গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নেত্রকোনার পূর্বধলা ও গৌরীপুর উপজেলার মধ্যবর্তী শ্যামগঞ্জ কলেজ গেট এলাকায় সোয়াই নদীর অসমাপ্ত খননকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা হাইওয়েতে কয়েক ঘণ্টা ধরে এই কর্মসূচি চলে, যাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সৈয়দ এস. এম. ঋজু অভিযোগ করেন, গত বছর সোয়াই নদীর ৪৬ কিলোমিটার খননকাজ শুরু হলেও মাঝপথে এসে এক কিলোমিটার অংশের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য নিলুফার আঞ্জুম পপি, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক এবং নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে খননকাজ বন্ধ রেখেছেন। তারা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, ওই অংশে নদী নেই, অথচ এটি সম্পূর্ণ প্রবাহমান নদী।
অবস্থানকারী ইয়াসিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে তালবাহানা করছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বদলি হয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও আমরা তা হতে দেব না। নদী খনন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
অন্যদিকে, আন্দোলনকারী অর্ক দত্ত বলেন, “আজ আমরা মহাসড়ক অবরোধ করেছি, কিন্তু যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তাহলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনেও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। কোনভাবেই এই দুর্নীতি মেনে নেওয়া হবে না।”
এ বিষয়ে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান বলেন, “কাজের বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে ঢাকার হেড অফিসে পাঠিয়েছি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে।”
দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সড়ক অবরোধ চলার পর পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা কোবির আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং যানচলাচল পুনরায় শুরু হয়।
সোয়াই নদীর অসমাপ্ত খননকাজ দ্রুত সম্পন্ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সুপক রঞ্জন উকিল