সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সরণ সভায় নাজিব তারেকের কথা ও অংকিত প্রতিকৃতি অবলম্বনে মিথুন আহমেদ রচিত কথকভাষ্যে পরিকল্পিত ও নির্দেশনায় ‘নয়ন জলে ভাসি’ (শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মকথন) পরিবেশিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন- শুক্লা রায়, তাহরিনা পারভীন প্রীতি, বিলকিস রহমান দোলা, আবীর আলমগীর, পারভীন সুলতানা, জারিন মাইশা ও মিথুন আহমেদ। ‘নয়ন জলে ভাসি’ এর সমন্বয়কারী ছিলেন আশরাফুল হাবিব মিহির।
নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে সোমবার সন্ধ্যা ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল চারুশিল্পীদের তাৎক্ষণিক উপস্থিতিতে আঁকা ট্রাফিক পেইন্টিং (মুক্ত চিত্রাঙ্কন)। এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চারুশিল্পী তাজুল ইমাম। এতে অংশ নেন চিত্রশিল্পী ও কার্টুনিস্ট টিপু আলম, আজিজুল ইসলাম তারিফ, সৈয়দ খুরশীদ আলম সেলিম, কচি, এম. এম আজিজ নাইমী। এই পর্বটির সমন্বয়কারী ছিলেন গোপাল স্যানাল।
পারভীন সুলতানার সঞ্চালনায় আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন স্বাধীন মজুমদার, মেহের কবীর, নজরুল কবীর, খাইরুল ইসলাম পাখি। আবীর আলমগীরের সঞ্চালনায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান। আরও সংগীত পরিবেশন করেন সেলিমা আশরাফ ও চন্দন চৌধুরী।
স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন শামস্ আল মোমিন ও ফারহানা ইলিয়াস তুলি। এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন স্বীকৃতি বড়ুয়া। মিনহাজ আহমেদের সঞ্চালনায় যুদ্ধদিনের কথা: একাত্তরের স্মৃতিচারণ করেন ড. মাসুদুর রহমান, সরাফ সরকার, তাজুল ইমাম, ফাহিম রেজা নুর ও জাহিদ রেজা নুর।
প্রদীপ প্রজ্বলন করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার আহ্বায়ক মিথুন আহমেদ।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাত্র দুইদিন পূর্বে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামাত-রাজাকার-আলবদর-আলশামস্ বাহিনীর নরপশুরা একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর এক নৃশংস বর্বর হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। তারা হত্যা করে বাংলাদেশের মেধাবী লেখক, কবি, সংগীতজ্ঞ, চলচ্চিত্রকার, ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, দার্শনিক ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের। বাঙালি জাতির শোকাবহ এই বিপর্যয়ের দিনটিকে স্মরণ করার জন্যে বিগত ২৩ বছর ধরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকা ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে আসছে।