মওলানা ভাসানী’র আসসালামু আলাইকুমই ছিল স্বাধীনতার ইঙ্গিত : কাজী ছাব্বীর

ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ-এনসিবি’র চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ছাব্বীর বলেন কাগমারী সম্মেলনে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তার  বক্তব্যে দৃঢ় কন্ঠে  “আসসালামু আলাইকুম” উচ্চারণের মাধ্যমেই প্রথম  স্বাধীনতা আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যই পাক শাষকদের মসনদ কেপে উঠেছিল। স্বাধীনতা ইঙ্গিতের  পাশাপাশি উপমহাদেশের হিন্দু, মুসলিমদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টিও হুজুর অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে উত্থাপন করেছিলেন তার বক্তব্যে। সেই বৈষম্য ও শোষণ নীতি বিরোধী আন্দোলনই  পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপ নিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের  সময়ে ভারত আমাদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। মওলানা ভাসানী আন্তর্জাতিক ভাবে বেশ পরিচিত একজন নেতা। তাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সহজে বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার স্বার্থে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শে, মওলানা ভাসানীকে প্রবাসী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছিল।  মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে মওলানা ভাসানীর প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী) কর্তৃক আয়োজিত রাজধানীতে  এক স্মৃতিচারন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিবি’র চেয়ারম্যান কাজী ছাব্বীর এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন স্বাধীনতার পরে পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং ভারত হয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে হুজুরকে তার ইচ্ছামত দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। মওলানা ভাসানীকে  ওই সময়ে ভারতে নজরবন্দী রেখে বিভিন্ন অজুহাতে বিলম্ব করিয়ে  শেখ মুজিবুর রহমানের পরে ২২ জানুয়ারী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আসতে হয়েছে মওলানা ভাসানীকে।  এটা নিছক আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র ছিল।  সাড়ে  সাত কোটি জনগণের প্রিয় নেতা মওলানা ভাসানীকে নিয়ে আওয়ামীলীগের মধ্যে একটা ভয় কাজ করতো। শেখ মুজিবুর রহমানের আগে মওলানা ভাসানী দেশে আসলে তিনিই হতেন জাতির জনক। আওয়ামিলীগ একক ভাবে  মুক্তিযুদ্ধের অবদান গিলে খেতে  চেয়েছিলো। এটাই ছিলো আওয়ামীলীগ নেতাদের উদ্দেশ্য । এজন্য ভারত সরকারের সাথে আঁতাত  করে  শেখ মুজিবুর রহমানের আগে হুজুরকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান দেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে  ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা এবং  বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মওলানা ভাসানী,  শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও সলঙ্গা বিদ্রোহের মহানায়ক মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশের অবদানের কথা   পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস  থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। অবশেষে জনরোষে তিনশো পঞ্চাশ এমপি মন্ত্রীসহ সপরিবারে তাকে  দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী)’র সভাপতি স্বপন সাহার সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ৭১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক, বাংলাদেশ কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান দেশ, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ-এনসিবি’র মহাসচিব ইকবাল হাসান স্বপন, প্রেসিডিয়াম সদস্য পন্ডিত রতন কুমার ভট্টাচার্য, ন্যাপ ভাসানীর মহাসচিব হামিদা খাতুন মির্জা শেলী, বাংলাদেশ জাসদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির, মানবতার দেয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল বাশার, কবি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, কবি ফরিদা সুলতানা, কবি সানজিদা রসুল, কবি মরিয়ম রহমান, কবি মিমি ইসলাম, এনসিবি’র দপ্তর সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী, ন্যাপ ভাসানীর দপ্তর সম্পাদক নকীব হক প্রমুখ।

Exit mobile version