পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৪১৩ রানের অসম্ভব এক লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় দিন ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে স্বাগতিকরা দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে। তাতে প্রোটিয়ারা পেয়েছে ৪১২ রানের লিড।
পরিসংখ্যান বলছে এই লক্ষ্য তাড়া করতে হলে সেন্ট জর্জেস পার্কের ইতিহাস বদলাতে হবে সফরকারীদের। কারণ, এই মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৭০ রান তাড়া করে জেতার নজির আছে। ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেটি করেছিল অস্ট্রেলিয়া। অজিরা জিতেছিল ২ উইকেটের ব্যবধানে। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা তো পাহাড়সম। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে দুর্গমগিরি।
ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়তো তৃতীয় বলেই মহারাজের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। তাও রানের খাতা না খুলে। তৃতীয় ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকেও এলবিডাব্লিউ করেছেন এই বামহাতি। দিনের শেষ বলে তামিমকেও ১৩ রানে তালুবন্দি করেন হারমার। তাতে চতুর্থদিনের প্রতিরোধটা কতক্ষণ টেকে সেটাই এখন দেখার বিষয়। ক্রিজে আছেন মুমিনুল হক (৫)। ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় দিন শেষ করেছে ২৭ রানে।এর আগে তৃতীয় দিনের শুরুটা দারুণ করলেও ইয়াসির-মুশফিকের বিদায়ে লাঞ্চের পর বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশের প্রতিরোধ। ২৫ রানেই হারায় শেষ ৫ উইকেট! অথচ লাঞ্চের আগে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে স্কোর ছিল ১৯২ রানে ৫ উইকেট।
এদিন মুশফিকুর রহিম-ইয়াসির আলীই কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে পারলেন যা। তাও সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী। ৭০ রানের জুটি গড়ার পর লাঞ্চের আগে আগে ফিরে যান দুজনই। তার পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে লেজের বাকি অংশ। ইয়াসির ৪৬ রান করলেও মুশফিক করেন ৫১ রান। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট ২১৭ রানেই।
প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রান করা দক্ষিণ আফ্রিকা ২৩৬ রানে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও পুনরায় ব্যাটিং করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে। এক তাইজুলের ঘূর্ণি আবারও স্বাগতিকদের বিভ্রান্ত করেছে। বড় জুটি উপহার দিতে পারেনি। সারেল এরউই সর্বোচ্চ ৪১ রান করলেও তাতে ছিল ভাগ্যের ছোঁয়া।
এই ইনিংসেও ঘূর্ণিজাদু দেখানো তাইজুল ৬৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৪ রানে নেন দুটি। একটি নেন খালেদ আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(তৃতীয় দিন শেষে)
দক্ষিণ আফ্রিকা: প্রথম ইনিংসে ১৩৬.২ ওভারে ৪৫৩ (মহারাজ ৮৪, এলগার ৭০, বাভুমা ৬৭, পিটারসেন ৬৪, রিকেলটন ৪২, মুল্ডার ৩৩; তাইজুল ৬/১৩৫, খালেদ ৩/১০০, মিরাজ ১/৮৫)।
বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংসে ৭৪.২ ওভারে ২১৭ (তামিম ৪৭, শান্ত ৩৩, মুশফিক ৫১, লিটন ১১, ইয়াসির ৪৬; মুল্ডার ৩/২৫, হারমার ৩/৩৯, অলিভিয়ের ২/৩৯), মহারাজ ২/৫৭।
দক্ষিণ আফ্রিকা: দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৯.৫ ওভারে ১৭৬/৬ ডি. (এরউই ৪১, ভেরিয়েনে ৩৯*, বাভুমা ৩০, এলগার ২৬; তাইজুল ৩/৬৭, মিরাজ ২/৩৪, খালেদ ১/৩৮)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে: ৯.১ ওভারে ২৭/৩ (মহারাজ ২/১৭, হারমার ১/৮)