গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: এক বছরে আদালতে ২ হাজার ৩০৩টি মামলার নি®পত্তি করেছেন এক
বিচারক। গাইবান্ধার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসব মামলার নি®পত্তি করেন বিচারক
উপেন্দ্র চন্দ্র দাস। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকা মামলাগুলো নি®পত্তি হওয়ায়
বিচারপ্রার্থীরা খুশি হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে আদালতে যাতায়াত করতে বিচার প্রার্থীদের
অনেক টাকা ব্যয় হয়। হয়রানী ও ভোগান্তির পাশাপাশি সময়ও লেগেছে অনেক বেশী। বিচারকের
আন্তরিক প্রচেষ্টায় এক বছরে এতোগুলো রায় দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে অভিমত আইনজীবীদের।
গাইবান্ধার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালত সূত্রে জানা যায়, বিচারক উপেন্দ্র
চন্দ্র দাস একাধিক বিচারিক ও আমলী আদালতের দায়িত্ব পালন করছেন। ১ জানুয়ারি থেকে ৩১
ডিসেম্বর ২০২১ ইং এক বছরে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত আদালতে ১ হাজার ৬০০টি মামলা দায়ের হয়। এর
মধ্যে আদালতে দায়ের হয় ৭৮০টি ও থানায় ৮২০টি মামলা। এ ছাড়াও বিচারের জন্য চীফ
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে আসে আরও ৮৭৪টি মামলা। এ নিয়ে তার আদালতে মোট
২ হাজার ৪৭৪টি মামলা। এরমধ্যে ২০২১ সালে বিচারিক ও আমলী আদালত মিলিয়ে ২ হাজার ৩০৩টি
মামলা নি®পত্তি করেন তিনি। নি®পত্তিকৃত মামলার মধ্যে দো-তরফা সূত্রে রায় প্রদান করা হয়
৩২৭টি। এ জন্য ১ হাজার ৮৫৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। নি®পত্তিকৃত মামলার মধ্যে সাজা
হয়েছে ১৩৭টি। তার মধ্যে মাদক মামলায় সাজা হয়েছে ৬০টি। সাজাপ্রাপ্ত ১৩ জন আসামিকে
কারাগারে সাজা ভোগের পরিবর্তে সংশোধনের সুযোগ প্রদানের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেওয়া
হয়েছে। রায় প্রদানকৃত মামলার মধ্যে ১০ বছরের অধিক পুরাতন মামলা রয়েছে ১৭টি এবং ৫ বছরের
অধিক পুরাতন মামলা রয়েছে ৬৯টি। গাইবান্ধা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন বলেন,
নির্ধারিত দিনে সাক্ষী না আসায় মামলা নি®পত্তিতে বিলম্ব হয়। তবে এই বিচারকের তাগাদার
কারণে আদালতে সময়মত সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে এক বছরে এতো মামলা নি¯পত্তি
হয়েছে। ২০২০ সালে দায়েরকৃত অনেক মাদক মামলা তিনি ২০২১ সালেই নি®পত্তি করেছেন। বেশি
সংখ্যক সাক্ষী উপস্থাপনের জন্য পুলিশ বিভাগ হতে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক ৫ দফায় পুরস্কৃত
হয়েছেন বলে জানান তিনি। এ ছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক মানুষকে
বিচারিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়। যার প্রেক্ষিতে বিচারক জামিনের
দরখাস্ত নি®পত্তি করেছেন ১ হাজার ৫৯০টি, আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি (১৬৪
ধারা) লিপিবদ্ধ করেছেন ৩৩টি, ভিকটিমের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছেন ১১টি, রিমান্ডের দরখাস্ত
নি®পত্তি করেছেন ৩৬টি, অভিযোগ গঠন করেছেন ৪১৬টি মামলায়,মামলা ফাইলিংয়ের জবানবন্দি
গ্রহণ করেছেন ৭৮০টি ও এফিডেভিট স¤পাদন করা হয়েছে ৬৯২টি। সাদুল্লাাপুর উপজেলার
এনায়েতপুর গ্রামের মো.শহিদুজ্জামান বলেন,২০০৯ সালে গাড়িচাপায় ভাতিজির মৃত্যু হলে মামলা
দায়ের করি। দীর্ঘ এক যুগ ধরে মামলা চলার সময় অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আদালতে যাতায়াতে
ভোগান্তি হয়েছে। গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলার রায়ে গাড়িচালকের তিন বছরেরর সাজা
হয়েছে। তিনি কারাগারে আছে। গাইবান্ধা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ স¤পাদক মো.
সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, মামলা জটের কারণে অনেক মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ২৫ থেকে
৪৫ বছর ধরে মামলা চলমান থাকার নজিরও রয়েছে। এই বাস্তবতায় বিচারক উপেন্দ্র চন্দ্র দাস এক বছরে
২ হাজার ৩০৩টি মামলার নি¯পত্তি করেছেন। যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তাড়াতাড়ি রায় হওয়ায়
বিচারপ্রার্থীরাও সন্তুষ্ট হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফারুক আহম্মেদ প্রিন্স বলেন,
করোনার কারণে দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ক্ষতি
পুষিয়ে নিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারক উপেন্দ্র চন্দ্র দাস নিরলসভাবে কাজ করেন। তার আন্তরিক
প্রচেষ্টার কারণে এক বছরে এতো মামলার নি¯পত্তি গাইবান্ধায় এই প্রথম।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের বিষয়ে...