বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলমান অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এতে জুলাই মাসে হঠাৎ কমে যায় রেমিট্যান্স। তবে দেশের পট পরিবর্তনের পর পরই চাঙ্গা হয়ে উঠে প্রবাসী আয়ের গতিপথ। এরপর টানা ছয় মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি করে আসে রেমিট্যান্স।
তারই ধারাবাহিকতা রয়েছে চলতি মাস ফেব্রুয়ারিতেও। মাসটির প্রথম ১৫ দিনে ১৩১ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশিয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৯ কোটি টাকা।
এর আগে নতুন বছরের প্রথম মাসের (জানুয়ারি) পুরো সময়ে ২১৯ কোটি (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর অর্থবছরের হিসাবে গত আগস্ট থেকে টানা ৬ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনে ১৩১ কোটি ২২ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
তবে আলোচিত সময়ে কোন রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ১১টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশিখাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
এর আগে ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার বেশি। একক মাস হিসাবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।