জন্ম জার্মানির বেইলি ফিল্ড ডায়ালন্ড্রোভ এলাকায়। জানেন না বাংলা ভাষা। ইংরেজিও ততোটা নয়। তবে বাঙালি তরুণের প্রেমের পরিণয়ে ঘর বেঁধে ছুটে এসেছেন বরিশালের চরবাড়িয়ায় শ্বশুরবাড়িতে। তিনি আলিসা থেওডোরা পিত্তা। পেশায় একজন নার্স। ভালোবাসার টানে শুধু দেশ ছেড়ে উড়াল দিয়ে বরিশালে আসেননি, গ্রহণ করেছেন ইসলাম ধর্ম। এখন তার নাম আলিসা বেগম।
যদিও তাদের প্রেম-প্রণয়ের গল্পটি ২০২০ সালের। কিন্তু বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি দেখতে আসায় আলোচনার রসদ জুগিয়েছে। আলিসা বেগমের স্বামী বরিশাল শহরের উপকণ্ঠ চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি উলালবাটনা গ্রামের শহীদুল ইসলাম ওরফে ইতালি শহীদের একমাত্র ছেলে রাকিব হোসেন শুভ।
শহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী ৯ মার্চ গায়ে হলুদ এবং ১১ মার্চ শুভর বউ-ভাতের আয়োজন করা হয়েছে। মূলত করোনার কারণে শুভ এবং আলিসা দেশে আসতে পারেনি। এজন্য বিয়ের আয়োজনে এলাকাবাসীকেও দাওয়াত দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন বিধি নিষেধ না থাকায় এবং শুভ-আলিসা দেশে আসায় এই আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দাওয়াতের কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার (০৪ মার্চ) বিকেলে নববধূকে নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে শুভ। শনিবার সকালে হেলিকপ্টারযোগে বরিশালে আসে। বিদেশি বধূ নিয়ে আসার খবর পেয়ে হাজারেরও বেশি লোক দেখেতে এসেছে। এখনো প্রতিদিন অনেক মানুষ দেখতে আসছে।
জানা গেছে, রাকিব হাসান শুভ রেলওয়ে ডিপ্লোমা পাস করে ২০১১ সালে জার্মানিতে পাড়ি জমান। সেখানে সিটি রেলওয়ে সার্ভিসের সুপারভাইজারের কাজ নেন। একপর্যায়ে স্থানীয় বেইলি ফিল্ড ডায়ালন্ড্রোভ এলাকার বাসিন্দা আলিসা থেওডোরা পিত্তার সঙ্গে পরিচয় হয়।
শুভ বলেন, ২০২১ সালের ৫ মার্চ আলিসা ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে। তারপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের পরে করোনার কারণে দেশে আসতে পারিনি। এবারই প্রথম বাড়িতে এলো আলিসা। তার সঙ্গে তার বান্ধবী লেইসা এসেছে।
সর্ম্পকের শুরুর গল্পটি ভিন্ন রকম ছিল উল্লেখ করে শুভ বলেন, জার্মানিতে একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় প্রায়ই আলিসার সঙ্গে দেখা এবং কথা হতো। একসময়ে তার প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব বাদ দিয়ে এক দিন প্রস্তাব দেই ওকে। আলিসা আমাকে ফিরিয়ে দেয়নি। সেও প্রস্তাব মেনে নেয়। শেষে উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে শিগগিরই তারা জার্মানিতে ফিরে যাবেন বলে জানান শুভ।