মিরসরাইয়ে সাঈদী পুত্র মাসুদ বিন সাঈদী পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, ‘২০১০ সালের ২৯ জুন আল্লামা সাঈদীকে খুনি হাসিনা সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে গ্রেফতার করেছে। যখন তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল যুদ্ধাপরাধ নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা। যে মানুষটি ৫২ বছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৫০ টি দেশ ঘুরে মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, যে মানুষের মুখে কোরআন শুনে পৃথিবীতে প্রায় ১ হাজারের অধিক বিধর্মী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সেই মানুষটি নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। এই আঘাতের মিথ্যা হাস্যকর মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে ১৩ টি বছর রেখেছিলেন। সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আপনারা জানেন মামলার সাক্ষীদেরকে ঢাকার সেফহাউজ নামক একটি জায়গায় দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হতো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কারাগারে আব্বার সঙ্গে প্রতি মাসে ১ বার করে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট যখন আব্বাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ২৬ দিন আগে আমরা আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আর ৪ দিনপর আব্বার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত একজন সুস্থ্য মানুষকে কারগার থেকে নিয়ে এসে পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে। যখন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে আসা হয় আমি তখন হাসপাতালে অবস্থান করছিলাম, আমি অসংখ্যবার তাদের কাছে অনুরোধ করেছি আমার সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করার জন্য। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। কারণ আমার সঙ্গে যদি দেখা করতে দেওয়া হতো তাহলে যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আল্লামা সাঈদীকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে সেটা ধরা পড়ে যেতো। আমি যদি দেখা করতে পারতাম তাহলে আমার পিতা নিশ্চয়ই আমাকে বলতেন আমার বুকে কোন ব্যাথা নেই আমাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে এনেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে বিধায় তারা আমাকে আব্বার সঙ্গে এক মুহুর্তের জন্য দেখা করতে দেয়নি।’
উপজেলা পরিষদের সাবেক এই চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের কোন নেতৃবৃন্দের কোন অপরাধ ছিল না। তাদের একটি মাত্র অপরাধ ছিল-তারা শুধুমাত্র স্বপ্রশংসিত আল্লাহর প্রশংসা করেছিল, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েমের রাজনীতি বাংলাদেশে করেছিল এটাই তাদের অপরাধ। আল্লামা সাঈদীকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই। আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানাই খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওই ট্রাইব্যুনালের সামনে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের সকল আলেম হত্যার বিচার চাই।’
১৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) রাতে মিরসরাই উপজেলার ৯ নম্বর মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিসমত জাফরাবাদ রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানার উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানা মাঠে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাহেরখালী আহমদিয়া হাবিবিয়া গণিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানার পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ রেজাউল মোস্তফা চৌধুরীর সার্বিক তত্বাবধানে প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি কাজী ইব্রাহীম। বিশেষ ওয়ায়েজিন হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও কোরআন গবেষক এডভোকেট গাজী এনামুল হক, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর মৌসুমী আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আলা উদ্দিন শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমীর নুরুল কবির, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট সাইফুর রহমান।

Exit mobile version