ডারবান টেস্টে বাংলাদেশকে ২৭৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ এমন লক্ষ্য পেয়েও ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৮ রানের মধ্য ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে টাইগাররা। জয়ের জন্য সোমবার (৪ এপ্রিল) শেষ দিনে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৬৩ রান। অন্ততপক্ষে ম্যাচ বাঁচাতে হলেও টিকে থাকতে হবে পুরোদিন।
শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে বরাবরের মতোই ব্যর্থ ওপেনার সাদমান ইসলাম। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। একই পথে হেঁটেছেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়। কিছু বুঝে ওঠার আগে আউট হয়েছেন দলপতি মুমিনুল হক।
এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে রোববার (৩ এপ্রিল) মিরাজ-এবাদতদের বোলিং তোপে ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ২৭৪ রান। এর আগে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ৩৬৭ রানের জবাবে ২৯৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় দিনে অপরাজিত থাকা দুই ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়ের ব্যাটে স্বাগতিকদের লিড শতরান ছাড়িয়েছে। এরইউকে ফিরিয়ে ৪৮ রানের জুটি ভাঙেন এবাদত। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে বাংলাদেশ এলবিডব্লিউর আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। তবে রিভিউ নেয়ার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয় আম্পায়ারকে। ৮ রানে সাঝঘরে ফেরেন এরউই।
সারেল এরউই ফিরে যাওয়ার পর এলগারকে সঙ্গ দেন কিগান পিটারসেন। একপ্রান্তে থেকে থিতু হয়ে ৭৩ বলে ৬ চারে অর্ধশতক তুলে নেন এলগার। এ দুই ব্যাটারের জুটিতে প্রথম সেশনে ১০৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই উইকেটের দেখা পেলেন তাসকিন। দুইবার জিবন পাওয়া এলগারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ১০২ বলে ৬৪ রান করে বিদায় নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।
এলগারের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি কিগান পিটারসেনও। দীর্ঘ সময় ধরে উইকেট নেওয়ার চেষ্টায় থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩তম ওভারে এসে তাকে ফেরালেন। জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে ৮৫ বলে ৩৬ রানে বিদায় নেন প্রোটিয়া ব্যাটার। পরের ওভারেই টেম্বা বাভুমাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান এবাদত। ইয়াসিরের দারুণ ক্যাচে মাত্র ৪ রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাভুমা।
পঞ্চম উইকেটে ব্যাট করতে নামা রায়ান রিকেলটন যখন একপ্রান্ত সামলাতে ব্যস্ত তখন অপরপ্রান্তে থাকা দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। সাদমানের হাতে ক্যাচ তুলে ৬ রানে বিদায় নেন কাইল ভেরেইনা। এরপর দারুণ ক্যাচে বাভুমাকে ফেরানো ইয়াসিরের হাতে বল তুলে দিয়ে ১১ রানে বিদায় নেন ভিয়ান মুল্ডার। বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি ব্যাট করতে নামা কেশভ মহারাজও। তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৫ রানে বিদায় নেন তিনি।
টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট করে শিকার করেন মিরাজ ও এবাদত। জোড়া উইকেট পান ইনজুরিতে থেকেও বল করা তাসকিন আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস : ১২১ ওভারে ৩৬৭/১০ (এলগার ৬৭, এরউইয়া ৪১, পিটারসেন ১৯, রিকলটন ২১, তেম্বা ৯৩, কাইল ২৮, উইয়ান ০, কেশব ১৯, সিমন ৩৮, উইলিয়ামস ১২, অলিভার ১২; তাসকিন ২৩-৪-৬৯-০, ইবাদত ২৯-১০-৮৬-২, মিরাজ ৪০-৮-৯৪-৩, খালেদ ২৫-৩-৯২-৪, মুমিনুল ৪-০-১৭-০)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১১৫.৫ ওভারে ২৯৮/১০ (সাদমান ৯, মাহমুদুল ১৩৭, নাজমুল ৩৮, মুমিনুল ০, মুশফিক ৭, তাসকিন ০, ইয়াসির ২২, লিটন ৪১, মিরাজ ২৯, খালেদ ০, ইবাদত ০; হার্মার ৪০-১২-১০৩-৪, উইলিয়ামস ১৮.৫-৩-৫৪-৩, অলিভার ১৫-৫-৩৬-১, কেশব ৩৭-১৫-৬৫-০, এলগার ১-০-৮-০)।
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস : ৭৪ ওভারে ২০৪/১০ (এরউই ৮, এলগার ৬৪, পিটারসেন ৩৬, বাভুমা ৪, ভেরেইনা ৬, মুল্ডার ১১, রিকলটন ৩৯, কেশব ৫, সিমন ১১, উইলিয়ামস ০, অলিভার ০ ; খালেদ ১৩-১-৩৩-০, মিরাজ ৩৫-৬-৮৫-৩, শান্ত ১-০-৩-০, টাসকিন ১১-১-২৪-২, ইবাদত ১৩-১-৪০-৩)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৬ ওভারে ১১/৩ (সাদমান ০, জয় ৪, মুমিনুল ২, মুশফিক ০*, শান্ত ৫*; কেশব ৩-০-৭-২, সিমন ৩-১-৪-১)।