পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান দাবি করেছেন, পুলিশ তার বাসভবন জামান পার্ক ঘিরে রেখেছে। যেকোনও সময় তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ইউটিউব লাইভে দেওয়া ভাষণে তিনি এই দাবি করেন।
ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, আরেকবার তাকে গ্রেফতারের জন্য তার বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
তিনি দাবি করেছেন, হয়তো আবার গ্রেফতারের আগে এটিই আমার সর্বশেষ টুইট বার্তা।
ইমরান খান বলেন, আজ আমি ভয় পাচ্ছি পাকিস্তান ধ্বংসের পথে রয়েছে। আমি আশঙ্কা করছি, আজ যদি সুবিবেচনার চর্চা না হয় তাহলে আমরা হয়তো একপর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারি, যেখান থেকে ফেরা সম্ভব হবে না।
এর আগে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ৩১ মে পর্যন্ত ইমরান খানকে নতুন মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না বলে আদেশ দিয়েছে। আদালতের এমন আদেশের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই দাবি করলেন।
লাহোরে ইমরান খানের বাসভবন জামান পার্কে উপস্থিত থাকা পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন-এর প্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন, পাঞ্জাব পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে রেখেছে।
অবশ্য পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে এখন পর্যন্ত পুলিশের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভাষণে ইমরান খান আরও বলেছেন, বিশ্বের কাছে আমি আমাদের সেনাবাহিনীকে সমর্থন করেছি। আমি ছিলাম পরিচিত মুখ। এমন আরেকজন পাকিস্তানির নাম বলুন যারা আমার মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমি এটি করেছি, কারণ আমি মুক্ত মানুষ। আমি দাসত্ব মেনে নেইনি।
গত (৯ মে) মঙ্গলবার ইসলামাবাদের আদালতে হাজিরা দিতে এলে বাইরে থেকেই আধাসামরিক বাহিনীর হাতে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার হন ইমরান খান। ওই দিনই ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তার গ্রেফতারকে বৈধতা দেয়। পরদিন বুধবার তাকে একটি বিশেষ আদালতে হাজির করার পর দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর হাতে ৮ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
ইমরানকে গ্রেফতারের পর সারা দেশে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে পিটিআই সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় এক ডজন লোক নিহত হয়। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়।
পরবর্তীতে সর্বোচ্চ আদালতে এই গ্রেফতারকে অবৈধ বলে ঘোষণা দেন তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ। পরে শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) একটি ডিভিশন বেঞ্চ আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় তাকে জামিন দেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আদালতে হাজির হলে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে তাকে গ্রেফতারে দুই দফা পুলিশ লাহোরের জামান পার্কে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল।