রেজওয়ান আলী বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি-সারাদেশের ন্যায় পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দরিদ্র,অসহায় ও দুস্থদের চাল আত্মসাৎ এর অভিযোগ ওঠেছে। আজ
শনিবার (৯ জুলাই) দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ৪নং দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের ৫৭ বস্তা চাল জব্দ দেখিয়ে সিলগালা করেন ইউএনও পরিমল কুমার সরকার। দিওড় ইউনিয়নের দরিদ্র,অসহায় ও দুস্থ্য ব্যক্তিগণের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ্য পরিবার সুন্দর ভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল উপহার দিয়েছেন। সেই হিসাবে ৪নং দিওড় ইউনিয়নে ৪ হাজার ২’শত পরিবারে চাল দিয়েছেন। প্রতিবস্তা ৩০ কেজির বস্তা হিসেবে ১হাজার ৪’শত বস্তা চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উক্ত বিষয়
সরেজমিনে জানা যায়,বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিরামপুর উপজেলার ৪ নং দিওড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার চাল প্রতিবস্তা ৩০ কেজি হিসেবে ১হাজার ৪’শত বস্তা চালের মধ্যে ১ হাজার ৩’শত ৪৩ বস্তা চাল দরিদ্র,অসহায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণে কাউকে ৫ কেজি,কাউকে ৩ কেজি আবার কাউকে ৮-৭ কেজি চাল দেন। সেই সঙ্গে ৫৭ বস্তা চাল আত্মসাৎ এর জন্য রেখে চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক নিজেই বলেন,চাল শেষ হয়ে গেছে বলে জানান। আর কাউকে চাল দেওয়া যাবে না। আপনারা বাড়ি চলে যান। এমতাবস্থায় জনসাধারণ বিপাকে পড়ে যায়। একপর্যায় জনসাধারণ জোরদাবি জানান চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে চাল দিয়ে হবে।
কিন্তু,সরকারি ভাবে প্রতিজন কার্ডধারীকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে কাউকে ৫ কেজি, কাউকে ৩ কেজি করে চাল দেন এবং কেউ কেউ কার্ড থেকেও চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। চাল না পাওয়াই অনেকের মধ্যে ক্ষোভ ও সন্দেহের দানা বাঁধে। একপর্যায় (৮ জুলাই) রাতে জানা যায় যে,ইউনিয়ন পরিষদে ৫০ বস্তা চাল চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল গোপন করেছেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনসাধারণ ও চাল বঞ্চিত বিক্ষুব্ধ জনসাধারণ বিরামপুর উপজেলার ৪নং দিওড় ইউনিয়ন পরিষদ ঘিরে রেখে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) পরিমল কুমার সরকারকে ফোনে অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের অনেক চাল লুকিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা চাল পাইনি। তারা আরো বলেন,রাতেই এই চালগুলো পাচার করা হবে বলে জানান। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার তাৎক্ষণিক ভাবে থানা পুলিশসহ ৪নং দিওড় ইউনিয়ন ঘটনা উপস্থিত হলে হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার কথা মুখে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে রাস্তায় মাটি কাটা লেবার অর্ধেক নিয়োগ দিয়ে বাঁকি অর্ধেক লেবারের টাকা আত্মসাৎ,রাস্তার গাছ কাটা,বিচারের নামে মানুষের কাছে থেকে টাকা নেওয়া,ভিজিডি-ভিজিএফ’র চাল লুটপাট করে খাওয়াসহ অনেক অভিযোগ করেন। সেই বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডলের অপসারণের দাবিও তোলেন। তারপর তিনি জনতার উপস্থিতিই ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ঘরে তল্লাশী চালান। তল্লাশী চালিয়ে তিনি পরিষদের সভাকক্ষের ঘর থেকে ৫০ বাস্তা চাল ও ইউপি সচিবের ঘরের ভিতর পায়খানা (টয়লেট) থেকে ৭ বস্তা চাল পান। সব চাল সভাকক্ষের ঘরে রাখা হয়। অতঃপর তিনিই উপস্থিত বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্দেশ্যে বলেন,আমরা ৫৭ বস্তা চাল পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরর্বতীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না করে শান্ত-শিষ্টভাবে নিজ বাড়ি চলে যান। অদ্য শনিবার (৯ জুলাই) সকালে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার থানা পুলিশসহ দিনাজপুরে বিরামপুর উপজেলা ৪নং দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের উপস্থিত হয়ে ৫৭ বস্তা চাল জব্দ দেখিয়ে সভাকক্ষের ঘরে রেখে ঘরটি সিলগালা করেন। এবিষয়ে ৪নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল সঙ্গে মুঠোফোন (০১৭৮০- ৮১৫৯১৫) একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার বন্ধ ছিল বলে জানা যায়।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন,পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার চাল আত্মসাৎ এর অভিযোগে ৫৭ বস্তা চাল জব্দ দেখিয়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের একটি ঘরে সিলগালা করে রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এমন অবস্থায় স্হানীয় জনসাধারণের ঈদ উৎযাপনে মুখ মলিন হওয়ার চিত্র ফুটে ওঠে। এবিষয়ে তারা বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপলক্ষে আমাদের কিছু চাল দিয়েছেন যাহা লোপাটের পায়তারা করেছে চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল আমরা এর কঠোর বিচার প্রার্থনা করেন বলে জানান।।