।। এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।।
০১. ব্রিটিশ বিরোধী ভারতীয় আজাদী আন্দোলনের অন্যতম ঘটনা ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবসের ১০৩ বছর। মূলত জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের ঘটনা থেকে সূত্রপাত হয় ভারতবর্ষে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের চুড়ান্ত লড়াইয়ের। জালিয়ানওয়ালাবাগের পথ ধরে ব্রিটিশ বেনিয়াদের নৃশংসতার আরেক রক্তাক্ত অধ্যায় রচিত হয় বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গায়।
১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি বিবব্র্র্রটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরুণ নেতা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে তৎকালীন পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার সলঙ্গা হাটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সূচনা ঘটে। ঐ দিন প্রায় ১২০০ প্রতিবাদী মানুষ ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর গুলিতে দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঠিলে দিয়ে শাহাদাতের পেয়ালা পান করেন। আহত হয় প্রায় ৪৫০০-এরও বেশি। নিহতদের লাশের সাথে সংজ্ঞাহীন আহতদের উঠিয়ে নিয়ে সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে গণকবর দেয় বর্বর ব্রিটিশ পুলিশ ।
০২. অসহযোগ আন্দোলনের সাফল্য ও লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পর্যুদস্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে ভীত করে তুলে সেই সময়। এমন একটি বাস্তবতায় সংঘটিত হয় সলঙ্গা বিদ্রোহ। ১৯২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯২২ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত চলা এই আন্দোলনের সময়কে ‘গান্ধী যুগ’’ বলে অভিহিত করা হয় ইতহাসে। অসহযোগ আন্দোলনের জোয়ার থেকে বাদ যায় না তৎকালিন বাংলার প্রত্যন্ত সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা। সলঙ্গার গণহত্যার তিন দিন আগে, সেখান থেকে কয়েক মাইল উত্তরে চান্দাইকোনা হাটে অসহযোগ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের বন্দুক কেড়ে নিয়ে পাশের ফুলঝোর নদীতে ফেলে দেয়। সলঙ্গা বিদ্রোহের সপ্তাহ খানেক পর ১৯২২ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি উত্তর ভারতের গোরক্ষপুর জেলায় চৌরিচৌরার ‘অসহযোগ’ আন্দোলনকারী জনতা একটি থানায় আগুন ধরিয়ে দিলে পুলিশ গুলি চালায়। সেখানে ২৩ জন পুলিশ ও তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হয়। ‘অহিংস ও অসহযোগ’ চরিত্র থেকে আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করে। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী আন্দোলনের তেজ দেখে ভীত হয়ে পড়েন। তিনি ভারতীয় জনগণকে সংগ্রাম বন্ধ করার অনুরোধ জানান। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য গান্ধী তিন দিন অনশন পালন করেন। চৌরিচৌরায় সহিংস ঘটনার ৮ দিন পর ১২ ফেব্রুয়ারি গান্ধী আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। হিন্দু-মুসলমানের মিলন বিরোধে রূপ নেয়। আন্দোলন এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছিল, সেটা অব্যাহত রাখলে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মেরুদন্ড তখনই ভেঙে দেওয়া সম্ভব ছিল, সাতচল্লিশে সমঝোতায় ইংরেজ বিদায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত না। তার আগেই ব্রিটিশকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করার চমৎকার হাতে আসা সুযোগ পায়ে ঠেলা হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনে জনতা উদ্বেলিত হয়ে বিলেতি পণ্য বর্জন করে স্বদেশি পণ্য ব্যবহারের সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। সে সময় সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সপ্তাহে ২ দিন হাট বসত। সিরাজগঞ্জের গাড়াদহ নদীর তীরেই বসত সলঙ্গার হাট। সিরাজগঞ্জ তো বটেই, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, টাঙ্গাইল ও বগুড়া থেকে নানা পণ্যবাহী মহাজনী নৌকা এসে ভিড়ত সলঙ্গার হাটে। এত নৌকা আসত যে, নদীর ঘাট প্রায় দেড় মাইল লম্বা হয়ে যেত। ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার ছিল সলঙ্গার বড় হাটের দিন। মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা বিলেতি পন্য অর্থাৎ ব্রিটিশ পণ্য বেচা-কেনা বন্ধ করতে হাটে নামে। আর এই স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীদের রুখতেই ছুটে আসেন পাবনা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আর. এন. দাস, জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক এস. কে সিনহাসহ ৪০জন সশস্ত্র লাল পাগড়ীওয়ালা পুলিশ। সলঙ্গার গরু হাটায় ছিল বিপ্লবী স্বদেশী কর্মীদের অফিস। পুলিশ কংগ্রেস অফিস ঘেরাও পূর্বক গ্রেফতার করে মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত করতে সেদিন ব্রিটিশ বিরোধী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সলঙ্গার প্রায় ৪০ হাজার সংগ্রামী জনতা। জনতার মধ্যে থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও মহুকুমা অফিসারকে ঘিরে জনতা তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে উদ্ধারের জন্য মিছিল শুরু করে। উত্তেজিত জনতা হলঙ্গা, ফালা, লাঠি, সড়কি, বল্লম নিয়ে চারদিক থেকে এগিয়ে আসে। জনতার ঢল ও আক্রোশ দেখে ম্যাজিষ্ট্রেট জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে গুলি চালাতে নির্দেশ দেয়। শুরু করে বুলেট-বৃষ্টি। ৪০টি রাইফেলের মধ্যে মাত্র একটি রাইফেল থেকে কোনো গুলি বের হয় নাই। যেই রাইফেলটি ছিল একজন বাঙ্গালী পুলিশের। এই পৈশাচিক হত্যাকান্ডে হতাহতের সরকারি সংখ্যা ৪৫০০ দেখানো হলেও বেসরকারি মতে ১২০০০-এরও অধিক হবে বলে জানা যায়। সলঙ্গা হাটের হত্যাকান্ডের ঘটনা জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের চেয়ে বহুগুণ ভযঙ্কর ও নৃশংস। অথচ, দুঃখজনক সত্য হলো ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের তথা শতাব্দির গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনা অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে চাপা দেয়া হয়েছে। বস্তুতপক্ষে ভারতীয় উপমহাদেশে ১৯২২ সালের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে সলঙ্গা হত্যাকান্ডের ঘটনা যেমন সবচেয়ে নৃশংস পাশবিক, তেমনি নিহতের সংখ্যা সর্বাধিক।
এই ভয়াবহ হত্যাকান্ডের খবর রাতারাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরদিনই কলকাতা, ঢাকা ও বাংলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কংগ্রেস ও খেলাফত কমিটির নেতা, কর্মীবাহিনী, ডাক্তার, ছাত্র, স্বেচ্ছাসেবক সলঙ্গা বাজারের দিকে দলে দলে আসতে থাকে। নায়ক, আনন্দবাজার, অমৃতবাজার প্রভৃতি দৈনিক এই হত্যাকান্ডের উল্লেখ করে সরকারি ও বেসরকারি তদন্তেরর দাবি উত্থাপন করে। অসহযোগ ও খেলাফতের যুগ্ম আন্দোলন প্রত্যাহার হওয়ার পর হিন্দু মুসলিম-দুই সম্প্রদায় পুনরায় ফিরে যায় বিভেদের পথে। তরুণ আবদুর রশিদ তৎকালীন ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র দেওবন্দের পথে পা বাড়ান।
০৩. মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ সেদিন সলঙ্গা বিদ্রোহের নিতৃত্ব দিয়ে উপনেবেশিক শাসনের ভিত নাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়ে ছিলেন। সলঙ্গার রক্তসিক্ত বিদ্রোহ শুধু বাংলার মাটিকে সিক্ত করেনি, সিক্ত করেছে সমগ্র উপমহাদেশ। যে রক্তে ভেজা পিচ্ছিল পথে অহিংস, অসহযোগ আন্দোলনে যা কিছু অর্জিত হয়েছে তা সলঙ্গা বিদ্রোহেরই ফসল।
শত বছর পর একথা অনেকের কাছে নতুন ও বিস্ময়কর মনে হতেই পারে। এটা স্বাভাবিক কারণ সেদিন পাবনা জেলার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা) সলঙ্গার হাটের যে গণ বিদ্রোহ ও গণহত্যাকান্ড ঘটেছিল তা নিয়ে খুব বেশি লেখালেখি হয়নি। এখনও খুব একটা হয়ও না। কালক্রমে এই উপমহাদেশের আজাদী ও স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে মধ্যে বাঙ্গালী মুসলমানদের মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। যেন ইতিহাস খুজলে মনে হয় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙ্গালি মুসলমানদের অবদান নাই বললেই চলে। ফলে মুসলমানদের বীরোচিত কাহিনী এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দুঃখজনক শুধু নয় বিস্ময়করও বটে যে এ ঘটনাটি ইতিহাসের কাদায় চাঁপা পড়ে গেছে।
তবে, এটি দিবালোকের মত সত্য যে, মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ সেদিন সলঙ্গা বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিক শাসনের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলেন। সলঙ্গার রক্তসিক্ত বিদ্রোহ শুধু বাংলার মাটিকে সিক্ত করেনি, সিক্ত করেছে সমগ্র উপমহাদেশ।
২৭ জানুয়ারি ব্রিটিশবিরোধী আজাদি লড়াইয়ে সলঙ্গা আন্দোলন ভারতীয় উপমহাদেশে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত থাকবে ইতিহাসে। যাদের শাহাদাতের রক্তপিচ্ছিল পথ মাড়িয়ে ভারতবর্ষ থেকে এক সময় শোষণের হাত গুটাতে বাধ্য হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা এবং এই পথ ধরেই কিছুকাল পরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন একটি ভূখন্ড স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। পেয়েছি একটি মানচিত্র আর লাল সবুজের পতাকা। ইতিহাসের ধারাবাহিতার জন্যই আমাদের মনে রাখতে হবে ‘সলঙ্গা বিদ্রোহ’ একটি চাপা পড়া ইতিহাস। এই ইতিহাস তুলে আনতে হবে আমাদের স্বার্থেই।
০৪. সলঙ্গা বিদ্রোহের নেপথ্য নায়ক ছিলেন মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ। তর্কবাগীশ ও সলঙ্গা বিদ্রোহ অবিচ্ছেদ্য। তিনি ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সিংহপুরুষ। তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে বাঙালি ছাত্রদের অধিকার আদায়ে গঠন করেন ‘আজাদী সমিতি’। লাহোরের বিখ্যাত এশায়েতুল ইসলাম কলেজে অধ্যয়নকালে ‘তর্কবাগীশ’ উপাধিতে ভূষিত হন। পরবর্তী সময়ে দরিদ্র কৃষক সমাজের কল্যাণে গঠন করেন ‘নিখিল বঙ্গ রায়ত খাতক সমিতি’। সমিতির সেক্রেটারি হন তিনি নিজে এবং সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। এ সমিতির আন্দোলনেই গঠিত হয় ঐতিহাসিক ‘ঋণ সালিশি বোর্ড’। এরপর তিনি যোগ দেন মুসলিম লীগে। অবিভক্ত বাংলায় ১৯৪৬ সালে এমএলএ নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলন চলাকালীন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সংগ্রামরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলি করলে এর প্রতিবাদে পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদে তিনি একাই ঝলসে ওঠেন। তিনি সেখানে বলেন, ‘ছয়জন ছাত্র মৃত্যু শয্যায়, তখন আমরা পাখার নিচে বসে হাওয়া খাব-এ আমি বরদাশ্ত করতে পারি না। আমি জালেমের এই জুলুমের প্রতিবাদে এ পরিষদগৃহ ত্যাগ করছি।’ পরবর্তী সময়ে তিনি গ্রেফতার হয়ে ১৮ মাস কারাবন্দি থাকেন। আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৭০ সালে তিনি এমএনএ নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে জাতীয় পরিষদের প্রথম সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তৎকালিন আওয়ামী সরকার বহুদলীয় গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক ঠুকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা অর্থাৎ ‘বাকশাল’ গঠনের তব্রি বিরোধিতা করেন। ১৯৭৬ সালে ‘গণ আজাদী লীগ’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
তর্কবাগীশ জন্মেছিলেন ১৯০০ সালের ২৭ নভেম্বরে সলঙ্গারই এক অজপাড়া গ্রাম তারুটিয়াতে। সম্ভ্রান্ত এক পীর পরিবারে জন্ম নেওয়া এ মানুষটির পুরো জীবনটাই ছিল সংগ্রাম মুখর। ১৯১৪ সালে তিনি শেরপুর ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি গরিব কৃষক ও দুধ বিক্রেতাদের সংগঠিত করেন। তাদের নিয়ে স্থানীয় জমিদারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জমিদারদের দুধ সরবরাহ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানানোর মধ্য দিয়ে তার সংগ্রামী জীবনের উদ্বোধন হয়। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হয়েও এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থী থাকাবস্থায় যোগ দেন ১৯১৯ সালের ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে। নিজের নেতৃত্বে এলাকার ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে চালিয়ে যেতে থাকেন ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের আন্দোলন। সেই থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। এসব আন্দোলন-সংগ্রামের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছিল ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি সলঙ্গার মাটিতে।
০৫. রক্তাক্ত ‘সলঙ্গা বিদ্রোহের’ শত বছর পরেও শুধু স্তানের অভাব নয়, সরকারের ইচ্ছার অভাবেই শহীদদের স্মরণে নির্মাণ হয় নাই একটি স্মৃতিস্তম্ভ। ঐতিহাসিক হাটের অনেক জায়গা দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। আবার অনেকে হাটের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে বিক্রি করছেন। অথচ শতবছর পার হলেও সলঙ্গার শহীদদের স্বরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয় নাই। রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় ‘সলঙ্গা দিবস’কে পালন করার উচিত আজকের ও আগামীর প্রজন্মের স্বার্থেই।
২৭ জানুয়ারি সেই রক্তে আগুন জ্বালানো দিন। আমরা গর্বিত আমরা ‘সলঙ্গা বিদ্রোহের’ মহানায়ক মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশের উত্তরসূরি, আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর উত্তরসূরী, আমরা শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের উল্টসুরী, আমরা নবাব স্যার সলিমুল্লাহর উত্তরসুরী এ কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। অতি আবেগের কারণে যেন আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের ভুলে না যাই। ইতিহাস মুছে না ফেলি এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। ঐতিহাসিক সলঙ্গা দিবসের এই দিনে ‘সলঙ্গা বিদ্রোহের’ মহানায়ক মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশের অমর স্মৃতির প্রতি গভীরতম শ্রদ্ধা জানাই।
[ লেখক : রাজনীতিক, কলাম লেখক, মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন ]
E-mail : gmbhuiyan@gmail.com