তানোরে কৃষকদের জিম্মি করে টাকা আদায়, ডিসি অফিসে অভিযোগ

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
কাবুলিওয়ালা প্রথা ও জমিদারি শাসন ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়েছে বহুকাল আগেই জমিদারি শাসন ব্যবস্থায় কৃষক শোষণের কথা শোনা গেলেও, সেরকম চিত্রই যেনো শত বছর পর মিলল তানোরের মাঠে মাঠে। সেচের কাজে নিয়োজিত বিএমডিএ’র গভীর নলকূপের একশ্রেণীর অপারেটর জমিদারের উমেদারের ভূমিকায় যেনো অবতীর্ণ হয়েছেন। তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। কিন্ত্ত বিএমডিএ’র কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। অথচ তাদের অপতৎপরতার কারণে সরকারের উন্নয়ন চিত্র চাপা পড়ে যাচ্ছে। সরকারি দল ও স্থানীয় সাংসদের বিপক্ষে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে বলে শোনা যাচ্ছে।
সম্প্রতি গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের (ইউপি) নিমঘুটু গ্রামে বোরোখেতে সেচের পানি না পেয়ে কৃষক অভিনাথ ও রবি বোরো খেতেই বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। এর পরেও ঘুম ভাঙ্গেনি বরেন্দ্রর। এখানো ডিপ অপারেটদের জুলুম-শোষণ-নির্যাতন চলছে। আর কতো অভিনাথ-রবির মৃত্যু হলে বরেন্দ্র জাগ্রত হবে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) জেল নম্বর ১৬৫৫ ও ১৮১ নম্বর দাগে অবস্থিত বিএমডিএর গভীর নলকুপের বৈধ অপারেটর রেজাউল ইসলাম বাবু। কিন্ত্ত অপারেটর বাবুর কোনো ক্ষমতা নাই, তাকে একঘরে করে কথিত সমিতির নামে গভীর নলকুপ পরিচালনা করছে রাজনৈতিক পরিচয়ের আব্দুল মজিদ। স্কীমের কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, কৃষকের কোনো মতামত না নিয়ে আব্দুল মজিদ ভুয়া কমিটি করে জোরপুর্বক
কৃষকদের রীতিমতো শোষণ করে চলেছেন।
এঘটনায় স্কীমের কৃষকেরা বাদি হয়ে আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা প্রশাসক(ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে,ধানোরা সরদার পাড়া গ্রামের মৃত তাহার আলীর পুত্র মজিদুল ও আজিজুল গভীর নলকুপ অপারেটর রেজাউল ইসলাম বাবুকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে গভীর নলকুপ জবরদখল করেছে। এমনকি তারা ভুয়া সমিতি করে কৃষকদের কাছে জমি নিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তারা কৃষকের অগোচরে তাদের জমি মৌসুমী আলু চাষিদের কাছে সেচসহ সাড়ে ১৬ হাজার টাকা বিঘা ইজারা দিয়ে কৃষকদের সর্বোচ্চ ১১ হাজার টাকা দিচ্ছেন। এভাবে প্রতি বিঘা জমিতে তারা কৃষকের সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে আত্মসাৎ করছে। জমি কৃষকের রাজত্ব মজিদ-আজিজুলের।এরা যেনো নতুন ইংরেজ শাসন কায়েম করেছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে এই সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের হাতে লঞ্চিত হতে হচ্ছে। কৃষকের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হলেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
এদিকে স্কীমের কৃষকদের মতামতের ভিত্তিতে সমিতি গঠনের দাবিতে কৃষকেরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অপারেটর রেজাউল ইসলাম বাবু বলেন, তিনি ডিপের নিয়োগপ্রাপ্ত বৈধ অপারেটর, কিন্ত্ত তার কোনো দায়িত্ব নাই।আব্দুল মজিদ কৃষকের কোনো মতামত ছাড়াই ভুয়া কমিটি করে ডিপ চালাচ্ছে, অথচ মজিদ ডিপের কেউ না। এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন মাত্র। তিনি বলেন, বিএমডিএ নতুন করে কমিটি গঠন করলে তার কোনো আপত্তি নাই। #
Exit mobile version