Site icon দৈনিক দেশের সংবাদ deshersangbad.com

মিরসরাইয়ে পর্যটকশূন্য পর্যটন স্পট, ক্ষতির সম্মুখীন ইজারাদাররা

মিরসরাই প্রতিনিধি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার ঘোষিত কারফিউয়ের কারণে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো। গত ১০ দিন ধরে এসব পর্যটন স্পটে পর্যটকেরা আসতে পারছেন না। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ইজারাদারেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলন ও কারফিউয়ের কারণে ধস নেমেছে এ শিল্পে। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিভিন্ন পর্যটন স্পটের ইজারাদার ও স্পটগুলো ঘিরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।

মিরসরাইয়ের পর্যটন শিল্প খুবই সম্ভাবনাময়। এখানে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মহামায়া সেচ প্রকল্প, দেশের ষষ্ঠ সেচ ও প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প মুহুরী প্রজেক্ট, আটস্তর বিশিষ্ট জলপ্রপাত খৈয়াছড়া ঝরণা, রূপসী ঝরণা, দুর্গম মেলকুম গিরিখাত, বাওয়াছড়া প্রকল্প, বোয়ালিয়া ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরণা, ডোমখালী বেড়িবাঁধ, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের বসুন্ধরা পয়েন্ট, হিলসডেল মাল্টি ফার্ম ও আরশিনগর ফিউচার পার্ক। প্রতিদিন এসব পর্যটন স্পটের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষ। এখন অনেকটা পর্যটকশূন্য এসব স্পট।

সবচেয়ে বড় পর্যটন কেন্দ্র মহামায়া ইকোপার্ক চলতি বছরের জন্য ভ্যাটসহ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ইজারা নেয় মেসার্স হক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। তবে পরিস্থিতির কারণে পর্যটক নেই বললেই চলে। এখানে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে ৮৬ হাজার টাকা।

চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ বারৈয়াঢালা রেঞ্জের আওতাধীন ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য এ ঝরণাসহ ৫টি ঝরণা ইজারা পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শোমোশন লিমিটেড। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তন্ময় ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে আমাদের প্রতিষ্ঠান ভ্যাটসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকা দিয়ে বারৈয়াঢালা রেঞ্জের আওতাধীন ৫টি ঝরণা ইজারা নিয়েছে। গত ১০ দিন ধরে এসব ঝরণায় কেউ আসতে পারছে না। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। অথচ এখন বৃষ্টির কারণে ঝরণায় যাওয়ার ভালো সময়।

তিনি আরও জানান, এসব স্পটে ২০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন। এদের বেতন, খাওয়ায় অনেক টাকা খরচ হয়। প্রতিদিন আমাদের প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে।

খৈয়াছরা ঝরণা এলাকায় অবস্থিত বিলাস হোটেলের মালিক আবদুল আলীম বলেন, টানা ১০ দিন কোনো পর্যটক নেই বললেই চলে। বেচাকেনা একেবারে কম। অনেকে কাস্টমার না থাকায় দোকান খোলেনি। সারাদিনে ৫০০ টাকার বিক্রি করতে কষ্ট হয়।

মহামায়া ইকোপার্ক এলাকার হান্ডি রেস্টুরেন্টর সত্ত্বাধিকারী আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার ঘোষিত কারফিউয়ের কারণে মানুষ আসছে না বললেই চলে। গত ১০ দিন তেমন বেচাকেনা হয়নি। হোটেলের সবাই সারাদিন অলস বসে সময় পার করছে।

মহামায়া ইকোপার্ক ইজারা পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটর কর্মকর্তা নবী উল্লাহ বলেন, দেশের খারাপ পরিস্থিতির কারণে পর্যটক একেবারে কমে গেছে। এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন বেড়াতে আসেন। এখন কেউ আসতে পারছেন না। এছাড়া তিনদিন একেবারে বন্ধ ছিল। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।

Exit mobile version