বাংলাদেশের সব থেকে সম্ভাবনাময় খাত পর্যটন শিল্প। সব থেকে অবহেলিত খাতও পর্যটন শিল্প। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পর্যটন খাতের উন্নয়ন করতে পারলে বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০ ভাগ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারে। আজ ৪ জানুয়ারি সকালে ঢাকার রাজমনি ঈশা খাঁ হোটেলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে “স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব বাড়াতে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনের চেয়ারম্যান লায়ন আনোয়ারা বেগম পলির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলী সদস্য আহসান উল্লাহ মনি। উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা কনা রেজা। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার, চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিএ তায়েব, বাংলাদেশ টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি (ট্র্যাব) এর সভাপতি সাংবাদিক সালাম মাহমুদ, গ্লোবাল বিজনেস ফরমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেদুয়ান খন্দকার, নন্দন পার্কের পরিচালক খন্দকার ইসমাইল হোসেন, বাসাসাস এর সভাপতি সাংবাদিক রাজু আলিম, চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের অতিথি বাপ্পি সরদার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পর্যটন খাতে মাস্টার প্ল্যান জরুরী। আন্তর্জাতিক বাজারে পর্যটন খাতকে তুলে ধরতে পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও হোটেল—মোটেলের সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রমণ করতে গিয়ে শতকরা ৮৭ জন হয়রানির শিকার হোন। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে বিদেশি গাছ রোপণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। এগুলো অচিরেই বন্ধ করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না এবং দেশীয় প্রজাতি গাছের চারা রোপণে বাধ্যবাধকতা রাখতে হবে। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য টুরিস্ট পুলিশের আধুনিকায়ন, অর্থ বরাদ্দ ও লোকবল বৃদ্ধি করতে হবে। জাতীয় পর্যটন দিবস ঘোষণা, পর্যটন খাতকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি এবং পাঠ্যপুস্তকের সর্বস্তরে পর্যটন শিল্পের প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণ করতে দূতাবাসগুলোতে আলাদা ডিপার্টমেন্ট চালু এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের নীতিমালা শিথিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে বাংলাদেশে কতগুলো পর্যটন স্পট আছে এবং আগামীতে নতুন স্পট আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গবেষণা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে দেশি—বিদেশি পর্যটকদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো আধুনিকায়ন, উন্নত যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থা এবং পর্যটকদের জন্য আবাসন ও রুচিসম্পন্ন সম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, পর্যটন কর্পোরেশন, পর্যটন মন্ত্রণালয় ও যুব মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ‘স্বাধীন টুরিস্ট বোর্ড’ চালু করতে হবে। পর্যটকদের সঠিক পরামর্শ ও গাইড করার জন্য প্রশিক্ষিত গাইডার তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা এবং হয়রানি বন্ধে বিধিনিষেধ জারি করতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা আরো বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ পরিবেশ তুলে ধরার মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরা সম্ভব। প্রাকৃতিক পরিবেশ সমুন্নত রাখতে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কেও সকলেই মতামত তুলে ধরেন।
পর্যটন খাত ও চলচ্চিত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখায় বেশ কিছু গুণীজনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
বার্তাপ্রেরক,