ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করবে বলে মনে করে ছাত্রদল।
এছাড়া ক্যান্টিনটির প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে’র (মধুদা) হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় ছাত্রশিবিরের নিতে হবে বলে এক বিবৃতিতে বলেছে ছাত্রদল।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিবৃতিতে ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রসংঘ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা নেয়। শহীদ মধুদা’র হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রসংঘ’ পরবর্তীতে ‘ছাত্রশিবির’ কে নিতে হবে।
ছাত্রদলের ভাষ্য, স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শহীদ মধু এবং তার পরিবারের প্রতি অসম্মানজনক।
এর আগে ভিন্ন আরেকটি বিবৃতিতে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের বলেছেন, শহীদের নিজের আঙিনায় খুনির সহযোগীদের বিচরণ ন্যাক্কারজনক ঘটনা। অনুতাপ ও বিবেকবোধ থেকেই ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে আসা উচিত নয়।
এর আগে রোববার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রশিবিরের নেতারা। সেখানে ছাত্রদলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি বলে দাবি করে সংগঠনটি।
প্রতিবাদ ছাত্র ইউনিয়নেরও : মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নও।
রোববার সন্ধ্যায় সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মেরাদ খান আদরের পাঠানো বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, মধুদা’র হত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতার জন্য লজ্জার।
মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সরাসরি উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির, যারা মুক্তিযুদ্ধে আলবদর, আল শামস, রাজাকার বাহিনী গঠন করে গণহত্যা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি।
বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বয়কট করতে আপামর ছাত্র-জনতাকে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।