বক্তারা বলেন, শুধু নিরোগ থাকাটাই স্বাস্থ্য নয়; বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার নামই হল স্বাস্থ্য। দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য শব্দটি শারীরিক অংশটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে আশার কথা দেরীতে হলেও সারা বিশে^ আজ মানসিক স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূল আঙিনায় স্থান পেয়েছে। স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিকে অন্যতম প্রধান বাধা চিহ্নিত করা হয়েছে। জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা প্রদান রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। দেশে স্বাস্থ্য উন্নয়নে ’হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা সম্ভব। যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য অবনতির মূল কালণগুলো চিহ্নিত করে এগুলো সামাধানের দিকে মনোনিবেশ করবে, যাতে মানুষ দীর্ঘদিন সুস্থ জীবন অতিবাহিত করতে পারে।
বাংলাদেশের জনগনের গড় আয়ূ বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার পাশাপাশি শারিরীক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতকরণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরী। রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ‘হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ ঞযরহশ ঞধহশ হিসেবে প্রয়োজন অনুসারে সরকারী, বেসরকারী উভয় পর্যায়ে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ জাতি গড়ে তোলা সম্ভব হলে একদিকে চিকিৎসা নির্ভরতা কমবে অন্যদিকে ধীরে ধীরে চিকিৎসা খাতে রাষ্ট্রের ব্যয়ও কমে আসবে। শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রবীণদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধেও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সুইডেন, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, কোরিয়া, মঙ্গোলিয়াসহ বিশে^র ২৩টিরও অধিক দেশে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। রোগ হবার পর নিরাময় নয়, প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে জোর দেওয়া প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ব্যায়াম ও হাঁটা-চলা ও জীবনাচারের পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করা। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতের পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের প্রচারণা, বিজ্ঞাপনের কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন হতে পারে কার্যকর সমাধান।