টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ানের মঞ্চে মোহরে ফাতেমি (হজরত ফাতেমা (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর বিয়ের দেনমোহর) অনুসারে এ বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
শুরায়ে নিজামের ইজতেমা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা যোহাইরুল হাসান।
এর আগে, শনিবার বাদ যোহর পর্যন্ত বিয়ের জন্য বর ও কনে পক্ষের লোকদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হয়। বিয়ের আগে বাদ আসর বিয়ের খুতবা পাঠ করা হয়। বয়ান শেষে ওইসব বর-কনের অভিভাবকদের সম্মতিতে বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়ে শেষে উপস্থিত দম্পতিদের স্বজন ও মুসল্লিদের মধ্যে খেজুর বিতরণ করা হয়। তারপর মাগরিবের নামাজের আগেই নবদম্পতিদের জন্য মোনাজাত করা হয়।
যৌতুকবিহীন বিয়েতে বর উপস্থিত থাকলেও কনের মতামত নিয়ে উপস্থিত থাকেন তাদের অভিভাবকরা।
ইজতেমা ময়দানে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর একাধিক বর তাদের মতামত প্রকাশ করেন। এ সময় উপস্থিত এক বর বলেন, মোহরে ফাতেমি অনুসারে আজ বিয়ে করেছি। অনেক মুসল্লির উপস্থিতিতে বিয়ে হয়েছে আমাদের। আমার স্ত্রীর পক্ষ থেকে তার বাবা বিয়েতে সম্মতি নিয়ে ময়দানে এসেছেন। এই বিয়ে আমার কাছে অনেক বরকতময়। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখ ও সহজ করে দেবেন।
আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শুরায়ে নিজামের (জুবায়ের অনুসারী) দুই ধাপের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ।
উল্লেখ্য, হযরত ফাতিমা (রা.) ও হযরত আলি (রা.)-এর বিয়েতে মোহর হিসেবে দিয়েছিলেন ৫০০ দিরহাম। আধুনিক হিসেবে ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রূপা। এক দিরহামের ওজন হলো ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমান বাজারে প্রতি তোলা রূপার মূল্য ১ হাজার ৭০০ টাকা হলে মোহরে ফাতেমির মূল্য হবে ২ লাখ ২৩ হাজার ১২৫ টাকা। তবে মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন সময় রূপার দাম ওঠানামা করে। তাই, অবশ্যই যখন যেমন দাম হবে সে অনুযায়ী কম বেশি হবে।
বিয়ের সময় মোহরে ফাতেমি দেওয়া আবশ্যক নয়। কোনো স্বামীর যদি মোহরে ফাতেমি নির্ধারণের মতো আর্থিক সচ্ছলতা না থাকে তাহলে তার সামর্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। স্বামীর সামর্থ্যের বাইরে মোহর ধার্য করা ইসলামের শিক্ষা বহির্ভূত।