অবৈধ সরকারের কবল থেকে দেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুন: নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপি


ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: 
গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার, একটি অবৈধ সরকারের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করা, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করার জন্য প্রবাসীরাও মাঠে নেমেছে। আমরা আশা করি অচিরেই এই সরকার একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রনয়ণ করবে, যে সরকারের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহন যোগ্য নির্বাচন হবে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ মে) নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত সাবেক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির আহবায়ক মোঃ অলিউল্লাহ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সাইদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন উদযাপন কমিটির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও সদস্য সচিব দেওয়ান কাউসার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও সাবেক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষনা না আমরা আজ এই বাংলাদেশ দেখতাম না। তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা কোন পাঠক ছিলেন না। তাঁর ঘোষনার মাধ্যমেই সারা দুনিয়ার মানুষ জানতে পেরেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার খবর।
তিনি আরও বলেন মার্কিন ভিসানীতির ফলে বাংলাদেশকে উগান্ডার মত দেশের সামিলে নিয়ে গেছে এই সরকার। এর আগে আমেরিকা র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আবারও ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিয়েছে। এই ঘোষণা বাংলাদেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। তাছাড়া সংকটের সমাধান হবে না।
নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির আহবায়ক মোঃ অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। দেশের অর্থনীতি ও সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি সরকার ঠেকাতে পারেনি। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সেজন্য জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। মানুষ একবেলা ঠিকমতো খেতে পারে না। আজকে মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছে।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। অতীতে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আগামীতেও হবে না। সেজন্য বিএনপি তাঁর অধীনে নির্বাচন যাবে না। আজ আন্তর্জাতিকভাবেও দাবি উঠেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। বিএনপিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনরত কোনো দল হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতন আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য তিনি সকল প্রবাসী বিএনপি নেতাকর্মীদের আহবান জানান।
সভার শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ সারা বিশ্বের সকল মানুষের সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির আহবায়ক মোঃ অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান। দোয়া মাহফিল শেষে সর্বসাধারণের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী পারভেজ সাজ্জাদ, নিউ ইয়র্ক মহানগর বিএনপি দক্ষিণের আহাবায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সদস্য সচিব মোহাম্মদ বদিউল আলম, নিউ ইয়র্ক মহানগর বিএনপি উত্তরের আহবায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন, সদস্য সচিব ফয়েজ চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর এম আলম, বিএনপি নেতা নাসিম আহমেদ, মোতাহার হোসেন, গোলাম হোসেন, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, বদরুল হক আজাদ, দেওয়ান কাউসার, কাওসার আহমেদ, ইঞ্জি. তাজুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন রাজু, রিয়াজ মাহমুদ, আশরাফ হোসেন, মোঃ রইচ উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান মুকুল, আনোয়ার হোসেন, এবাদ চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম শিকদার, নীরা রব্বানী, হুমায়ুন কবীর, আরিফুর রহমান, আনিসুর রহমান, জসিম উদ্দিন ভিপি, মিয়া আলী পাখি, সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ আলী মন্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান, মোঃ বশির, হাবিবুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম, মাইনুল করিম টিপু, মাইনুল হাসান মুহিদ, ফয়সাল মাহমুদ, জিয়াউর রহমান মিলন, কাজী আসাদ উল্লা, কামাল উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, আলমগীর হোসেন ও রুবেল হাসান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি চট্টগ্রামের বালুঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি ‘শহীদ জিয়া’ বলেই পরিচিত।

Exit mobile version