ফৌজদারির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিদেশ গমন আটকানো যাবে: আপিল বিভাগ

ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ গমন আটকানো যাবে বলে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) ‘দুদক বনাম জি.বি হোসেন ও অন্যান্য’ মামলায় পর্যবেক্ষণসহ পূর্ণাঙ্গ রায় দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ সইয়ের পর রায়টি প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশ গমন ঠেকানো যাবে না। তবে একজনের দেশত্যাগের অধিকারকে কখনোই একচ্ছত্র অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই অধিকার স্থগিত করার সুযোগ রয়েছে।

আদালত আরও বলেছে, সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে ব্যক্তির চলাফেরায় বাধা দেওয়াকে অনুমতি দেয়, তবে তা অবশ্যই আইন অনুযায়ী এবং জনস্বার্থে হতে হবে। তবে আইনের সমর্থনে আরোপিত বিধি নিষেধ ছাড়া কোনও নির্বাহী আদেশে কারও চলাফেরার স্বাধীনতা খর্ব করা অসাংবিধানিক।

রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে যে স্বাধীনতা দেওয়া আছে, তার মূল উদ্দেশ্য সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ গমন আটকানো যাবে। তারপরও যদি কেউ আইনকে পাশ কাটিয়ে বিদেশ গমনের চেষ্টা করে, তাহলে আটকানোর পর তিন কার্যদিবসের মধ্যে তা আদালতকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশ গমন রোধ করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুদকসহ সরকারি কোনও সংস্থা ফৌজদারি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না। তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে ব্যক্তির বিদেশ গমনে বাধা দেওয়া যাবে মর্মে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। সেই আপিল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Exit mobile version