শ্রেণী স্বার্থের সংঘর্ষ: যুক্তি না শক্তি?

 

যা চাচ্ছে তাই পাচ্ছে। আপনি যদি আব্দার মানতেই থাকেন তবে একসময় আপনার
কিছুই থাকবে না। পৃথিবীটা দমনের সুবর্ণভূমি। এখানে শক্তিমান দুর্বলকে পিষ্ট
করে বাড়ে! চাইতেই যদি সব মেলে তবে দুনিয়া দাবি করতেও কে ছাড়ে! চাইতে
চাইতে যখন প্রতিবেশী আপনার চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করে তখন আপনি তাকে
নিশ্চয়ই থামাবেন। এই থামানোকে সে যদি শত্রুতা ভাবে আর আপনি যদি
মিত্রতার অভিনয় করেন- তবে আপনার চালচুলোর কিছুই থাকবে না। দুর্বলকে
চেপে ধরার ইতিহাস মানব ইতিহাস সমান বয়স্ক! "
ন্যায়-অন্যায়ের রশি টানাটানি: কার লুঙ্গি খুলবে?- দেখতে হলে চোখ রাখুন
রিপাবলিক টিভিতে!

যেখানে আপনার অস্তিত্ব থাকছে না সেখানে আপনি কোন মানবতা দেখাচ্ছেন?
রুখে দাঁড়ালে যদি সবার শত্রুতে পরিণত হন তবুও ন্যায্য কথা বলতে হবে।
অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শ্ক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। পৃথিবীর যে কেউ তার
দাবির পক্ষে যুক্তি দিতে পারে, অবস্থান-আন্দোলন চালাতে পারে। দাবি আদায়ের
জন্য রাস্তায় নামতে পারে। কিন্তু কেউ কাউকে ব্যক্তি আক্রমণ করে
সম্মানহানি করতে পারে না।- এটা সভ্যতার চিঠি। শ্রেনী স্বার্থের দ্বন্দ্বে যদি
নম্রতা দেখান তবে অস্তিত্বের সংকট ঘটবে। যেখানে বাঁচাই প্রশ্নসাপেক্ষ
সেখানে হাঁটুর নিচে লুঙ্গি আছে কি নাই- সেসব খোঁজাখুঁজি অবান্তর।

কেউ যখন আপনার সম্মান-শৃঙ্খল নষ্ট করে তার বিরুদ্ধে কথা বলা নৈতিক
দায়িত্ব। আপনার স্বার্থের আন্দোলনে যে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন, আপনার
বিপক্ষও সেটার পাল্টা যুক্তি দেবে। দেন-দরবার হবে। যেটা বেশি যৌক্তিক সেটা
টিকে যাবে। পক্ষ-বিপক্ষ আবার ভাই ভাই হয়ে বাঁচবে। কিন্তু এই লড়াইয়ে যুক্তি
ও ন্যায্যতার বদলে শক্তি দেখানো, কূটকৌশলের আশ্রয় নেওয়া কিংবা কাউকে

অহেতুক হয়রানি করা সভ্যতার প্রমাণক নয়। শ্রেণী স্বার্থের লড়াইয়ে কারো
ব্যক্তিচরিত্র হরণ করা, অন্যায়কে বরণ করা- এসব বর্বরতার আলামত।

লড়াইয়ে শেষমেশ কী জিতবে আর কে ফিরবে- সেসব সময় বলে দেবে। তবে এমন
কোন মন্তব্য, এমন কোন আচরণ কিংবা এমন কোন উগ্রতা কোন পক্ষ থেকেই
কাম্য নয় যাতে শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। চেয়ার-চাকরি সম্মান দিতে
পারে না যদি স্রষ্টা কাউকে সম্মানিত না করেন। কত মানুষের কত কত সম্পদ
থাকা সত্ত্বেও কিছুই ভোগ করতে পারেনি, কত মানুষের কত কত ক্ষমতা থাকার
পরেও লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছেন- সেসব দৃষ্টান্ত তো আমাদের চোখের সামনে
জাজ্বল্যমান। সুতরাং কারো থেকেই সীমালঙ্ঘন আকাঙ্ক্ষিত নয়। ভাই-ভাইয়ে
শত্রুতা তো নয়ই।

জোর করে আঁকড়ে রাখা কিংবা জবরদস্তি তরে দখল করা- পরিত্যাজ্য হওয়া
উচিত। যাতে সামগ্রিক কল্যাণ, যেখানে সবার স্বার্থ রক্ষা পায় এবং যা করলে
দেশ লাভবান হয়- মানুষের স্বার্থে সেটা অগ্রাধিকারের ভিত্তি হওয়া উচিত।
শালীন বাকযুদ্ধ, যৌক্তিক তর্ক-বিতর্কের লড়াই এবং নিজ নিজ পক্ষে
অবস্থান- এটা নীতিবাদের দায়িত্ব। তার মানে এই নয় যে, কেউ প্রতিপক্ষকে
ঘায়েল করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেবে, অশালীন আক্রমণ করবে কিংবা দেখে
নেওয়ার হুমকি দেবে! যিনি দেখে নিতে পারেন তিনিই মানুষকে সম্মানিত করেন
এবং ক্ষমতা থেকে দূরে তথা অভিসম্পাতের দরিয়ায় নিক্ষেপ করে। মানুষ অল্প
ক'দিনের দায়িত্ব পেয়েছে। এই দায়িত্ব পালনকালে সে যাতে সীমালঙ্ঘন না করে।
সীমালঙ্ঘনের শাস্তি ভয়ঙ্কর।

দায়িত্ব-ক্ষমতা, চাকুরি-দক্ষতা বান্দার কাছে মালিকের আমানত। কেউ যদি
সেটার খেয়ানত করে তবে দুনিয়াতে সেসবের সামান্য শাস্তি মিলবে। বাকি
কৈফিয়ত, সাক্ষী-সাজা হাশরের মাঠে ন্যায় বিচারক ফয়সালা করবেন। একপাশে

লেলিহান আগুন, অন্যপাশে শান্তির বাগান- কারো না কারো অপেক্ষায় থাকবে।
সুতরাং মানুষ যাতে তার আগমনের উদ্দেশ্য এবং প্রস্থানের পরিণতি বিস্মৃত না
হয়। কারো সিকি শতাংশ অধিকার হরণ করলেও সেটার শাস্তি বরণ করতে হবে।
প্রজ্ঞা-মেধা দিয়ে শিক্ষিত করে, ক্ষমতা-দায়িত্ব দিয়ে মানুষকে পরীক্ষায়
অবতীর্ণ করা হয়েছে। সম্পদের লোভে না ডুবে, ক্ষমতার মোহে অন্ধ না হয়ে
কিংবা সম্পদ-সম্মানের দম্ভে ধ্বংস না হয়ে মানুষ যাতে দুনিয়ার পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ হয়ে যায়- ফেরেশতাগণ খুব করে আশা করছে। কিন্তু শয়তান আরও
খারাপ কাজের দিকে প্ররোচিত করছে। আমরা যাতে স্বার্থান্ধ হয়ে দুনিয়ার
ধোঁকায় না পড়ি। ভবিষ্যত ভেবে কথা বলা এবং কাজ করা মানুষের দায়িত্ব।

যা চাচ্ছে তাই পাচ্ছে। আপনি যদি আব্দার মানতেই থাকেন তবে একসময় আপনার
কিছুই থাকবে না। পৃথিবীটা দমনের সুবর্ণভূমি। এখানে শক্তিমান দুর্বলকে পিষ্ট
করে বাড়ে! চাইতেই যদি সব মেলে তবে দুনিয়া দাবি করতেও কে ছাড়ে! চাইতে
চাইতে যখন প্রতিবেশী আপনার চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করে তখন আপনি তাকে
নিশ্চয়ই থামাবেন। এই থামানোকে সে যদি শত্রুতা ভাবে আর আপনি যদি
মিত্রতার অভিনয় করেন- তবে আপনার চালচুলোর কিছুই থাকবে না। দুর্বলকে
চেপে ধরার ইতিহাস মানব ইতিহাস সমান বয়স্ক! "
ন্যায়-অন্যায়ের রশি টানাটানি: কার লুঙ্গি খুলবে?- দেখতে হলে চোখ রাখুন
রিপাবলিক টিভিতে!

যেখানে আপনার অস্তিত্ব থাকছে না সেখানে আপনি কোন মানবতা দেখাচ্ছেন?
রুখে দাঁড়ালে যদি সবার শত্রুতে পরিণত হন তবুও ন্যায্য কথা বলতে হবে।
অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শ্ক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। পৃথিবীর যে কেউ তার
দাবির পক্ষে যুক্তি দিতে পারে, অবস্থান-আন্দোলন চালাতে পারে। দাবি আদায়ের
জন্য রাস্তায় নামতে পারে। কিন্তু কেউ কাউকে ব্যক্তি আক্রমণ করে
সম্মানহানি করতে পারে না।- এটা সভ্যতার চিঠি। শ্রেনী স্বার্থের দ্বন্দ্বে যদি

নম্রতা দেখান তবে অস্তিত্বের সংকট ঘটবে। যেখানে বাঁচাই প্রশ্নসাপেক্ষ
সেখানে হাঁটুর নিচে লুঙ্গি আছে কি নাই- সেসব খোঁজাখুঁজি অবান্তর।

কেউ যখন আপনার সম্মান-শৃঙ্খল নষ্ট করে তার বিরুদ্ধে কথা বলা নৈতিক
দায়িত্ব। আপনার স্বার্থের আন্দোলনে যে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন, আপনার
বিপক্ষও সেটার পাল্টা যুক্তি দেবে। দেন-দরবার হবে। যেটা বেশি যৌক্তিক সেটা
টিকে যাবে। পক্ষ-বিপক্ষ আবার ভাই ভাই হয়ে বাঁচবে। কিন্তু এই লড়াইয়ে যুক্তি
ও ন্যায্যতার বদলে শক্তি দেখানো, কূটকৌশলের আশ্রয় নেওয়া কিংবা কাউকে
অহেতুক হয়রানি করা সভ্যতার প্রমাণক নয়। শ্রেণী স্বার্থের লড়াইয়ে কারো
ব্যক্তিচরিত্র হরণ করা, অন্যায়কে বরণ করা- এসব বর্বরতার আলামত।

লড়াইয়ে শেষমেশ কী জিতবে আর কে ফিরবে- সেসব সময় বলে দেবে। তবে এমন
কোন মন্তব্য, এমন কোন আচরণ কিংবা এমন কোন উগ্রতা কোন পক্ষ থেকেই
কাম্য নয় যাতে শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। চেয়ার-চাকরি সম্মান দিতে
পারে না যদি স্রষ্টা কাউকে সম্মানিত না করেন। কত মানুষের কত কত সম্পদ
থাকা সত্ত্বেও কিছুই ভোগ করতে পারেনি, কত মানুষের কত কত ক্ষমতা থাকার
পরেও লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছেন- সেসব দৃষ্টান্ত তো আমাদের চোখের সামনে
জাজ্বল্যমান। সুতরাং কারো থেকেই সীমালঙ্ঘন আকাঙ্ক্ষিত নয়। ভাই-ভাইয়ে
শত্রুতা তো নয়ই।

জোর করে আঁকড়ে রাখা কিংবা জবরদস্তি তরে দখল করা- পরিত্যাজ্য হওয়া
উচিত। যাতে সামগ্রিক কল্যাণ, যেখানে সবার স্বার্থ রক্ষা পায় এবং যা করলে
দেশ লাভবান হয়- মানুষের স্বার্থে সেটা অগ্রাধিকারের ভিত্তি হওয়া উচিত।
শালীন বাকযুদ্ধ, যৌক্তিক তর্ক-বিতর্কের লড়াই এবং নিজ নিজ পক্ষে
অবস্থান- এটা নীতিবাদের দায়িত্ব। তার মানে এই নয় যে, কেউ প্রতিপক্ষকে
ঘায়েল করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেবে, অশালীন আক্রমণ করবে কিংবা দেখে

নেওয়ার হুমকি দেবে! যিনি দেখে নিতে পারেন তিনিই মানুষকে সম্মানিত করেন
এবং ক্ষমতা থেকে দূরে তথা অভিসম্পাতের দরিয়ায় নিক্ষেপ করে। মানুষ অল্প
ক'দিনের দায়িত্ব পেয়েছে। এই দায়িত্ব পালনকালে সে যাতে সীমালঙ্ঘন না করে।
সীমালঙ্ঘনের শাস্তি ভয়ঙ্কর।

দায়িত্ব-ক্ষমতা, চাকুরি-দক্ষতা বান্দার কাছে মালিকের আমানত। কেউ যদি
সেটার খেয়ানত করে তবে দুনিয়াতে সেসবের সামান্য শাস্তি মিলবে। বাকি
কৈফিয়ত, সাক্ষী-সাজা হাশরের মাঠে ন্যায় বিচারক ফয়সালা করবেন। একপাশে
লেলিহান আগুন, অন্যপাশে শান্তির বাগান- কারো না কারো অপেক্ষায় থাকবে।
সুতরাং মানুষ যাতে তার আগমনের উদ্দেশ্য এবং প্রস্থানের পরিণতি বিস্মৃত না
হয়। কারো সিকি শতাংশ অধিকার হরণ করলেও সেটার শাস্তি বরণ করতে হবে।

প্রজ্ঞা-মেধা দিয়ে শিক্ষিত করে, ক্ষমতা-দায়িত্ব দিয়ে মানুষকে পরীক্ষায়
অবতীর্ণ করা হয়েছে। সম্পদের লোভে না ডুবে, ক্ষমতার মোহে অন্ধ না হয়ে
কিংবা সম্পদ-সম্মানের দম্ভে ধ্বংস না হয়ে মানুষ যাতে দুনিয়ার পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ হয়ে যায়- ফেরেশতাগণ খুব করে আশা করছে। কিন্তু শয়তান আরও
খারাপ কাজের দিকে প্ররোচিত করছে। আমরা যাতে স্বার্থান্ধ হয়ে দুনিয়ার
ধোঁকায় না পড়ি। ভবিষ্যত ভেবে কথা বলা এবং কাজ করা মানুষের দায়িত্ব।

রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
raju69alive@gmail.com

Exit mobile version