Site icon দৈনিক দেশের সংবাদ deshersangbad.com

লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিক হত্যার দায়ে ২ জনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক :

লক্ষ্মীপুর সদরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাংবাদিক শাহ মনির পলাশ হত্যাকান্ডের মামলায় তার দুই চাচাতো ভাইয়ের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের আরো ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদ দুই সহোদর। তারা মাছিমনগর গ্রামের ফকির বাড়ির আখতারুজ্জামানের ছেলে।

অপরদিকে একই আদালতে একই দিন সদরের টুমচরে শিশু মামুন হাত্যা মামলায় তার সৎবাবা মো. মাসুদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের সাজা প্রদান করা হয়। মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে দৈনিক রুপবানীর জেলা প্রতিনিধি পলাশদের বাগানের গাছ কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে তার দুই জেঠাতো ভাই আবু ইউছুফ ও আবু ছায়েদ।

এ সময় তার পিতা মনিরুল ইসলাম অভিযুক্তদের বাঁধা দিতে গেলে তাদের সাথে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এসময় তার বাবা মনিরকে ইট নিক্ষেপ করে চাচাতো ভাইয়েরা। একপর্যায়ে তিনি ইটের আঘাতে মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাটি দেখেই দৌঁড়ে গিয়ে বাবাকে মাটি থেকে তুলছিলো পলাশ। হঠাৎ পেছন থেকে লাঠি দিয়ে পলাশের মাথায় আঘাত করা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ ফেব্রুয়ারি মারা যায়। পরে সন্ধ্যায় নিহত পলাশের পিতা মো. মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে সদর থানায় আবু ইউসুফ, আবু ছায়েদ ও ফয়জুন্নেছাকে আসামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে একই বছরের ৭ অক্টোবর ইউসুফ ও ছায়েদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সদর থানা পুলিশ। মামলার ৩য় আসামী ফয়জুন্নেছাকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এদিন রায় দেন।

এদিকে রায় ঘোষণার পর সাংবাদিক পলাশের বাবা মনিরুল ইসলাম আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে রায়ের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমার নির্দোষ ছেলেকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর হত্যাকারীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান তিনি।

একই কথা জানিয়ে তার (পলাশের) বড় ভাবী শিল্পী আক্তার দীর্ঘ ৫ বছর বিজ্ঞ আদালতের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আসামীরা অর্থ ও জমির লোভ দেখিয়েছে, আমরা রাজি হয়নি। এতে তারা নানাভাবে আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁশুলী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দিয়েছেন। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

এদিকে একই আদালতে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি তারিখে সদরের টুমচরের একটি ডোবায় নিখোঁজ শিশু মামুনের লাশ পাওয়া ও পরবর্তী হত্যা মামলার ঘটনার রায় দেয়া হয় একই দিন। মামলায় তার সৎ বাবা মো.মাসুদকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের সাজা প্রদান করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত মাসুদ সদরের পূর্ব টুমচর গ্রামের মৃত কলিমুল্লাহর ছেলে।

Exit mobile version