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ভারতীয় মদদে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে আফ্রিকা অঞ্চলের মতো ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্র পরিণত করার জন্য আওয়ামী লুটেরারা আগামী ৭ জানুয়ারি ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন আয়োজন করছে। দেশপ্রেমিক গণতন্ত্রকামী জনগণ এই ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন বর্জন করেছে, কোনো বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আপনি জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, আমরা ক্ষমা করে দিতে চাই, মহব্বতের সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। সেজন্য আপনাকে একতরফা নির্বাচন থেকে সরে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে বাড়তি খরচ মেটাচ্ছে, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে আর সরকারি দলের লোকেরা উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। ১৫ বছরে দেশের ১৬ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। লাঙ্গল, নৌকা, ট্রাক, ঈগল সবই শেখ হাসিনা মার্কা। কাজেই স্থানীয় সম্পর্ক কিংবা প্রভাবে বা এক দেড় হাজার টাকার জন্য কেউ ৭ তারিখ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ৭ তারিখে একতরফা নির্বাচনের গিয়ে মোদির দালালি করবেন না। ৭ তারিখ আমরা জনগণকে বলবো, স্বতঃস্ফূর্তভাবে গণকার্ফ্যু পালন করুন, ঘর থেকে কেউ বের হবেন। আগামীকালের হরতালেও আপনাদের নৈতিক সমর্থন চাই আমরা।
দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার পাঁয়তারা চলছে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ কার্ফ্যু জারি করেছিল। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগের মতো সহিংস আন্দোলনের পথ বেছে নিইনি। আমরা জনগণকে বলবো আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে ঘরে থাকুন। এই প্রহসনের নির্বাচনে ভোট দিতে কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, কিন্তু সরকার একটা সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এবিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সরকার বলছে, অতীতের ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য। কিন্তু ১৪ ও ১৮ সালের ভুল তো তারা আবার করতে যাচ্ছে। সুতরাং জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র হরণের বিচার অবশ্যই হবে। সরকার ২ কোটি ভাতা সুবিধাভোগীকে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্র নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। ডামি নির্বাচন, ডামি প্রার্থী, ডামি মিছিলের পর এবার ডামি ভোটার বাড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। ভোটকেন্দ্রে কৃত্রিম লাইন তৈরি করে ৭০% ভোট দেখাতে সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত ভোটের হার ৫ শতাংশ ও হবে না। জনগণকে বলবো ভয় পাবেন না, নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এদেশে গণতন্ত্রের বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।