অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও ঐতিহাসিক করতে চায় সরকার। আমরা এটিকে একটি উদাহরণমূলক ও ঐতিহাসিক নির্বাচন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
রোববার (১২ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ একথা বলেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে পণ্যের একটি আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং দেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য নরওয়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকাকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নরওয়েজিয়ান পণ্য এশিয়ায় বিতরণের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করুন, যাতে নরওয়ে থেকে লোক আনার প্রয়োজন না হয় এবং আমাদের যুবসমাজকে কাজে লাগানো যায়।
অধ্যাপক ইউনুস উদাহরণ হিসেবে গ্রামীণফোনের কথা উল্লেখ করে বলেন, নরওয়ের টেলিকম জায়ান্ট টেলিনরের প্রথম বিদেশি উদ্যোগ এবং যা বছরের পর বছর ধরে টেলিনর পরিবারের সবচেয়ে লাভজনক প্রকল্পে পরিণত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোরের একটি চিঠি হস্তান্তর করেন, যেখানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নরওয়ের শক্ত সমর্থনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী আপনার (ড. ইউনূস) সংস্কার উদ্যোগ এবং সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন পরিচালনার প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মানবাধিকার সুরক্ষা ও পরিবেশগত স্থায়িত্ব প্রচারে প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। তিনি জানান, জাহাজ পুনর্ব্যবহার শিল্প ও সবুজ জ্বালানি রূপান্তর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং নরওয়ের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে।
এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পরিবর্তিত মিয়ানমার পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নরওয়ের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শান্তি রক্ষায় নরওয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তাই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নরওয়ের সাহায্য প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন জানান, নরওয়ে ফিলিস্তিনি ইস্যু, আন্তর্জাতিক কর এবং প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
নরওয়ের উপ-মিশন প্রধান মেরিয়ানে রাবে কনেভেলসরুদ বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে নরওয়ে নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘের প্রস্তাব সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।