আলহামদুল্লিাহ্! মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে ফখরুদ্দীন (রহ.) এর মত উসতাদ হতে লেখাপড়া করার এবং তাঁর মোবারক জীবন হতে স্মৃতি চারণ করার সুযোগ ও তওফিক দান করেছেন। অসংখ্যা দুরুদ সালাম মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর যার হাদীস সমূহের সংকলিত সিহা সিত্তাহর পন্ডিত ছিলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় উসতাদ।
আসলে আমাদের হুজুর সর্ম্পকে লেখার কোন যোগ্যতা আমার নেই। অধিকন্ত তাঁর সর্ম্পকে লিখতে ভয় ও লাগে যদি নিজের অজান্তে ভুল হয়ে গেলে বেয়াদবি হল কিনা। আমি হলাম হুজুরের সবচেয়ে অধম ছাত্র। তবে হুজুরের মত জগত বিখ্যাত শাইখুল হাদীস হতে পড়তে এবং হুজুরের সংস্পর্শে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান এবং জীবনে সবচেয়ে দূর্লভ প্রাপ্তি হিসাবে মনে করি।
হুজুরের সার্বিক জীবন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না অন্তত আমি যে চার বছর হুজুরকে কাছ থেকে পেয়েছি তা বর্ণনা করলেও ছোট খাটো একটা বই হবে। হুজুরের সার্বিক জীবন মাওলানা রুমির ভাষায় এইভাবে মূল্যায়ন করা যায়ঃ
افتاب امد دليل افتاب +كردليلت با يد ازوي رومتاب
অর্থাৎ সূর্যের প্রমাণ সূর্যই। আপনার যদি প্রমাণের প্রয়োজন হয় চোখ না ফিরিয়ে সূর্যের দিকে থাকান, কতক্ষণ থাকাতে পারবেন? আমাদের হুজুর আদর্শ, চরিত্র , আখলাক ,লেখাপড়া সহ সার্বিক যোগ্যতা বিবেচনায় সূর্যের মত। সূর্যের যেমন গুণর্কীতন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না, ঠিক তেমনি আমাদের হুজুরের গুণর্কীতন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
হুজুর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদ হতে অবসর গ্রহণ করার পর পরই ২০০৬ সালে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসায় শাইখুল হাদিস হিসাবে আগমন করেন। আমিও ২০০৬ সালে ফাজিল পাস করে কামিলে ভর্তি হই। হুজুর ছিলেন কামিল স্পেসালিষ্ট । সেই সুবাদে ছাত্র হিসাবে হুজুর কোন মানের উসতাদ জানার সুযোগ হয়েছিল।হুজুর আমাদেরকে প্রতিদিন প্রথম দুই ঘন্টা করাতেন কামিল ১ম বর্ষে তিরমিজি ও নাসাঈ শরিফ পড়াতেন। তাফসীরের কাশশাফ পড়াতেন।২য় বর্ষে বুখারী শরিফ ১ম খন্ড ও মুসলিম শরিফ পড়াতেন ।উসুলে হাদীসের কিতাব নুখবাতুল ফিকির পড়াতেন। হুজুরের দক্ষতা ও যোগ্যতা দেখে হুজুরের ভক্ত হয়ে যাই। মনের মধ্যে হুজুরের কাছে গিয়ে কিছু জানার ও শিখার আগ্রহ সৃষ্টি হয় আস্তে আস্তে ভয়ে ভয়ে হুজুরের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। ফলে হুজুরের সান্নিধ্যে থাকার সৌভাগ্য অর্জন হয়। কাছে থেকে হুজুরকে জানার দেখার সুযোগ হয়। যখনই সময় ও সুযোগ পেতাম হুজুরের কাছে গিয়ে কিছু জানার ও শেখার চেষ্টা করতাম। কারন হুজুরের কাছে থাকলে কিছু না কিছু শেখা যেত। হুজুরের খুশগল্পের মধ্যেও অনেক শিক্ষা ছিল হুজুরের কথা, চাল-চলন,উঠা বসা সবকিছুতে উত্তম আদর্শ ছিল। শিক্ষা থেকে খালি না। সবসয়ম সত্য কথা বলতে দ্বিধা করতেন না। ফুনুনাতের পন্ডিত ছিলেন । ইসলামি জ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন। প্রখর স্মৃতি শক্তির অধিকারী ছিলেন। কিতাব পড়া নিত্যদিনের অভ্যাস ছিল। কবির ভাষায়ঃ
همي دنيا سي كيا مطلب مد رسة هي وطن ابنا +مرنٍكي هم كتا بون برورق هوكا كفن ابنا
অর্থাৎ দুনিয়ার সাথে আমার কোন সর্ম্পক নেই মাদ্রাসা হ”েছ আমার বিচরণ ক্ষেত্র।
আমি কিতাবের উপর মারা যাব, কিতাবে পাতা হবে আমার কাফন। হুজুর ছিলেন সেই রকম। লেখাপড়াই হুজুরের জীবনের উদ্দেশ্য। জ্ঞানের নেতা ছিলেন। কবির ভাষায়:-
ذكرك للمشتاق خير شراب+وكل شراب دونه كسراب
অর্থাৎ আল্লাহ্ প্রেমিকদের আল্লাহ্ জিকিরই সর্বোত্তম পানীয়। এবং আল্লাহ্ জিকির ছাড়া পৃথিবীতে যা পানীয় আছে সব মরুভূমির মরিচিকার মত অ¯ি’ত্বহীন।
লেখাপড়াই ছিল হুজুরের পানাহার। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন: اطلب العلم من المهد الى اللهد
অর্থাৎ তোমরা দোলনা থেকে কবর পযর্ন্ত জ্ঞান অর্জন কর। হুজুর সেই রকম ছিলেন।
হুজুরের বিছানার আশে পাশে কিতাব আর কিতারের ভরপুর থাকত। রাত ১২ টা/১টা পযর্ন্ত পড়তেন। আমার মনে হয় ছাত্ররা ও এই রকম লেখাপড়া করতনা। কোন সমস্যা সমাধান করতে না পারলে রাতে ঘুমাতেন না। কিতাব দেখে দেখে রাত পার করে দিত। হুজুরের রুমটি ছিল পরিপাটি। ওয়াশ রুম ছিল পরিস্কার পরিছন্ন। আমি একদিন হুজুরের পাশে দাড়ানো ছিলাম আমাদের একজন সহপাঠি এসে কামিল পরিক্ষার এসাইনমেন্ট জমা দিলে আমাকে ড্রয়ারে রাখতে বলেন। আমি রাখাতে একটু বাঁকা হলে হুজুর সাথে সাথে বিরক্তি প্রকাশ করে সেটি নিজ হাতে নিয়ে সোজা করে দিলেন। আমি চিন্তা করলাম ড্রয়ারের ভিতর সোজা বাঁকা দেখা যাবে না, কেন হুজুর সেটি সোজা করে রাখলেন। এটা হুজুরের রুচির পরিচয় বহন করে। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন। ব্যক্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কোন আপোষ করতেন না। হুজুরের বেতন অফিস সহকারীকে হুজুরের বেট রুমে গিয়ে খাতায় হুজুরের স্বাক্ষর গ্রহণ করে দিতে হত। খাবার রুমে পাঠিয়ে দিতে হতো।
হুজুর আসার সময় শর্ত দিয়ে ছিল কামিল ছাড়া ঘন্টা করাবে না। আমাদের কামিলের ১ম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলে ফলাফল পর্যন্ত কামিলের ক্লাস বন্ধ ছিল। এই সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাজিলের ক্লাস দিলে হুজুর কিছুতে ফাজিলে ক্লাস করাবেন না বলে জানিয়ে দেন। হুজুরের বেতন জেনারেল ফান্ড থেকে দেওয়ার শর্ত দিয়েছিলেন। যাকাত ফান্ড থেকে বেতন নিবেন না। একদিন আমাদের কামিল ক্লাসে এক সহপাঠিকে একটা প্রশ্ন করলে সে উত্তর দিতে পারেনি। হুজুর জিজ্ঞেস করলেন কোথায় থাক। সে বলল হোস্টেলে। চুনতি মাদ্রাসায় কামিলের ছাত্রদের জন্য হোস্টেল ছিল যাকাত ফান্ডের মাধ্যমে থাকা খাওয়া ফ্রি। হুজুর তখন বললেন, এই যাকাতই তোমার মেধা নষ্ট করে দিয়েছে। সাধ্য মত তোমরা যাকাত খাওয়া থেকে বিরত থাকিয়ো। স্বাধীনচেতা মনোভাবের ছিল। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন।
রসিকতা হুজুরের একটি বড় গুন ছিল। প্রিয় নবী (সাঃ) রসিকতা করতেন।রাসূল (সাঃ) বলেন, لااقول الا حقا
অর্থাৎ আমি তোমাদের সাথে সত্য কথা ছাড়া রসিকতা করি না। হুজুর ও আমাদের সাথে বাস্তব সম্মত রসিকতা করতেন । ক্লাসে খুব মজা দিতেন। যার কারণে ছাত্রারা হুজুরের ভক্ত ছিল। হুজুরের ক্লাসে ছাত্র ভারপুর থাকত। হুজুর চলে গেলে ছাত্র কমে যেত। পরে এক হুজুরের ঘন্টা ছিল তিনি একটু গল্প করতেন। হুজুর টানা ২ ঘন্টা করে শেষে হাজিরা ডাকতেন হুজুর হাজিরা ডাকতে একটু দেরি হলে এক ভাল ছাত্র বলে, হুজুর তাড়াতাড়ি করেন চলে যাব। হুজুর বললেন,কেন চলে যাবে,পরে ক্লাস করবে না? তখন ছেলেটি বলল, হুজুর ক্লাসে কিছু পেতে হবে তো। হুজুর রসিকতা করে বললেন, গল্প করা ও শিখতে হয়। গল্প করাও শিখ। সকলেই কি ঠিক মত গল্প করতে পারে? হুজুর ভাত খাওয়ার সময় তরকারি ভাল ছিলনা দেখে বললেন এই ভাত খেয়ে আলহামদুল্লিাহ্ বলা যাবে না কারণ আলহাদুল্লিাহ্ বললে প্রতিদিন এই রকমই হবে। হুজুরের রসিকতা লিখে শেষ করা যাবে না, ইত্যাদি।
প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন শায়খুল হাদীস আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) নিরহংকার সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন। ভিন্ন মতাদর্শ আলেম ওলামা ছাড়া সাধারণ মানুষদেরকে মন থেকে ভালবাসতেন। ছাত্রদেরকে সন্তানের মত স্নেহ করতেন এবং জানতেন। কথা কাজ যাচাই বাচাই করে করতেন। সবসময় বাস্তব সম্মাত নীতি অবম্বলন করতেন। আবেগী ছিলেন না। হুজুরের পাঠদান ছিল অন্যন্য। যে বিষয়ে পড়াতেন সেই সর্ম্পকে আগে সার কথা বলে দিতেন। তার পর কিতাবের মতন পড়ে বুঝিয়ে দিতেন। প্রয়োজন মত ব্যাখ্যা করতেন। সিলেবাসও চলতো। যে কোন বিষয়ের মূলভাব ও মূলনীতি গুলো বলে দিতেন যাতে ছাত্রদের বুঝতে সহজ হয় এবং পরর্বতীতে অন্য বিষয়ে সেই মূলনীতি অনুসরণ করে নিজেরা পড়তে যাতে কোন অসুবিধা না হয়। কোন কিছু বললে কবর পযর্ন্ত মনে রাখার জন্য বলতেন। কবরে যখন প্রশ্ন করা হবে এটা বলবে। যে কোন কঠিন কিতাব সহজ করে বুঝিয়ে দেয়া ক্ষেত্রে হুজুর অতুলনীয় ছিল। আদর্শ শিক্ষকের সবগুণাবলী হুজুরের মধ্যে ছিল। না পড়ে হুজুর পড়াতেন না। একদিন ক্লাসে এসে বললেন আজকে পড়তে পারিনি। তোমাদেরকে পড়াতে পারব না। টানা ২ঘন্টা হুজুর বসা ছিলেন। একটা শব্দও পড়াননি। এত বড় একজন শাইখুল হাদিস, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস যার কাছে হাদীস নখদর্পনে এমন একজন ব্যক্তিত্ব কিতাব না দেখে পাঠদান করাতেন না। সিহা সিত্তার ইমামদের হতে রাসুল (স:) পর্যন্ত যত বর্ণনা কারী বর্ণনাকারীদের পিতার নাম মাতার নাম উপাদি উপনাম বর্ণিত হাদিস সংখ্যা বর্ণনাকারীর স্তর ও মান ইত্যাদি আসমাউর রিজাল নখর্দপনে ছিল। রিজাল বা রাবী বর্ণনাকারীদের জীবনীতে পন্ডিত ছিলেন। ছাত্রদেরকে লাইব্রেরী ওয়ার্ক করতে উৎসাহিত করতেন। হুজুর আমাদেরকে জীবনের কর্ম পদ্ধতি কি রকম করব কিভাবে সাজাবো তাও শিক্ষা দিতেন। আমাদেরকে বলতেন বাবারা তোমরা মসজিদের ইমাম হবে না, বিহারীরা কাউকে গালি দিলে বলে “আল্লাহ আবকো মসজিদ মে ইমাম বনা দেয়” অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে মসজিদের ইমাম বানাক। তোমরা কর্মজীবনে শিক্ষক হবে। শিক্ষক হলেও প্রভাষক হবে, প্রভাষক হলে তোমার পদোন্নতি হবে। জ্ঞান বৃদ্ধি হবে। হুজুর উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিতেন বাঘ ক্ষিধে পেলে গোশত খায়, ঘাস খায় না। তোমরা শিক্ষক হলে প্রভাষক হবে, নিচের শিক্ষক হবে না। হুজুর মৌলিক সুন্নি আকিদার একজন শক্ত আলেমেদ্বীন ছিলেন। হানাফী মাজহাবের অনুসারী ছিলেন। বোখারী শরীফের ব্যাখ্যা ও মদাতুল কারী ও ফতহুল বারী থেকে বেশী করতেন। কোন দিন দেখে হাদীস ব্যাখ্যা করতেন না। সব মুখস্থ। আমাদেরকে হাদীস পড়ার আগে ডাইরীতে স্বহস্তে লেখা নোট ফটোকপি করে দিতেন। হুজুরের লেখা ছিল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর কম্পিউটার টাইপ করার মত। ছাত্রদেরকে বন্ধুর মত ব্যবহারের মাধ্যমে কাছে টেনে নিতেন। হুজুর ছিলেন সবসময় সচেতন, যেমন কামিল ২য় বর্ষের ফলাফল বের হওয়ার পর আমি মিষ্টি নিয়ে হুজুরের সাথে দেখা করতে গেলে হুজুর বৃহস্পতিবার বাড়িতে মিষ্টি নেয়ার জন্য মিষ্টির প্যাকেটটি একটি গাবলায় পানি নিয়ে ঠিক মধ্যে ইট বসিয়ে ইটের উপর মিষ্টির প্যাকেটটি রেখেছিল। যাতে পিপড়া না আসে। একেবারে নিচের মেধাবীও হুজুরের পাঠ সহজে বুঝতে পারতেন। হুজুরের মধ্যে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কত যোগ্যতা দিয়েছেন তা হুজুরের পাঠদানে না বসলে না শুনলে বুঝা যেতো না। হুজুর আখলাকে হাসনা বা উত্তম চরিত্রের নমুনা ছিলেন। আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা চুনতি মাদ্রাসার গভনিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার পিছনে হুজুরের অবদান ছিল। আমার আব্বার সাথে গভীর সুসম্পর্ক ছিল। আমার আব্বাকে পরামর্শ দিয়ে অনার্স কোর্স চালু করেছিলেন। আমার আব্বাকে বলেছিলেন, বর্তমান সরকার মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স দিয়েছে। মাদ্রাসা যদি এরকম চলতে থাকে আলিম হয়ে যাবে। আপনি ছাড়া কেউ অনার্স কোর্স খোলতে পারবে না। আপনি উদ্যোগ নিলেই অনার্স কোর্স চালু করা সম্ভব একইসাথে মাদরাসা কামিল পর্যন্ত রক্ষা হবে। আলহামদুলিল্লাহ হুজুরের পরামর্শে আব্বার উদ্যোগে বর্তমানে মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। আমাদের কেন্দ্র পটিয়া শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসায় হওয়ায় বাড়ি হতে পটিয়া যেতে কষ্ট হতো। হুজুর আব্বাকে চুনতী মাদ্রাসায় কামিল কেন্দ্র করার পরামর্শ দেন। আল্লাহর রহমতে হুজুরের পরামর্শে আব্বার উদ্যোগে কামিল কেন্দ্র হয়েছে। সরকার কর্তৃক ফাযিলকে ডিগ্রী ও কামিলকে মাষ্টার্সের মান দেয়ায় পর কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কামিল হাদীসের অনেক রেফারেন্সর কিতাব দিলে আমার আব্বাকে হুজুর বলেন, আপনার আব্বা হযরত শাহ সাহেব কেবলা (রহঃ) চুনতীর গড়া কামিল থাকবে না। এই রেফারেন্স বই গুলো যদি আপনি ব্যবস্থা না করেন। আপনি ছাড়া কেউ পারবে না। আল্লাহর রহমতে হুজুরের পরামর্শে আব্বার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকার কিতাব সংগ্রহ করে চুনতী মাদ্রাসার লাইব্রেরী সমৃদ্ধ করা হয়। হুজুর আব্বাকে কিতাবের তালিকা দিয়ে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য বলতেন। একবার এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকার কিতাব সংগ্রহ করতে বাধাগ্রস্থ হলে হুজুর আব্বাকে বলেন, এক বারে না পারলে দেখ শতবার।
সুলতান মাহমদ গজনভী সোমনাথ জয় করে ছিল ১৭বার আক্রমন করে। আর আপনি একবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হতাশ হলে কী হবে? আরে ১৬ ও ৯৯ বার চেষ্টার সুযোগ আছে। আল্লাহর রহমতে হুজুরের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় সেই কিতাব সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। হুজুর আমাকে প্রায় সময় বলতেন, আমি তালিকা দিবো তুমি তোমার আব্বাকে উৎসাহিত করবে। এই কিতাব সংগ্রহে আমাকে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মুখামুখি হতে হয়েছিল। আমাদের উচিৎ হুজুরের বর্নাট্য জীবন হতে শিক্ষা নিয়ে জীবন গঠন করা। কারণ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মসউদ (রাঃ) বলেন কেউ যদি কারো আদর্শ অনুসরণ করতে চায় সে যেন মরহুমের জীবনের অনুসরণ করে কারণ জীবিত মানুষ ফিতনা, ভ্রষ্টতা হতে নিরাপদ নয়। তাই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক বুঝ ও আলম করার তওফিক দান করুক, আমীন।
লেখক : কলামিস্ট।
এম.ফিল গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
Post Views: 263
Like this:
Like Loading...
Related