—
লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে অবৈধ ইট ভাটা ৫৪
অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরে ৫৪টি ভাটায় অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এগুলোর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এর বেশ কয়েকটি তৈরি করা হয়েছে আবাদি জমিতে। কয়েকটি আবাসিক এলাকার কাছে। কোনো কোনোটিতে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে ওই এলাকার কৃষিজমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হয়ে বাড়ছে মানুষের রোগব্যাধিতে আক্রান্তের হার।জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৭৫টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৪০টি, রামগঞ্জে ১৫টি, কমলনগরে পাঁচটি, রামগতিতে ১১টি ও রায়পুরে চারটি। তবে সদরের ৩৪টি, রামগঞ্জের পাঁচটি, রায়পুরের দুটি, রামগতির আটটি ও কমলনগরের পাঁচটি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, আবাদি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। ইটভাটায় ১২০ ফুট উঁচু পাকা চিমনি ব্যবহার করতে হবে। কাঠ পোড়ানো যাবে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নে জৌনপুরী ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, প্রাণ-ভগবতী গ্রামের মেসার্স আল আরাফ ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং, কমলনগরের তেরাবগঞ্জ ইউনিয়নে আল মদিনা ইটভাটা ও ভাই ভাই ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। কিন্তু তাদের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের রববাজার সংলগ্ন এবিএম ব্রিকফিল্ড চালু করেন আবুল বাশার মাঝি। ভাটার পাশের সয়াবিন, বাদাম ও মরিচসহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জানতে চাইলে আবুল বাশার মাঝি বলেন, ‘ইটভাটার কারণে সামান্য ক্ষতি হলেও কিছু লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।’
এদিকে মেসার্স পাটোয়ারী ব্রিকসে কয়েক বছর ধরে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া রামগঞ্জের উত্তর শৈরশৈই গ্রামে ফসলি জমিতে এম এম বি ব্রিকফিল্ড, আব্বাস ব্রিক, মেঘনা ব্রিক, সুধারাম এবিএম ব্রিক, আকারদমা এসবিএম ব্রিক, এফবিএম ব্রিক, কাটাখালী এইচটিসি ব্রিক, ভাট্রা রামসিংপুর এমএসবি ব্রিক, লক্ষ্মীধর পাড়া মোতালেব ব্রিক, হাজীরপাড়া এমডিএ ব্রিক, দেহলার মদিনা ব্রিক, জেবিএম ব্রিক, আজিমপুর পাটোয়ারী ব্রিকে পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকার পাশাপাশি নিম্নমানের চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। জৌনপুরী ব্রিকস ম্যানুচারিং কোম্পানি ইটভাটার পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘ভয়ে কিছু বলতে পারি না। গাছে গত দুই বছর ধরে কোনো ফল ধরছে না।
ছোট ছেলেমেয়েদের সর্দিকাশি লেগে আছে।’এ ছাড়া সদর উপজেলার আধারমানিক এলাকায় কেএসএইচআই ব্রিকফিল্ডে সরকারি অনুমোদন না নিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর) আক্তারুজ্জামান এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে লক্ষ্মীপুরে অধিকাংশ ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।