(01)
যে সুখ পাখিটি আমার মনের খাঁচায় বাসা বেঁধেছিলো
তাকে মুক্ত দিলাম সব মায়ার বাঁধন থেকে মুক্ত আকাশে,
জোর করে বেঁধে রেখে লাভ কী?সে ঠিক মতো আর খায় না
আগের মতো আর মন খুলে আমার সাথো কথা বলে না
যে যেতে চায় তাকে আটকে রাখা বড্ড দায় মনের খাঁচায়
ভালোবাসা কী?এতই সস্তা যে লিখে ভরে রাখা যায় ডাইরির খাতা,
হৃদয় ডাইরির পাতায় যদি থাকে সত্যিকারের ভালোবাসা আঁকা
সেখান থেকে মুছে ফেলা যায় না স্মৃতির পাতা।
সারাটি জীবন সহিতে হয় অন্তর জ্বালা বিষের ব্যাথা
যদি অতি আপন জন দেয় ধোঁকা,
অবহেলা অপমানে অন্তর জমিন পুড়ে পুড়ে ছাই হয়
সেটা তুমি বুঝলে না রেখা।
হাজার শখের পোষা পাখি যদি কেউ ছেড়ে দেয়
শুধু সেই জানে তার নিথর মন কত কথা কয়,
পাষাণ বাঁধে বুকের মাঝে অশ্রুর সাগর বয়
নিজেকে আগ্নেয়গিরির মতো জ্বালাই পোড়ায়।
(02)
স্মৃতিচারণ
-বিচিত্র কুমার
একটা প্রেমের কবিতা লিখেছিলাম
কোন এক বসন্তের দিনে উতলা যৌবনে,
হরেক রমক ফুল ফুটেছিলো গহীন অরণ্যে রঙেবঙ্গে
প্রজাপতি মেলেছিলো ডানা তুমি এসেছিলে আমার জীবনে।
বনে বনে কোকিল ডেকেছিলো মনে মনে
কখন যে একরাশ আনন্দ আর হাসি খুশি বার্তা নিয়ে,
যেন জোছনা রাতে বাঁকাচাঁদ উঠেছিলো হেসে দূরদিগন্তের দেশে
তুমি মনের অজান্তে আকাশের বুকে গিয়েছিলে হারিয়ে।
আবেগের তাড়নায় তুমি বলেছিলে বারবার আমার কবিতা হবে
তখন তাকিয়ে দেখি তোমার আঁখিতে ফুটেছে বসন্তের ফুল,
হলুদ রঙের শাড়িতে পড়েছো কানে সোনার দুল
অসংখ্য সবুজ পাতার ফাঁকে সোনা বন্ধুর গান ধরেছে বুলবুল।
সেদিন আমি করেছিলাম ভুল ভ্রোমরেরা কত না ব্যাকুল
চতুর্দিকে গুনগুন এসেছে ফাগুন তখন ছিলো কত না মধুর ক্ষণ,
আজ তুমি নেই হারিয়ে গেছো জীবন স্রোতের নদী রয়ে একাকী
আর আমি একলা বসে আজো করছি তোমার স্মৃতিচারণ।
(03)
প্রথম প্রেমের স্মৃতি
-বিচিত্র কুমার
তোমাকে যত ভুলে যেতে চাই
ততো বেশি মনে পড়ে স্মৃতি,
আঁধারে জ্বলে ধিকধিক করে
জ্বলন্ত মোমের বাতি।
গলেগলে শেষ হয় সেই জ্বলন্ত প্রদীপ
তবু বুকে থাকে অবশিষ্ট অঞ্জলি,
সাদা কাপড়ে যেমন ওঠেনা
বারবার ধুয়েও রঙের কালি।
শতাব্দীর পর শতাব্দী আমি শতরূপে শতবার
গেঁথেছি প্রেমে নিত্যনতুন ফুলের মালা,
তবু মনে পড়ে তোমার কথা
নিশিতরাতে একলা বালা।
ঋতুর পর ঋতু যায়
জোযার ভাটা পথ হারায়,
তবু বসন্ত এসে মন রাঙায়
এখনো সেই কোকিল ঘুমভাঙ্গায়।
কবি পরিচিতিঃ
বিচিত্র কুমার ১৯৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর,বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলাধীন খিহালী পশ্চিম পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: বিপুল চন্দ্র কবিরাজ। মাতা: অদিতী রানী কবিরাজ। তিনি ২০০৮ সালে আলতাফনগর কে,এম,এ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি,২০১০ সালে সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ,বগুড়া থেকে এইচ এস সি এবং ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ,বগুড়া থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে(অনার্স) ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন।
তার একক কাব্যগ্রন্থ: আমাদের দেশ (২০১৫ সালে প্রকাশিত)।
তার যৌথ কাব্যগ্রন্থ সমূহ : অমর কাব্য গাঁথা, একমুঠো আলো, শত কবির কবিতা, আঁধারে আলোর রেখা, লাঙল, রক্তাক্ত আগস্ট, কাব্যগাঁথা বিজয়, জীবনের যত কাব্য, সূর্যসিঁড়ি তৃতীয় সংকলন, কবিকোষ-২, সেতু(সিঙ্গাপুর), উদীয়মান কবি, কবিকোষ-৩, দীর্ঘশ্বাসের কাব্য,মায়াবতী ও ছড়া কবিতায় একুশ।
এছাড়াও তার লেখা ভারত,যুক্তরাষ্ট্র,ইংল্যান্ড,