মহানবী (সা.)-এর নামে কোরবানি দেওয়া যাবে?

কোরবানি শব্দটি আরবি শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। যার অর্থ- ‘নৈকট্য বা সান্নিধ্য’। কোরবান হলো, প্রত্যেক সেই বস্তু, যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। আর সেখান থেকেই ফার্সি বা উর্দু-বাংলাতে ‘কোরবানি’ শব্দটি গৃহীত হয়েছে।

আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার আশায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কোরবানির নিয়তে উট, গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়া জবাই করাই হলো কোরবানি। আর এ পশুর পশম যতবেশিই হোক না কেন, প্রতিট পশমের বিনিময়ে রয়েছে একটি করে সওয়াব। জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) বর্ণনা করেন, সাহাবায়ে কেরাম একদিন নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সা.) এই কোরবানি কী? নবীজি বললেন, ‘এটা তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম)-এর সুন্নাত (রীতিনীতি)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে আমাদের কি ফজিলত (পূণ্য রয়েছে)? নবীজি (সা.) উত্তরে বললেন, ‘(কোরবানির জন্তুর) প্রতিটি লোমের (পশমের) পরিবর্তে (একটি করে) নেকি রয়েছে।’ তাঁরা আবারো জিজ্ঞাসা করলেন, পশম বিশিষ্ট পশুর বেলায় কী হবে? (পশুর তো পশম অনেক বেশি)। নবীজি (সা.) সাল্লাম বললেন, ‘পশমওয়ালা পশুর প্রতিটি পশমের পরিবর্তেও একটি করে নেকি রয়েছে।’ সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

সামর্থ্যবানদের জন্য নিজের নামে কোরবানি দেওয়া আবশ্যক। সামর্থ্যবান ব্যক্তি যদি নিজের ওয়াজিব কোরবানি আদায়ের পাশাপাশি প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পক্ষ থেকে কোরবানি দেন, তাহলে এটা বেশ উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয় বটে। নবী করিম (সা.) হজরত আলি (রা.)-কে তাঁর পক্ষ থেকে কোরবানি করার অসিয়ত করেছিলেন। তাই তিনি প্রতি বছর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ থেকে কোরবানি দিতেন।

হানশ (রহ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আলী (রা.)-কে দেখলাম তিনি দু’টি বকরি কোরবানি করলেন। আমি তাকে বললাম, এটি কি? আপনার ওপর তো একটি আবশ্যক ছিল কিন্তু আপনি দু’টি করলেন কেন? তিনি বললেন, নিশ্চয় রাসুল (সা.) আমাকে অসিয়ত করেছেন তার পক্ষ থেকে কোরবানি করতে। এ কারণে আমি তার পক্ষ থেকে কোরবানি করছি। (সুনানে আবু দাউদ : ২৭৯০)

Exit mobile version