কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন ঘিরে প্রাণহানি, সংঘাত ও হতাহতের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তসহ ৯ দফা দাবি ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের চেয়ারম্যান মো. শাহরিয়ার আলম জর্জ ও মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার সুজাউল ইসলাম সুমন।
দপ্তর সম্পাদক মো. জুলফিকার আলি বিশ্বাসের পাঠানো বিবৃতিতে তারা জানান, চরম পরিতাপের বিষয় চলমান কোটা আন্দোলনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব স্থানে নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা ও প্রাণহানির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের সব শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই।
একই সঙ্গে সংঘাতে আহত ও নিহতদের পরিবারবর্গের স্থায়ী পুনর্বাসন এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ ৯ দফা দাবি ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সম্মতি জানিয়েছেন তারা।
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করে উত্থাপিত ৯ দফা দাবিতে বলা হয়-
১- কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘটিত প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর প্রাণহানির নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
২- কোটা আন্দোলনে সব গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও সর্বপ্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়াও মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়জন সমন্বয়কদের পরবর্তীতে কোনো প্রকার হয়রানি করা যাবে না।
৩- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।
৪- সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থী যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৫- কোটা আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারদের স্থায়ী পুনর্বাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৬- শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বৈধ সিট নিশ্চিতকল্পে হল প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৭- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে হবে।
-কোটা আন্দোলনে অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৮- শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযোগ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনেক নাশকতা হয়েছে। আমরা সাধারণ ছাত্ররা রাজনীতি করতে আসিনি। আমাদের যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করতে এসেছিলাম। বর্তমানে ব্যাপারটি যে পর্যায়ে গেছে তাতে আমরা মর্মাহত এবং শঙ্কিত।
সেই সাথে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক ফোরামের নেতৃবৃন্দ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানান।
তারা আন্দোলনে নিহত সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)