=============================
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি ওয়া নুসাল্লিমু আলা হাবীবিহিল কারীম
হে ঈমানদারগণ তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হয়ে যাও (সুরা: বাকারা, আয়াত শরীফ: ২০৮)। তোমাদের কাউকে তার আমল জান্নাতে পৌঁছাতে পারবে না এবং দোজখ থেকেও নাজাত দিতে পারবে না, একমাত্র আল্লাহতাআলার রহমত ব্যতীত (মেশকাত শরীফ, হাদিস শরীফ নংঃ ২৩৭১) ।
সিয়াম বা রোজা ঈমানদারদের জন্য আত্মিক উন্নয়ন ও সাফল্য লাভ এবং বিপর্যয় থেকে রক্ষায় এক অপরিহার্য্য দ্বীনী স্তম্ভ ও দ্বীনি জীবনের অবিচ্ছিন্ন অংশ। রোজার মূলে রয়েছে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমের অভিযাত্রা ও নৈকট্য সাধনা। নামাজ রোজা সব আমলের মূল শর্ত হলো আত্মার ঈমানী শুদ্ধতা। আত্মার ঈমানী শুদ্ধতা নির্ভর করে সকল প্রকার বাতিল মত পথ থেকে মুক্ত থাকার উপর এবং সব কিছুর উর্ধ্বে প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমভিত্তিক হৃদয়ের উপর।
রমজানুল মোবারক শুধু রোজা নয়, সমগ্র দ্বীনের স্মারক। মহা বরকতময় লাইলাতুল কদর তথা কোরআনুল করীম নাজিলের মাধ্যমে সত্যের উৎস শানে রেসালাতের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ও দ্বীনের আনুষ্ঠানিক প্রারম্ভ তথা সত্য ও মুক্তির উদয় শুভযাত্রা, দ্বীন-জীবন ও মানবতার অস্তিত্ব রক্ষায় মহান জিহাদ বদর এবং আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও শিক্ষা রমজানের সাথে যুক্ত। যে কারণে রমজান এত বরকতময়। রমজান ও রোজার সাথে এর সব বিষয় ও দায়িত্ব উপলব্ধি করতে হবে, না হয় রোজা সার্থক হবে না এবং রোজার লক্ষ্যও হারিয়ে যাবে। রমজানের রোজা জীবনের লক্ষ্য ও দ্বীনের লক্ষ্য অর্জনে এক জরুরী সাধনা। রোজার শিক্ষা মুমিন জীবনের সার্বিক গতিধারা ও রূপরেখার প্রতিফলন। মুমিনের সমগ্র জীবনই রোজার মর্মধারায় পরিচালিত হতে হবে।
রোজার অন্তর্নিহিত মর্ম দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর মহান হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের উদ্দেশ্যেই যে জীবন তা উপলব্ধি করা। দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামকে পাওয়ার জন্য ও দ্বীনের জন্য প্রয়োজনে যে কোন ত্যাগ সাধনা রোজার শিক্ষা। জীবনের বিজয়ের জন্য হৃদয়েরে যে জরুরী প্রয়োজন শক্তি তা অর্জন করে সত্যের পথে অটল গতিশীল থেকে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। রোজার অন্যতম উদ্দেশ্য রোজার মর্ম জীবনে কার্যকর ও প্রতিফলিত হবে তখনই যখন লোভ-নফ্স-প্রলোভন কিম্বা কোন চাপ-ভীতি-শৃংখল যাই হোক কোন বাধা অর্থাৎ জীবনের দায়িত্ব ও লক্ষ্যের বিপরীত কোন কিছুই সত্য ও জীবনের লক্ষ্যে জীবনের গতি রূদ্ধ করতে পারবে না, কোন অপশক্তি জীবনকে দখল বা পরাভূত করতে পারবে না, জীবন সত্যের বিপরীত কোন কিছুতে আত্মসমর্পন করবে না তথা সর্বাবস্থায় জীবন ঈমানের পবিত্র কলেমার আলোকধারায় গতিশীল থাকবে।
রমজানে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর প্রিয়তম মাহবুব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সব দান ও রোজার মর্ম প্রতিফলিত হয়েছে মহামহিম প্রাণপ্রিয় আহলে বায়েত, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন ও মকবুল সাহাবায়ে কেরামের জীবনে; যাঁদের অনুসরণে সে শিক্ষা প্রতিবিম্বিত করেছেন সত্যের ইমামগণ, মহান জামিয়ে আওলিয়া কেরাম, শহীদগণ ও সত্যের ধারক মুমিন মুজাহিদগণ, যাঁদের শিক্ষা বাদ দিয়ে রোজার লক্ষ্য অর্জিত হবেনা। রোজার পানাহার ত্যাগ প্রতীক মাত্র, প্রকৃত শিক্ষা জীবনকে বিপরীত সব কিছু থেকে মুক্ত রেখে সত্যের ধারক হিসেবে গতিশীল থাকা যে কোন অবস্থায় যে কোন ত্যাগের বিনিময়ে। পবিত্র কোরবাণীও এ শিক্ষারই আরেক প্রকাশ।
আত্মার প্রাণ প্রবাহ তথা সত্যের প্রবাহধারা ও অপশক্তির কবল থেকে দ্বীন ও পবিত্র কলেমা দ্বীনের দিকদর্শনে সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মুক্ত মানবতার অখন্ড বিশ্বব্যবস্থার রূপরেখা রক্ষায় মহান সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুমকে রমজানুল মোবারকেই মহান জিহাদে বদরে অবতীর্ন হতে হয়েছিল। মহান মকবুল সাহাবায়ে কেরামই সত্যের মাপকাঠি এবং দ্বীনের প্রকৃত রূপরেখা, তাঁদের পথই আহলে সুন্নাত, তাঁদের আদর্শ পূর্ণাংগ, তাঁরা আমাদের মহান মাতাগণ ও পিতৃগণ একই সাথে দ্বীন ও জীবনের আত্মিক এবং রাজনৈতিক সব দিকে মাতাপিতা সবাই পূর্ণাংগভাবে কাজ করেছেন এবং দয়াময় আল্লাহতাআলা ও মহান প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের তাঁদের উপর সর্বোচ্চ সন্তোষ্টি ঘোষনা করেছেন, যার উর্ধ্বে আর কোন মর্যাদা ও উচ্চতা নেই।
রমজানের সব উপলক্ষ তথা ঈমানের পবিত্র কলেমা-কোরআনুল করীম ও রোজার মর্মধারার সর্বোচ্চ প্রতিফলন ঘটেছে কারবালায় মহান প্রাণপ্রিয় ইমামে আকবর রাদিআল্লাহু আনহু ও মহামহিম পবিত্র আহলে বায়েতের মহান শাহাদাতের শিক্ষার মাধ্যমে। সেদিন তাঁরা রোজা রেখেছিলেন দশই মহররমের, তিন দিন পূর্ব থেকেই সেহরীর ব্যবস্থা এমনকি পানিও বন্ধ করে রেখেছিলো পবিত্র কলেমার শত্রু অভিশপ্ত কাফের এজিদচক্র। এজিদ চক্রের শর্ত ছিল পবিত্র কলেমা-দ্বীন-খেলাফতে ইনসানিয়াত পরিপন্থী অন্যায় অবৈধ গোত্রবাদী স্বৈর দস্যুতন্ত্র কবুল করা, না হয় শাহাদাত। তাঁদের সে রোজা শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকা নয়, যে কোন অবস্থায় ঈমানের পবিত্র কলেমা-দ্বীন তথা সত্যকে ধরে রাখা এবং শাহাদাত হলেও বাতেল জালেম অপশক্তিকে কবুল না করা। তাঁদের সে রোজা ছিল দুনিয়ায় সত্যের জন্য যার ইফতার ছিল আখেরাতে জান্নাতে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের সান্নিধ্যে।
রোজার অন্যতম শিক্ষা ও দিশা মানবসত্তা বস্তুর উর্ধ্বে, মানুষ বস্তুর দাস হতে পারে না। মানবসত্তা বস্তুভিত্তিক হতে পারেনা, বস্তুভিত্তিক হলে মানবসত্তা ধ্বংস হয়ে মানবাত্মা মিথ্যার আঁধারে বিনষ্ট ও বিষাক্তহয়ে যায়। মানবাত্মা কেবল মহান রেসালাতে ইলাহীকে অবলম্বন করে একমাত্র দয়াময় আল্লাহতাআলার নামে হবে এবং এভাবে সত্য তথা ঈমানী সত্ত্বায় বিকশিত হতে হবে। কেবল মাত্র সত্যের ধারায়, সত্যের নিয়ন্ত্রনে, জ্ঞান-বিবেক-ন্যায়ের নিয়ন্ত্রনে জীবন পরিচালিত হতে হবে এবং সর্বোপরি দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়ন্ত্রনে, দয়াময় আল্লাহতাআলা ও প্রাণাধিক প্রিয়নবীর দিকে।
রমজানুল মোবারক ও কোরআনুল করীম পাওয়ার সূচনা মাস। পবিত্র রমজানে অবশ্যই কোরআনুল করীম তেলাওয়াত করতে হবে, কিন্তু অপব্যাখ্যার শিকার হওয়া যাবে না। বিভিন্ন বাতেল ফেরকার বই-পুস্তক-ওয়াজ-তফসির ঈমান হানিকর অপব্যাখ্যা। কোরআন পাকের সব আয়াতের অভিধানিক অর্থ গ্রহণ দয়াময় আল্লাহতাআলা নিজেই নিষিদ্ধ করেছেন, (সুরা আল ইমরান, আয়াত-৭)। অতএব ঈমান হারা না হয়ে সত্যে অটল থাকতে হলে কেবলমাত্র মহামহিম পবিত্র আহলে বায়েত, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন, সত্যের ইমামবৃন্দ ও মহান আওলিয়া কেরামের পথ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রকৃত ও পূর্ণাংগ দিশায় যুগের সঠিক দিকদর্শনে থাকতে হবে। আহলে সুন্নাত বা সুন্নী নামেও ধোকা-বিকৃতি-অপূর্ণাংগতা ও মূর্খতা চলছে যা সম্পর্কেও অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
কোরআনুল করীমের সব আয়াত মোবরক ঈমানী আয়াত এবং কেবল ঈমানদারদের জন্য। ঈমান না থাকলে ঈমানী চেতনা ও ঈমানী এলেম ও দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে এবং প্রকৃত তরিকত বা কলেমা কোরআনের রূহানী জগতে অন্তর্ভূক্ত না থাকলে কোরআনুল করীমের একটা আয়াত মোবারকও বুঝা সম্ভব নয়। ঈমানী তফসীর ব্যতীত অন্য সব বাহ্যিক আভিধানিক অর্থ হিদায়াত নয় এমনকি কোরআনুল করীমের প্রকৃত মর্মও নয়। কোরআনুল করীমে আল্লাহতাআলা নিজেই সতর্ক করে দিয়ে এরশাদ করেছেন, সত্যের উৎস এ কোরআনুল করীম দিয়ে প্রচুর মানুষ পথভ্রষ্ট হবে এবং প্রচুর মানুষ হিদায়াত পাবে অর্থাৎ এর ঈমান পরিপন্থী অপব্যাখ্যা করে প্রচুর মানুষ পথভ্রষ্ট হবে এবং ঈমানী ব্যাখার মাধ্যমে প্রচুর মানুষ হিদায়াত তথা সত্য পাবে।
কোরআনুল করীম থেকে নিছক আভিধানিক অর্থ ও দলিল দিয়ে ইসলামের নামেই বাতিল ফেরকা বাতেল জিহাদ বাতেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে ঈমান হরণ, দ্বীন বিকৃতি এবং জুলুম-খুন-সন্ত্রাস-স্বৈরতা-বর্বরতা-পাশবতার প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে এ মহান আয়াত মোবারকে স্পষ্ট সমাধান করা হয়েছে (ইয়দিল্লু বিহি কাছীরাও ওয়া ইয়াহ্দী বিহী কাছীরা)। কোরআনুল করীম অবশ্যই দুনিয়ার সব মানুষের জন্য সত্য-ন্যায়-কল্যান-জ্ঞান-বিজ্ঞান, সমগ্র জীবন ব্যবস্থা ও দোজাহানে সার্বিক মুক্তির সর্বাত্মক উৎস কিন্তু কেবলমাত্র পবিত্র হাদিস শরীফের ভিত্তিতে ও পূর্ণতাপ্রাপ্ত মুমিনদের মাধ্যমে; ঈমানী দৃষ্টিহীন অশুদ্ধ অসৎ বিকৃত ধারায় নয়।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ব্যতীত এ মুহুর্তে দুনিয়ায় ঈমান-দ্বীন-পবিত্র কলেমা-মহান কারবালার আর কোন নির্ভেজাল, বিশুদ্ধ, পূর্ণাংগ ও সময়োপযোগী দিশা দিকদর্শন বাস্তব পথ ও কর্মসূচী দেখা যাচ্ছে না। খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা সব মানুষের রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থার এবং দুনিয়াব্যাপী আর কোন দিশা ও বাস্তব কর্মসূচী নেই, যা ব্যতীত জীবন ও মানবসত্ত্বাই অস্বীকার হয়, রূদ্ধ হয় এবং বিণাশ হয়। সুন্নী আন্দোলনই ঈমান-দ্বীনের সঠিক ও পূর্ণাংগ পথ যেমন তুলে ধরেছে আত্মা-জীবন-রাষ্ট্র-বিশ্ব সব পর্যায়ে এবং তুলে ধরেছে এর বিপরীত পথ এবং সমস্যা সংকট ও ইতিহাসের ভূল ধ্বংসাত্মক আত্মঘাতি পর্যায়গুলো, যা না বুঝলে দ্বীনের প্রকৃত ধারা পরাজিত ও বিলুপ্ত হয়ে যাবে, জীবন আঁধারের গ্রাসে চলে যাবে। একই সাথে ধর্ম-জাতি-ভাষা-গোত্র মতপথ নির্বিশেষে সব মানুষের জীবন-স্বত্তা-নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতা ও বিকাশের এবং নিজের জীবন ও দুনিয়ার মালিকানার রূপরেখা একমাত্র ইনসানিয়াতই তুলে ধরেছে সুস্পষ্টভাবে অকাট্যভাবে যা ব্যতীত জীবন বিধ্বংসী মানবতা বিধ্বংসী গোষ্ঠিবাদী অন্যায় অপরাজনীতির বর্বরতা দস্যুতা থেকে মুক্তির কোন বিকল্প নেই।
ঈমান ও দ্বীনের প্রকৃত ও পূর্ণাংগ ধারা রক্ষায় ও প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ছাড়া কোন পথ নেই এবং জীবন ও মানবতা রক্ষায় ও প্রতিষ্ঠায় ইনসানিয়াত রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা ছাড়া কোন উপায় নেই। মুমিনদের সুন্নী আন্দোলন গড়ে তোলা ও ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে মানবতায় বিশ্বাসী সব মানুষকে নিয়ে ইনসানিয়াত রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার মধ্যেই বাতেল জালেম অপশক্তির কবল থেকে সার্বিক মুক্তি এবং সত্য ও মানবতার বিজয় নিহিত ইনশাআল্লাহ। সত্য ও মানবতার জয় এবং মিথ্যা ও জুলুমের উৎখাতই দুনিয়ায় পবিত্র কলেমার লক্ষ্য যার দায়িত্বে আমরা মুমিনগণ অঙ্গিকারাবদ্ধ এবং সত্য ও মানবতার পূর্ণাংগ কর্মসূচীতে আমাদের সবার সম্মিলিত অগ্রযাত্রাই এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের উপায়।
আত্মার মূল, অস্তিত্বের উৎস প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম থেকে কোনভাবে বিচ্ছিন্ন থাকলে রেসালাত কেন্দ্রীক না হয়ে বস্তুভিত্তিক হয়ে থাকলে আত্মা মৃত অন্ধকার ও নাপাক হয়ে যায়, যেখানে নামাজ রোজা বা কোন এবাদতই আর কাজে আসে না। অপরদিকে দ্বীনের সাথে সম্পূর্ণ একাকার হয়ে দ্বীনের বিরুদ্ধে বাতেলের আগ্রাসন ও মিল্লাতের সমস্যা সংকটে একাত্ম হয়ে দ্বীনের আধ্যাত্মিক রাজনৈতিক সর্বদিকে পূর্ণ বিশ্বস্ত না হলে কেবল একটা দিক রোজা দ্বীনের সাথে প্রতারণা হয়ে দাড়ায়।
সারা দুনিয়ায় আজ ইসলামের ছদ্মনামে প্রতারক বাতিল ফেরকা ও ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদ এবং নাস্তিক্যউদ্ভূত বস্তুবাদী মতবাদ তাওহীদ রেসালাত থেকে আত্মাকে বিচ্ছিন্ন করে মিথ্যা আঁধারে নিমজ্জিত করার চক্রান্ত করছে, জীবন ও দুনিয়ার সর্বজনীন মানবিক প্রাকৃতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মানবিক সাম্যের রূপরেখায় মুক্ত মানবতার অখন্ড বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত (authority of life & state & world of universal humanity) এর বিপরীতে মানবতা বিধ্বংসী একক গোষ্ঠিবাদী স্বৈর রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থার মাধ্যমে সত্য ও জ্ঞানের প্রবাহ রূদ্ধ করে এবং জীবনের সকল অধিকার-স্বাধীনতা-নিরাপত্তা হরণ করে সমগ্র মানবতাকে দাসত্ব শৃংখলে আবদ্ধ করে সর্বাত্মক ধ্বংসের অপচেষ্টা চলছে।
এমতাবস্থায় রোজার সার্থকতার জন্য আমাদেরকে রোজার আসল লক্ষ্য আত্মার উন্নয়নের শর্ত আত্মা ও জীবন সর্ব বাতিলের আঁধার বিনাশ থেকে পবিত্র ও মুক্ত করে দয়াময় আল্লাহতাআলার উদ্দেশ্যে প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের প্রেম ও শাণে উৎসর্গীকৃত হয়ে গড়ে উঠতে হবে। রমজান যে কোন ত্যাগ ও উৎসর্গের বিনিময়ে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেম ও শানে উৎসর্গীকৃত হয়ে থাকার শিক্ষা, যার রূপরেখা কোন বাতেল জালেম অপশক্তিকে কোন অবস্থায় কবুল না করে ঈমান-দ্বীন তথা সত্য ও মানবতার মুক্তির ধারা যে কোন মূল্যে এগিয়ে নেয়া, যার সর্বোচ্চ নিদর্শন কারাবালার মহান শাহাদাত।
সব মানুষের নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতা- মর্যাদা ভিত্তিক মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সাধনা এবং দ্বীন-মিল্ল¬াত-মানবতার সংকটে নিজেদের ঈমানী দায়িত্ব এবং রোজার শিক্ষা অবিচ্ছেদ্য বিষয়। আসুন আমরা মুমিন ভাইবোন সম্মিলিতভাবে রোজার প্রকৃত আলোক চেতনায় সত্য ও মানবতার ধারায় নিজেদের জীবন ও সমাজ এবং সত্য ও মানবতার দুনিয়া গড়ে তোলার সাধনায় ঈমানিয়াত ও ইনসানিয়াতের ধারায় এগিয়ে যাই।
প্রণেতা: – সৈয়দ আল্লামা ইমাম হায়াত
(প্রতিষ্ঠাতা: বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব)