শাবলু শাহাবউদ্দিন
আরিচা এবং কাজিরহাট ঘাট এখন বঙ্গবন্ধু সেতুর বিকল্প পথ হিসেবে কাজ করছে। উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ বঙ্গবন্ধু সেতুর বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন আরিচা ও কাজিরহাট ঘাট । কারণ এই পথে ঢাকার সাথে উত্তর ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের দূরত্ব এবং পরিবহণ ভাড়া অনেকটাই সাশ্রয়ী করেছে। দীর্ঘদিন আরিচা ও কাজিরহাট ঘাট বন্ধ ছিলে । বছর খানেক হল এই দুই ঘাট আবার ফেরি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে । প্রথম দিকে যখন ফেরি চলাচল শুরু হয় তখন এই ফেরি পথে জন প্রতি ভাড়া আদায় হতো ২৫ টাকা । যা সাধারণ জনগণের জন্য ছিল দারুণ একটা সুখবর । বর্তমানে সেই ভাড়া বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৩৬ টাকা। কিন্তু জন প্রতি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা। ৪০ টাকা ভাড়া আদায় করে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৩৬ টাকা সমমূল্যের একটা টিকিট । টিকিটের গায়ে লেখা আছে ৩৬ টাকা। আর বাড়তি আদায় করা হচ্ছে চার টাকা। এই বাড়তি আদায়কৃত চার টাকার জন্য দেওয়া হচ্ছে না কোন আদায় রশিদ। অনেক যাত্রী এই বাড়তি চার টাকা দিতে না চাইলে তাদের ফেরিতে পাড়াপাড় হতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে তাদের পরে পাড় হতে হচ্ছে স্পিড বোর্ডে। তখন গুণতে হচ্ছে দুই শত টাকা। যারা বাড়তি চার টাকা দিতে অস্বীকৃত জানাচ্ছেন তাদের কপালে জুটছে না ধরনের হেনস্তামূলক এমনি শাস্তি । কখনো কখনো এই চার টাকা বাড়া বেশি আদায়ের জন্য যাত্রীদের সাথে মারপিটের মত কাণ্ডও ঘটে যাচ্ছে । যা শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ড ছাড়া আর কিছু না । ফেরি ঘাটে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের বিষয়টি জানানো হলে তার বলে, আরে ভাই বেশি টাকা তো নয়। মাত্র চার টাকা । এ নিয়ে ঝামেলা কেন করছেন । জন প্রতি চার টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে । এটা দেখানো হচ্ছে সীমিত টাকা হিসেবে। কিন্তু বাৎসরিক এই সীমিত টাকা রূপ নিচ্ছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকাতে । দিনে ৩০০০ জন যাত্রী পারাপার হলে (৩০০০×৪×৩০×১২)= ৪৩২০০০০ টাকা আদায় হয় বাৎসরিক ভাবে। এই প্রায় অর্ধ কোটি টাকা সাধারণ জনগণের পকেট থেকে আদায় করছে ফেরি ঘাটে ব্লাকারেরা । যা বন্ধ করার কোন পদক্ষেপ নেই স্থানীয় প্রশাসন বিভাগের ।
যারা ভাড়া আদায় করছে তাদের কোন ভাড়া আদায়ের কাউন্টার নেই। আরিচা এবং কাজিরহাট ফেরি পাড়া পাড়ের জন্য যে টিকিট কাটা হয় তা কোন টিকিট কাউন্টার থেকে নয় । টিকিট কাটতে হয় ব্লাকারদের হাত থেকে । ব্লাকারেরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিত্য যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পাবনা এবং মানিকগঞ্জ ভোক্তা অধিকার অফিসে ই-মেইল করে জানানো হলেও তার কোন সুরাহা হয়নি । এমনকি পাবনা জেলা প্রশাসকের বরাবর ই-মেইল করে জানা হয়ে ছিল। তাতেও কোন সমাধান হয়নি । বেড়া , সুজানগর, শিবালয়ের ইউএনও সাহেবদের অফিস বরাবর ই-মেইল করে বিষয়টি জানানো হয় । কিন্তু সমস্যার সমাধান আসে নাই । হতে পারে বিষয়টি তাদের কার্যক্ষমতা বাইরে । তাহলে বিষয়টি সমাধান করবে কে?
আরিচা এবং কাজিরহাট ঘাটে লঞ্চ ও স্পিড বোর্ডের টিকিট কাউন্টারের মত করে ফেরি ঘাটেরও টিকিট কাউন্টার করা অত্যন্ত জরুরী লঞ্চ ও স্পিড বোর্ডে টিকিট কাউন্টারের মত যদি ফেরি ঘাটে টিকিট কাউন্টার থাকে তাহলে যাত্রীদের এই হেনস্তায় পড়তে হবে না । টিকিট ব্লাকারদের হাত থেকে সাধারণ যাত্রীদের বাঁচাতে খুব তাড়াতাড়ি ফেরি ঘাটে ফেরি পারাপারের টিকিট কাউন্টার চাই। টিকিট কাউন্টার থাকলে সাধারণ যাত্রীদের আর অতিরিক্ত গুণতে হবে না চার টাকা ।