আনসার সদস্যদের আন্দোলনের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়করা ছিলেন। তারা বের হতে পারছিলেন না।
এমন পরিস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধারে সচিবালয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৫ আগস্ট) রাত ৯টা ২০ মিনিট থেকে সেখানে আনসার এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। এসময় আতংক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।রাত ৯ টা ৪৪ মিনিটে সচিবালয়ের গেটের সামনে যেখানে আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এঘটনায় অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আনসারদের হটিয়ে সচিবালয় এলাকা দখলে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ আনসার সদস্য সরে গেছেন। যারা সচিবালয়ের ভেতরে আটকা পড়েছেন তাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছে সেনা সদস্যরা। সচিবালয়ের গেটে অবস্থান নিয়ে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য। ভেতরে উৎকন্ঠায় সময় পার করছেন অবরুদ্ধ হওয়া সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে আনসার সদস্যরা সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয়ে ঢুকে সকলকে অবরুদ্ধ করে রাখের। এতে করে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছেন না।
সচিবালয়ে অবরুদ্ধের ঘটনা নিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন ফেসবুকে পোস্ট দিলে শিক্ষার্থীরা টিএসসি অভিমুখে রওয়ানা হন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন। ছোট-বড় দল হয়ে বিভিন্ন স্লোগানও দেন তারা। এরপর তারা সচিবালয়ে যান।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘হাসিনার দালালেরা-হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘স্বৈরাচারের দালালেরা-হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দেন।
প্রসঙ্গত, রোববার চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন তারা। এক পর্যায়ে দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েছেন বিক্ষোভকারী আনসারদের একাংশ। তারা সচিবালয়ে তিন নম্বর গেট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ঢুকে পড়েন।
অর্ধ শতাধিক আনসার ঢুকে পড়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গেটটি দ্রুত বন্ধ করে দেয়। আনসাররা ভেতরে ঢুকে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তারা বলছেন, হয় আমাদের চাকরি জাতীয়করণ করেন না হয় আমাদের মেরে ফেলেন।