মনির হোসেন,বরিশাল ব্যুরো॥ বরিশালের বাজারে কয়েকমাস ধরে
ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম। খুচরা বাজারে
চলতি সপ্তাহে আরেক দফা বাড়লো খোলা সয়াবিন, মসুরডাল এবং সরু,
মোটা ও মাঝারিসহ প্রায় সব ধরনের চালের দাম।এদিকে পাইকারি ও
খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি। বেশ কিছুদিন
ধরে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো চাহিদামতো সরবরাহ না করায়
সয়াবিন তেলের এ সংকট কাটছে না বলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা
দাবি করছেন।
শনিবার (০৮ মার্চ) বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম আগের
মতোই চড়া। মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকা, টমেটো ৩৫
টাকা, ধনেপাতা ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা,
বরবটি ৮০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, করলা ১০০ টাকা,
মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা দরে
বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ফুল কপি ৪০-
৫০ টাকা এবং বিভিন্ন ধরনের শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকা
বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় আলু, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, আটা-ময়দা ও চিনির
দামে কোনো হেরফের নেই। খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু ১৫
টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকা, দেশি আদা
৭০ টাকা, চায়না আদা ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, চায়না রসুন
১২০ টাকা, খোলা চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি
৮৫ টাকা ও প্যাকেট আটা ৪৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৫৫ টাকা
প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।ছোট দানার মসুর ডালের দাম না বাড়লেও বড়
দানার মসুর ডাল কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়েছে। ছোট দানার মসুর
ডাল ১২০ ও বড় দানার মসুর ডাল কেজি প্রতি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে ৫
টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন ১৯০ টাকা এবং
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৮ থেকে ১৭০
টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে সরু, মোটা ও মাঝারিসহ প্রায় সব
ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। সরু
মিনিকেট চাল মানভেদে ৬২-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিআর-২৮
চাল ৫২-৫৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০-৭৮ এবং বিক্রি হতে দেখা
গেছে।
এদিকে বাজারে ফার্মের মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সোনালি
মুরগির কেজি ২৭০, ব্রয়লার মুরগি ১৬০ এবং লেয়ার ২৬৫ টাকা দরে
বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩৮ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে।বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ ও খাসির মাংস বিক্রি
হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।বাজারে আগের মতোই মাছের দাম চড়া।
আকারভেদে চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা, রুই ৩০০-
৩৫০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা,
তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, সাগরের ঢেলা ৩৪০-৩৬০ টাকা, আকারভেদে
আইড় ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, দেশি শিং ৯৫০-১০০০ টাকা,
দেশি চিংড়ি (ছোট) ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।নগরীর
চৌমাথা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মো: আলী হোসেন জানান,
বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন লেগেছে। চাল, তেল, ডালসহ নিত্যপণ্যের
মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে
পড়েছেন। সংসারের খরচ চালানোর কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না।
নগরীর বাংলা বাজারের এক মুদি ব্যাবসায়ী বলেন, পাইকারি পর্যায়েই
চাল ও ছোট দানার মসুর ডালের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে খুচরা
পর্যায়ে এসব পণ্যের দামও বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও
ঊধর্বমুখী। এছাড়া খুচরা বাজারে এখনো সয়াবিন তেলের সংকট
রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো
চাহিদামতো সরবরাহ করছে না। অনেক অনুরোধের পর দুই-এক কার্টন
তেল পাওয়া যাচ্ছে। তার সঙ্গে অন্য পণ্যও বিক্রি করতে দিচ্ছেন কোম্পানির
বিক্রয় প্রতিনিধিরা। সে সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। দোকানে পড়ে
আছে।