প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এলাকা হতে ০২ জন অপহরণকারী গ্রেফতার এবং অপহৃত যুবক উদ্ধার।
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন
থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল
থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির
সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক,
দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ
অবৈধ অস্ত্র, গোলাবরুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে
আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। ভিকটিম মোঃ মাহবুব আলম (৩৫) পেশায় একজন হোটেল ম্যানেজার। গত প্রায় ২ বছর পূর্বে জনৈক
মানিক এর বোন রিংকু (২৫) এর সাথে মাহবুব এর পরিচয় হয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। উক্ত
সম্পর্কের জেরে প্রায়ই রিংকুর সাথে মাহবুব এর কথা বার্তা হত এবং রিংকু প্রায়ই রেষ্টুরেন্টে এসে
মাহবুব এর সাথে দেখা করত। গত ০৪ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ দুপুর অনুমান ১২.০০ ঘটিকায় মাহবুব চট্টগ্রাম
মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন দক্ষিন কাট্টলি এলাকায় রিংকুর ভাইয়ের ভাড়া বাসায় বেড়াতে যায়। উক্ত বাসায়
রিংকু মাহবুবুকে আপ্যায়নের একপর্যায়ে আনুমানিক ১২.৩০ ঘটিকায় হঠাৎ রাব্বি চৌধুরী প্রকাশ
শাওন, মোঃ কায়সার চৌধুরী ও আবদুল এবং আরও কতিপয় দুস্কৃতিকারী রিংকুর ভাইয়ের বর্নিত ভাড়া
বাসায় প্রবেশ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মাহবুবকে হেনস্থা এবং বিভিন্ন ধরণের কুৎসিত কথাবার্তা
বলতে থাকে। মাহবুব তাদের উক্ত কথা বার্তায় প্রতিবাদ করলে আসামীরা তাকে চর-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মারতে
থাকে এবং একপর্যায়ে বর্ণিত বাসায় অন্যায়ভাবে আটক করে ভিতর থেকে দরজা লক করে দেয়।
৩। এসময় দুস্কৃতিকারীরা মাহবুবের পকেট থেকে জোর পূর্বক মোবাইল ও মানিব্যাগে থাকা নগদ
টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং এশিয়া, সোনালী ও এনআরবি ব্যাংকের ০৩টি ডেভিড কার্ডের পিন কোড
নম্বরের জন্য মারধর করতে থাকে। মাহবুব ব্যাংকের পিন কোড নম্বর দিতে গড়িমশি করলে আসামী রাব্বি,
কায়সার ও আবদুল তাদের হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে এ্যালোপাথারী মারধর করতে থাকে এবং বলে ডেভিড
কার্ডের পিন নম্বর লাগবে না নগদ ৫,০০,০০০/- টাকা মুক্তিপন দিলে তাকে ছেড়ে দিবে।
৪। ভিকটিম মাহবুব নিরুপায় হয়ে টাকা দিতে সম্মত হয় এবং আসামীদের কথামত তার ভাই আলম এবং
বন্ধু মোঃ আশরাফুজ্জামান শাওনকে মোবাইল এ কল করে কান্নাকাটি করে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে রিংকুর
বর্ণিত ঠিকানায় আসতে বলে। এর মধ্যে মাহবুব এর ভাই ও বন্ধু টাকা নিয়ে আসতে বিলম্ব হওয়ায়
আসামীগন টাকার জন্য পুনরায় চাপ সৃষ্টি করতে থাকে এবং বিকাশের মাধ্যমে আপাতত ৫০,০০০/- টাকা
আনতে বলে। মাহবুব আসামীদের কথামত তার বন্ধু ও স্থানীয় প্রতিবেশী মোঃ সেলিম ও ভাতিজা সাকিবকে
মোবাইলে কল করে টাকা পাঠাতে বললে তারা নগদ ৩০,৬০০/- টাকা সেন্ড করে।
৫। আসামীগন উক্ত টাকা পাওয়ার পর তাদের দাবিকৃত ৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার জন্য পূনরায় চাপ সৃষ্টি করলে
মাহবুব তার বড় ভাই ও বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায় তারা পাঁচ লক্ষ টাকা যোগাড় করতে পারছে
না তবে আপাতত দুই লক্ষ টাকা যোগাড় করতে পেরেছে। আসামীগন তাদেরকে নগদ ২,০০,০০০/- টাকা নিয়েই
আসতে বলে। মাহবুব আসামীদের কথামতো তার ভাই ও বন্ধুকে তাদের যোগাড় করা টাকা নিয়ে দ্রুত
আসতে বলে।
৬। ইতোমধ্যে মাহবুব এর বড় ভাই আলম ও বন্ধু আশরাফুজ্জামান শাওন উক্ত বিষয়টি অধিনায়ক র্যাব-৭,
চট্টগ্রামকে বিস্তারিত অবগত করে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৪ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম
এর একটি আভিযানিক দল অভিযোগকারীদের নিয়ে রিংকুর বর্ণিত ঠিকানায় আসে। আলম ও বন্ধু
আশরাফুজ্জামান উক্ত ঠিকানার বসত ঘরে নক করলে আসামীরা বর্ণিত বসত ঘরের দরজা খুলে তাদের ভিতরে
প্রবেশ করায়। তখন ভিকটিমের ভাই আলম আসামী রাব্বির হাতে ০১টি লাল ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় নগদ
টাকা দিলে আসামী রাব্বি উক্ত ব্যাগ হতে টাকা বের করে গুনা অবস্থায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের বর্ণিত
আভিযানিক দল হাতে নাতে ঘটনাস্থল হতে চাঁদা আদায়ের টাকা সহ আসামী ১। মোঃ রাব্বি চৌধুরী
প্রকাশ শাওন (২৭), পিতা-মোঃ ওমর ফারুখ এবং ২। মোঃ কায়সার চৌধুরী (২৬), পিতা-মৃত তসলিম
চৌধুরী, উভয় সাং-১১নং দক্ষিন কাট্টলি, থানা-পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম মহানগর’দের গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে ঘটনাস্থল হতে আহত অবস্থায় ভিকটিম মাহবুব এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল, মানিব্যাগ এবং
আসামীদের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে প্রেরণকৃত ৩৬০০০/- টাকা এবং নগদ মুক্তিপন হিসেবে
প্রদানকৃত ২,০০,০০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিম সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের
নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।