বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও হোটেলে বিল না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি ওই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত হোসেন।
অভিযুক্তরা হলেন- কাস্টমস এক্সসাইজ ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রোমান হাওলাদার, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মেহেদী হাসান তনয় ও সাব-ইন্সপেক্টর হানিফ হাওলাদারসহ চার জন।
আগৈলঝাড়া থানার সামনে ‘চাঁন হোটেলের’ মালিক চাঁন মিয়া শাহ দাবি করেন, সোমবার দুপুরে তার হোটেলে চার জন খাবার খান। বিল চাইলে তারা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজেদের কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। এর আগেও তারা কয়েকবার এভাবে হোটেলে খাবার খেয়ে পরিচয় দিয়ে চলে যান। এ কারণে এবার টাকা দিয়ে তারপর যেতে হবে বলে সাফ জানিয়ে তাদের একরকম আটকে রাখেন।
তিনি আরও দাবি করেন, এরই মধ্যে আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক বাবু ফকির তাদের জন্য ছয় হাজার টাকা নিয়ে আসেন। এরপর তারা ওই অফিসের কর্মকর্তা কি-না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের ইউএনও’র কাছে নিয়ে যান। সেখানে ইউএনও বরিশাল অফিসে যোগাযোগ করে তারা ওই অফিসের কর্মকর্তা বলে নিশ্চিত হন। পরে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেন। বিষয়টি চাঁন মিয়া ও বাবুসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সামনেই ইউএনও কথা বলেন।
আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক বাবু ফকির দাবি করেন, ওই চার কর্মকর্তা তার ফ্যাক্টরিতে গিয়ে বরিশাল থেকে গাড়িতে আসা বাবদ ছয় হাজার টাকা দাবি করেন। ওই টাকা নিয়ে চাঁন হোটেলে দেখা করতে বলেন। টাকা নিয়ে চাঁন হোটেলে গিয়ে দেখতে পান, ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে হোটেল মালিকসহ আরও কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বাগবিতণ্ডা হচ্ছে। এ কারণে টাকা না দিয়ে তাদের ইউএনও’র কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও দাবি করেন, সোমবার এভাবে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তারা চাঁদাবাজি করেন। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা ভ্যাট আদায়ের জন্য এসেছেন বলে জানান। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান, ডিলারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বড় অঙ্কের ভ্যাট বসিয়ে দিতে পারে এমন ভয়ে অনেকে মুখ খোলেননি।
ইউএনও সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তাদের অর্থ দাবির ফোন রেকর্ডিং শুনে তাৎক্ষণিক বরিশাল কাস্টমস এক্সসাইজের সার্কেল অফিসার তারিকুল ইসলামকে বিষয়টি জানাই। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়।’
ইউএনও আরও জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাকে কল করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
শাস্তির বিষয়ে জানতে বরিশাল কাস্টমস এক্সসাইজের সার্কেল অফিসার তরিকুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বরিশাল কাস্টমস এক্সসাইজের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘ওই চার জনের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। সেখান থেকে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’