মোঃ হাছান আলী, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকে : চুনারুঘাট উপজেলা সদরে উত্তর বাজারে পরিত্যক্ত খোয়াই নদীতে অবস্থিত বধ্যভূমিটি অযত্নে অবহেলায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছরেও সেখানে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বর্বর সেনা সদস্যরা রাজাকারদের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী গ্রামের সাধারণ নিরীহ লোকদের ধরে এনে উত্তর বাজারে খোয়াই নদীর তীরে কুপিয়ে হত্যা করে খরস্রোতা খোয়াই নদীতে ফেলে দিত। পার্শ্ববর্তী বড়াইল গ্রামের একই পরিবারের ৬ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা হলেন- (১) উপেন্দ্র সরকার, পিতা- মৃত যোগেশ চন্দ্র সরকার, (২) রমেশ চন্দ্র সরকার, পিতা- মৃত সুরধন চন্দ্র সরকার, (৩) কামিনী সরকার, পিতা- মৃত প্রাণ কৃষ্ণ সরকার, (৪) মহেশ চন্দ্র সরকার, পিতা- মৃত সুরধন রায়, (৫) যোগেশ চন্দ্র সরকার, পিতা- মৃত প্রাণ কৃষ্ণ সরকার, (৬) নৃপেন্দ্র চন্দ্র সরকার, পিতা- মৃত যোগেশ চন্দ্র সরকার। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ফুলপুর গ্রাম সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রামের নাম না জানা আরো অনেকে। প্রায় অর্ধশত সাধারণ মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে খরস্রোতা খোয়াই নদীতে ফেলে দেয়। খোয়াই নদীটি স্বাধীনতার পর বাক কেটে উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২ কিঃ মিঃ পূর্ব দিকে নিয়ে যাওয়া যায়। বর্তমানে খোয়াই নদীটি পরিত্যক্ত খোয়াই নদী হিসেবে বিদ্যমান আছে। সময়ের আবর্তে মরা খোয়াই নদী ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ দীর্ঘ ৫০ বছরেও শহীদদের স্মরণে সেই বধ্যভূমিতে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল গাফফার বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। তবে উক্ত বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি।