তানোরে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে খাস পুকুর ভরাট  ?

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের বাঁধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) হাঁপানিয়া গ্রামে নীতিমালা লঙ্ঘন ও উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধভাবে প্রায় ১০ বিঘা আয়তনের সরকারি খাস পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও পুকুর ভরাট করতে গিয়ে রাস্তার ধারের কয়েকটি তাজা পরিপক্ক আমগাছ কাটা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, একদিকে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে কৃষি জমি নষ্ট অন্যদিকে জলাশয় ভরাট করে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। আর এসব বেআইনি কাজ করা হচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে ? অথচ প্রায় সপ্তাহব্যাপী অবৈধভাবে এই পুকুর ভরাট করা হলেও বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নাই। একই সঙ্গে তারা চারটি অপরাধ করছে, প্রথমত প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত ভেকুঁ মেশিন দিয়ে মাটি কাটা, দ্বিতীয়ত এসব মাটিতে সদ্য নির্মিত পাকা রাস্তা নস্ট, তৃতীয়ত জলাশয় ভরাট ও চতুর্থ তাজা পরিপক্ক গাছ নিধন।
এদিকে ভেকু মেশিন (মাটিকাটা যন্ত্র) ও অবৈধ ট্রাক্টরের বিকট শব্দে জনজীবন অতিষ্ঠ। অন্যদিকে ট্রাক্টরে মাটি বহনের সময় কাঁদা মাটি রাস্তায় পড়ে রাস্তা নষ্ট ও ধুলাবালিতে পরিবেশ দুষণে বাসা বাড়িতে থাকায় কঠিন হয়ে পড়েছে।  তাদের এমন অবৈধ মাটি বানিজ্যে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী জমির শ্রেণী পরিবর্তন বন্ধ রয়েছে। কোথাও কোনো পুরাতন পুকুর খনন করতে চাইলে তা যথাযথ নিয়ম মেনে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে তারপর অনুমোদন নিতে হয়। সেখানেও বলা থাকে পুকুর খননের মাটি যেনো কোনো পাকা বা কাঁচা রাস্তায় না উঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,গত ৭ জানুয়ারী মঙ্গরবার দুপুরে গ্রামবাসির সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর গ্রামবাসি বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ওদিকে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে,
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের গুসনা বিলবর গ্রামের বেলাল উদ্দিনের পুত্র বদর আলী, নামো শঙ্করবাটি গ্রামের নাসির ও
তানোরের খাড়িকুল্লা মৃত ইসমাইল আলীর পুত্র সেলিম উদ্দিন সিন্ডিকেট করে খাস পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে জমি বিক্রির সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, মৌজা হাপানিয়া জেএল নম্বর
৪১, দাগ নম্বর ১৬, ম্রেণী ভিটা-বাড়ী পরিমাণ ১ একর, উপজেলা তানোর, জেলা রাজশাহী।
নিম্ন তফশীল বর্ণিত খাস সম্পত্তিতে আমরা প্রায় ৬৫০ বছর ধরে দখলে নিয়ে বাড়ি-ঘর করে শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করছি। কিন্ত্ত বিবাদীগণ আমাদের বসবাসরত খাস জায়গাটি জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এদিকে ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর আমাদের লাগানো গাছগাছালি কাটার হুমকি দেয় এবং বাঁশ ঝাড়ের বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। আমরা তাদের বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে ফেলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়াও গ্রামে  একটি পুকুর আছে যার ৫৬ শতক খাস ও ৫৫ শতক ব্যক্তিমালিকানাধীন।কিন্ত্ত বিবাদীগণ উক্ত পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রির জন্য সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম বলেন,এ বিষয়ে তিনি অবগত নন।তিনি বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
Exit mobile version