সাবেক ডিএমপি কমিশনারের দোকান ভেঙে দিলেন জমির মালিকরা

ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বাসিন্দা সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধভাবে দখলে থাকা ১৫ শতাংশ জমির উপর নির্মিত দুটি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন জমির মালিক।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের টিটিসি মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় বেকু দিয়ে ওই দোকানগুলো ভেঙে দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কামারগ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার ১৯৯৭ সালে কেনা চান্দড়া মৌজার ১৫ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। এই জমির পাশেই সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী আফরোজা জামানের নামেও জমি রয়েছে। সেই সুযোগে পাশের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার জমি নানাভাবে দখলের চেষ্টা করেন আছাদুজ্জামান। পরবর্তীতে আদালতে মামলা হলে সেই মামলায় রায় আসে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার পক্ষে। কিন্তু আছাদুজ্জামান মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০১৭ সালে পুলিশ দিয়ে নানাভাবে হয়রানির মাধ্যমে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার কেনা ওই জমি অবৈধভাবে দখল নিয়ে দোকান নির্মাণ করেন।

 

জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার ছোট ছেলে এস এম রেজওয়ানুর রহমান বলেন, এই ১৫ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে আমার বাবা ১৯৯৭ সাল থেকে ভোগ দখল করে আসছিলেন। আমাদের জমিটি আছাদুজ্জামান মিয়া দখলে নিতে নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেন। একপর্যায়ে আদালতে মামলা হলে ২০১০ সালে আমাদের পক্ষে রায় আসে। তখনও জমিটি আমাদের দখলে ছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের নামে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি করে অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলে নিয়ে দুটি দোকান নির্মাণ করেন। আজ (শুক্রবার) আমরা আমাদের জমিতে থাকা অবৈধ দোকান ভেঙে দিয়ে আমাদের জায়গা দখলমুক্ত করেছি।

গোপালপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. টিটন জনান, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে তিনি এলাকায় কম আসতেন। তার হয়ে সবকিছু দেখতেন তার ভাগনে মো. ইব্রাহিম। কমিশনার থাকাকালীন আছাদুজ্জামান মিয়া তার স্ত্রী, শালিকা, শালা, ভাগিনা, ভাগিনার স্ত্রীসহ আত্মীয়দের নামে জমি কিনেছেন। এ ছাড়াও এলাকার অনেকের কাছ থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোর করে জমি লিখে নিয়েছেন। যদি কিউ জমি দিতে না চাইতো তাহলে তাকে থানায় মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগনে মো. ইব্রাহিম শেখ বলেন, চারটি দাগের ওখানে আমাদের ও রাজ্জাক মিয়াদের জমি রয়েছে। আমরা আমাদের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করেছি। দলিলে তাদের যে জায়গা রয়েছে তা ফাঁকা রয়েছে। তারপরও দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগে আমাদের নির্মাণ করা ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট দুটি দোকান যা গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল, তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

আছাদুজ্জামান মিয়ার পক্ষের লোকজন কেন বাধা দেয়নি-জানতে চাইলে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা বাধা দিতে গেলে মার্ডার হয়ে যেতো, এজন্য বাধা দেইনি’।

Exit mobile version