ধর্মপাশা প্রতিনিধিঃ
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া জলমহাল ডাকাতির ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে রবিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে গ্রেফতার হওয়া ১১আসামির একদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার সকাল ১১টার দিকে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই ১১জন আসামিকে নিয়ে যায় ধর্মপাশা থানা পুলিশ। পরে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে থানার এসআই আমিনুর রহমান এই ১১জন আসাামিকে পাঁচদিনের জন্য রিমান্ডে দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত একদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
একদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন, ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের বাবুপর গ্রামের বাসিন্দা ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল বারী চৌধুরী ওরফে বাচ্ছু মিয়ার ছেলে মো,মোশারফ মিয়া (৪০), রংপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে আল মোজাহিদ (১৯), একই গ্রামের মো.মিছিল মিয়ার ছেলে মো.মুসলিম মিয়া (২১), রাজাপুর গাজীনগর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে রোকন মিয়া (৩৫), রাজাপুর দক্ষিণ হাটি গ্রামের আয়েদ মিয়ার ছেলে মো. আদিল (২৬), একই গ্রামের আয়েদ আলীর ছেলে মো,কফিল উদ্দিন (১৯), সুজাত মিয়ার ছেলে মো. শাহাব উদ্দিন (৩০),উছমান গণির ছেলে মাহতাব (২৮), লাছাক্কু মিয়ার ছেলে মো.জিটু (৩৭), নূরুল হক মিয়ার ছেলে আলী আজগর (২৩) ও জামালগঞ্জ উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মো.একরাম হোসেনের ছেলে মো.মোকাজ্জল (৩২)। মামলার এজাহার ও ধর্মপাশা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধানকুনিয়া জলমহালের পাড়ে থাকা জেলেদের খলাঘরে চলতি বছরের ২৪মার্চ দিবাগত রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা পাহারাদার,জেলে ও তাঁদের পরিবারের লোকজনকে মারধর করে সেখানে থাকা ১২টি গরু,পাঁচ বস্তা শুটকি, সাতটি মোবাইল ফোন, একটি সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি ও নগদ এক লাখ ২৪হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক গ্রামের বাসিন্দা জেলে সর্দার বাদল দাস (৪০) বাদী হয়ে গত ২৬মার্চ রাতে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০জনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় ডাকাতির মামলা করেন। বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিকে এই মামলায় ইতিপূর্বে ছয়জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজন আসামি আদালতের ১৬৪ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। কারা কারা এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত পুরো ঘটনাটি তাঁরা আদালতকে অবগত করেন। ১৬৪ধারা জবানবন্দীতে বেরিয়ে আসা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত এই ১১জন আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে থাকা ওই ১১জন আসামি রবিবার বেলা সোয়া একটার দিকে পাশের নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার মোহনগঞ্জ বাজারে এসে জড়ো হন। তাঁরা সেখান থেকে অটোরিকশা যোগে নিজ নিজ এলাকায় যাওয়ার জন্য ধর্মপাশার বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। খবর পেয়ে উপজেলা সদরের কংস সেতুর উত্তরপাশের সড়ক থেকে রবিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে ওই ১১জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে ওই ১১জন আসামিকে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের বিচারকের কাছে এই ১১জন আসামির ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালতের বিচারক একদিনের বিমান্ড আবেদন মথ্জুর করেন। ধর্মপাশা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, গ্রেফতার হওয়া এই ১১জন আসামি থানা পুলিশের কাছে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে গিয়ে তাঁরা ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেননি। আমি ওই ১১জন আসামির ৫দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত একদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এই মামলায় ইতিপূর্বে আরও ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ ছাড়া মামলার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ১২টি গরু,দেড় কেজি শুটকি মাছ ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Post Views: 267
Like this:
Like Loading...
Related